নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুমিল্লায় সিটি কাউন্সিলর মো: সোহেল ও হরিপদ সাহা হত্যাকান্ডের ঘটনায় পাশের এলাকার একাধিক মামলার আসামী শাহ আলম নামে এক যুবক সরাসারি অংশগ্রহন করেছে বলে দাবি করেছে পরিবার ও গুলিবিদ্ধ আহত বাদল । অভিযুক্ত শাহ আলম কুমিল্লা সিটি ১৬ নং ওয়ার্ডের মৃত জানু মিয়ার ছেলে । বিগত সময় তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ছিনতাই সহ খুনেরও অভিযোগ রয়েছে ।
এ বিষয়ে নিহত কাউন্সিলর ছোট ভাই রুমান জানান, আমার ভাই হত্যাকান্ডের ঘটনায় একদল সন্ত্রাসীর সাথে ছিল শাহ আলম । তার নেতৃত্বে আমার ভাই ও সহযোগীদের নির্মম ভাবে গুলি করেছে। সোহেল ভাইকে পর পর ৯ টি গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করেছে শাহআলম।
শাহ আলম কি কারণে হামলা করেছে এমন প্রশ্নে রুমান বলেন, কাউন্সিলর মো: সোহেল ভাই সন্ত্রাসী শাহ আলমের বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করত। অস্ত্র মামলায় অভিযুক্ত ছিল শাহ আলম । নানা বিষয় নিয়ে শাহ আলমের সাথে দ্বন্দ্ব ছিল সোহেল ভাইয়ের । আমি কুমিল্লা সদরে আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার মহোদয় ও জেলা পুলিশের নিকট নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি যেন ২৪ ঘন্টার ভেতর আসামীদের গ্রেফতার করা হয়। আমার ভাইকে তারা যেভাবে হত্যা করেছে। তাদের যেন এমন নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়।
এদিকে গুলিতে আহত মো. বাদল জানান, হামালাকারীদের মুখে মুখোশ ছিল । গুলি চালানোর সময় তারা কথা বলেছে। কণ্ঠ শুনে আমি শাহ আলমকে চিনতে পেরেছি। শাহ আলমের কণ্ঠ আমার পরিচিত। তার নেতৃত্বে ৬ জনের একটি সন্ত্রাসী দল হামলায় অংশ নেন ।
এদিকে মঙ্গলবার ১৬ নং ওয়ার্ড ও ১৭ নং ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। কিছুক্ষণ পর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এলাকাবাসী শাহ আলম সহ হত্যাকারীদের বিচার দাবি করছে । কাউন্সিল সোহেলর উপর হামলার পর পর উত্তেজিত এলাকাবাসী শাহ আলমের বাড়িতে হামলা চালায় এবং পাশের একটি ঘর পুড়িয়ে দেয় । এ সময় আশে পাশের অর্ধশাতাধিক বাড়ি ঘর ভাংচুর করে উত্তেজিত জনতা । অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয় । মঙ্গলবার দিনভর পুলিশ শাহ আলমের বাড়ি সহ পাশ্ববর্তী এলাকায় ব্যারিক্যাড দিয়ে রাখে যেন উত্তেজিত জনতা হামলার ঘটনা না ঘটতে পারে ।অভিযুক্ত শাহ আলমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় গেইটে তালাবদ্ধ । এলাকাবাসীরা জানায় ঘটনার পর থেকে তাকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না।
নিহত কাউন্সিলর সোহেলের নেতা কর্মীরা শাহ আলমের সন্ধানে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী জানান, শাহ আলমকে পেলে আমরাই পিটিয়ে মেরে ফেলব । সোহেল ভাইয়ের উপর হামলার করার এক ঘন্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে । তাদের প্রতি আমাদের বিশ্বাস নেই । ভাই হত্যার বিচার আমরাই করব।
কুমিল্লা জেলা পুলিশের বিশেষ সূত্রে জানা যায়, শাহ আলমকে গ্রেফতারে একাধিক স্থানে অভিযান চলছে । এ ছাড়া সিসি ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে র্যাবের একটি টিম ।
এ বিষয়ে জানতে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আব্দুর রহিম (অর্থ ও প্রশাসন) জানান, এ হত্যাকান্ডে শাহ আলম জাড়িত কিনা তা তদন্ত করার পর জানা যাবে । ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা বাড়ি ঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তার পর থেকে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। ঘটনার পর থেকে হামলাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
Leave a Reply