আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মহাকাশ পানে ছুটতে যাচ্ছে দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু- ১’। বৃহস্পতিবার (১০ মে) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল লঞ্চপ্যাড থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় (বাংলাদেশ সময় ১১ মে রাত ৩টা) মহাকাশে ডানা মেলছে এ স্যাটেলাইট। এর মাধ্যমে বিশ্বের ৫৭তম স্যাটেলাইট ক্ষমতাধর দেশ হিসেবে জায়গা করে নেবে বাংলাদেশ।
স্যাটেলাইট স্থাপনের মাধ্যমে একদিকে বাংলাদেশকে যেমন আর অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল হতে হবে না তেমনি দেশের অভ্যন্তরীণ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায়ও ঘটবে যুগান্তকারী এক বিপ্লব।
চলুন জেনে নেয়া যাক বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সুবিধাসমূহ
বর্তমানে দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে স্যাটেলাইট ভাড়া নিয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এজন্য বছরে ব্যয় হয় প্রায় ১২৫ কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট চালু হলে অনেকাংশেই কমে আসবে এ ব্যয়। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে দেশের টাকা থেকে যাবে দেশেই।
স্যাটেলাইটের তরঙ্গ ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয়েরও সম্ভাবনা রয়েছে। টেলিভিশন চ্যানেল ছাড়াও ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি-স্যাট ও বেতারসহ ৪০ ধরনের সেবা পাওয়া যাবে এ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে।
যেকোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে টেরিস্ট্রিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দেশে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং পরিবেশ যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ই-সেবা নিশ্চিত করবে।
স্যাটেলাইটের কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে শুরু হলে আশপাশের কয়েকটি দেশে টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার সেবা দেয়ার জন্য জিয়োসিক্রোনাস স্যাটেলাইট সিস্টেমের গ্রাউন্ড সিস্টেমসহ সব ধরনের সেবা পাওয়া যাবে।
এছাড়া আবহাওয়ার পূর্বাভাস, টেলিমেডিসিন, ই-লার্নিং, ই-রিসার্চ, ভিডিও কনফারেন্স প্রতিরক্ষা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ভালো তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাবে এ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। নতুন দিগন্ত খুলে যাবে অন্যান্য বিভিন্ন খাতেও।
প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার নিজস্ব স্যাটেলাইট রয়েছে। এ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ফলে নেপাল, মিয়ানমার, ভুটান ও অন্যান্য দেশের কাছে সেবা ভাড়া দিতে পারবে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে বছরে প্রায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা যাবে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে। এর মধ্যে ২০টি ট্রান্সপন্ডার বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে। বাকি ২০টি ট্রান্সপন্ডার বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির জন্য রাখা হবে।
প্রাথমিক এসব সুবিধা শুধুমাত্র বাংলাদেশ এবং প্রতিবেশী দেশগুলোকে দেয়া সম্ভব হলেও পরে এর পরিসর বিস্তৃতি ঘটবে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর ও পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোর কাছে স্যাটেলাইট সুবিধা ভাড়া অথবা বিক্রি করতে পারবে বাংলাদেশ।
এ স্যাটেলাইট বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদে সেবা প্রদান করবে; যার পরিসর হবে বৃহৎ, বিশ্বমানের, নির্ভরযোগ্য, বহুমুখী এবং সুপার পারফরম্যান্স নির্ভর।
Leave a Reply