অনলাইন ডেস্ক:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় দুই মাস আগে বিয়ে হয় ফারহানা আক্তার ঋতুর। এখনও শুকায়নি হাতের মেহেদির রঙ। তার আগেই যৌতুকের টাকার জন্য ফারহানাকে পিটিয়ে হত্যার পর ঝুলিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ তার পরিবারের।
ঘটনাটি ১৩ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে কসবা উপজেলার নয়নপুরের বেলতুলী গ্রামে ঘটে।
ঘটনার সূত্রমতে, কুমিল্লা নগরীর দক্ষিণ বাগিচাগাঁও মোঃ দুলাল মিয়ার মেয়ে ফারহানা আক্তার ঋতুকে স্বামী, শ্বশুড়, শাশুড়ি মিলে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার পর স্বামীর পরিবার পালতক রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি কসবা নয়নপুর বলতলী মুক্তিযোদ্ধা নুরু মিয়ার ছেলে হোমিও চিকিৎসক মোঃ দেলোয়ার হোসেনের সাথে বিয়ে হয়। ২মাস ২দিন পর ১৩এপ্রিল রাতে স্বামী দেলোয়ার হোসেন তার পিতা নুরু মিয়াসহ কয়েকজন মিলে ফারহানা আলম ঋতুকে পিটিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর পালিয়ে যায়।
এর আগে দেলোয়ার হোসেনের বোন কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এসআই আমেনা খাতুন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যৌতুকের জন্য ফারহানার পরিবারকে হত্যার হুমকি প্রদান করেন এবং ফারহানাকে তার শ্বশুরবাড়িতে না পাঠালে দাফনে কাপড় প্রস্তুত রাখতে হুমকি দিতে থাকে। বাধ্য হয়ে ফারহানার পরিবার তাকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠান। এর দুইদিন পর দেলোয়ারে পরিবার পক্ষে জানানো হয় ফারহানা আত্মহত্যা করেছেন।
এই বিষয় জানতে চাইলে অভিযুক্ত এসআই আমেনা খাতুন বলেন, এই বিষয় আমি কিছু জানি না, আমি যদি অন্যায় করি আইনগতভাবে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হউক। এই নিয়ে আমি আর কিছু বলতে পারবো না বলে কল কেটে দেন।
ফারহানা আলম ঋতুর বড় ভাই জানে আলম রাজু জানান, ছোট বোন আমার শ্বশুর বাড়িতে আমার মায়ের সাথে বেড়াতে যাওয়ার কারণে তার ননদ আমেনা খাতুন আঁখি মোবাইল ফোনে হুমকি দেয়। পরে বোনের শ্বশুর নুরু মিয়া আমাদের বাড়িতে এসে আমার বোন ফারহানা আলম ঋতুকে নিয়ে যায়। ১৩ এপ্রিল রাত ১২টা সময় তার শ্বশুর মোবাইল ফোনে জানায়, তোমার বোনের অবস্থা ভালো না, আবার বলে তোমার বোন মারা গেছে। বোনের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে রাতে ওই বাড়িতে ছুটে যাই । গিয়ে দেখি পুলিশ বোনের মরদেহ সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
ফারহানা আলম ঋতুর মা চিনু বেগম বলেন, আমার মেয়ের শ্বশুর নুরু মিয়া আমার কাছে যৌতুক চেয়েছে, তার ঘর ফার্নিচার দিয়ে সাজিয়ে দিতে বলেছে। তার স্বামী শ্বশুর শাশুড়ি মিলে যৌতুকের জন্য পিটিয়ে শ্বাসরোধে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ফারহানা আলম ঋতুর মরদেহ বুধবার রাতে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এই বিষয় জানতে মামলার কসবা থানার তদ্ভত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনকে একাধিক কল দিয়ে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর ভূঁইয়া জানান, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ফারহানা নামের নববধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের পর পরিবারের কাছ হস্তান্তর করা হয়। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ বলা যাবে।
Leave a Reply