নিউজ ডেস্ক:
রাজধানীর কলাবাগানের বাসাা থেকে গ্রিন লাইফ হাসপাতালের চিকিৎসক সাবিরা রহমান লিপির (৪৭) রক্তাক্ত ও দগ্ধ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ইতোমধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন জেগেছে, এটি ঠান্ডা মাথার খুন নাকি অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু? তবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বলছে, অগ্নিকাণ্ড নয়, এটি হত্যাকাণ্ড। যা রোববার (৩০ মে) মধ্যরাতের যেকোনো সময় সংঘটিত হয়েছে।
লিপির বাড়ি কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলায়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিট। তারা মরদেহ থেকে আলামত সংগ্রহ করেছেন। ক্রাইম সিন জানায়, সাবিরাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা (ব্রুটালি কিলড) করা হয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের পর বিছানার তোশকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে দাহ্য পদার্থ না থাকায় আগুন তেমন ছড়াতে পারেনি। তবে, সাবিরার শরীরের কিছু অংশ দগ্ধ হয়।
সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের ইন্সপেক্টর শেখ রাসেল কবির বলেন, ‘ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাবিরার শ্বাসনালী কেটে ফেলা হয়েছে। তার দেহে রক্ত ও পোড়ার ক্ষত আছে। তবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, এটিহ ত্যাকাণ্ড। আলামত দেখে মনে হয়েছে, মধ্যরাতের যেকোনো সময় হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে।’
এর আগে, সোমবার (৩১ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বাসায় এসে আগুনের ধোঁয়া দেখতে পান। নিহত চিকিৎসকের শরীরের কিছু অংশ দগ্ধ ছিল বলেও জানান তারা। মরদেহ উদ্ধারের পর পিঠে দুটি ও গলায় একটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পায় পুলিশ।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদরদফতরের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার লিমা খানম বলেন, ‘আমরা সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে ওই বাসায় একটি আগুনের সংবাদ পাই। সেখানে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ধোঁয়া দেখতে পান। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা সেখান থেকে একটি দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেন।’
ফায়ার সার্ভিস জানায়, মরদেহটির গলা ও পায়ের সামনের অংশ দগ্ধ ছিল। পেটসহ অন্যান্য অংশ দগ্ধ ছিল না। ঘরের তোশক পুড়ে গিয়েছিল। এসব দেখে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা পুলিশে খবর দিতে বলেন। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
সার্বিক বিষয়ে ডিবি পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক বলেন, ‘ডা. সাবিরা কলাবাগানের ৫০/১ ফার্স্টলেনের বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। তিনি ফ্ল্যাটের দুটি রুম এ কতরুণীকে সাবলেট হিসেবে ভাড়া দেন। সকালে সাবলেটে থাকা তরুণী হাঁটতে বের হয়েছিলেন। হেঁটে আসার পর তিনি বাসায় ফিরে দেখেন চিকিৎসক সাবিরার রুম বন্ধ। রুমের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। পরে তিনি দারোয়ানকে ডেকে চাবি এনে রুমের তালা খুলে দেখতে পান চিকিৎসক সাবিরা ফ্লোরে পড়ে আছেন। সবাই ভেবেছিলেন, চিকিৎসক আগুনে পুড়ে মারা গেছেন। পরে ডিবি পুলিশ এসে তার গলায় একটি ও পিঠে দুটি আঘাতের চিহ্ন পায়।’
‘আমরা তদন্ত করছি। আশা করছি, দ্রুত রহস্য উদঘাটন করতে পারব’— বলেন ডিসি আজিমুল হক।
এ চিকিৎসক নিহতের ঘটনায় এ পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন জনকে হেফাজতে নিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তারা হলেন- সাবলেট থাকা এক শিক্ষার্থী, তার এক বন্ধু ও বাড়ির দারোয়ান রমজান।
Leave a Reply