অনলাইন ডেস্ক:
দুই বছর আগে বিয়ে হয়েছে। তাদের ঘরে এক বছরের একটি সন্তানও রয়েছে। কিন্তু স্ত্রীকে ছেড়ে যে শাশুড়ির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে জামাই তা কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি। আর তাইতো সুযোগ বুঝে স্ত্রী ও সন্তানকে ফেলে শাশুড়িকে নিয়ে পালিয়ে গেল জামাই!
এরপর থেকে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় জীবন-যাপন করছে সেই বধূ। শাশুড়ি-জামাইয়ের এই কাণ্ড লোক মুখে ছড়িয়ে পড়তেই রীতিমতো লোক হাসাহাসি শুরু হয়ে গিয়েছে গ্রামে।ভারতের পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে।
স্ত্রী-সন্তানকে ফেলে রেখে শাশুড়িকে নিয়ে পালানোর ঘটনায় ইতোমধ্যেই নির্যাতিতার বধূর তরফে কেতুগ্রাম থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। অভিযোগে, স্বামী প্রসেনজিৎ হাজরা, অনুরূপার মা মঙ্গলী হাজরাকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে পালিয়েছে। অনুরূপার সন্দেহ, কাজের লোভ দিয়ে কোথাও নিয়ে গিয়ে তার মাকে বিক্রি করে দিয়েছে স্বামী। প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।
অনুরুপার বাবার বাড়ি কেতুগ্রাম থানার বহরান গ্রামে। বাবা কৃষ্ণ বর্মন পেশায় হকার। তিনি ফুচকা বিক্রি করেন। অনুরূপার মা মঙ্গলী দেবী গৃহবধূ। অনুরুপা তাদের একমাত্র মেয়ে সন্তান। উচ্চ মাধ্যমিক পাস অনুরুপা দেবী।
জানা গেছে, কেতুগ্রামের বাসিন্দা মলিন হাজরার ছেলে প্রসেনজিতের সঙ্গে মোবাইল ফোনে তার প্রথম পরিচয় হয়। তারপর ২০১৬ সালে অনুরূপা দেবী পালিয়ে বিয়ে করেন প্রসেনজিৎকে। প্রথমে বাড়িতে রাজি না থাকলেও পরে পরিবারের পক্ষে থেকে মেনে নেয়া হয় তাদের বিয়ে।
অনুরুপা বাবা কৃষ্ণ বর্মন বলেন, ‘প্রসেনজিৎ মোবাইল ফোনে আমার মেয়ের কাছে আনন্দ মণ্ডল নামে ও নিজেকে ঠিকাদার হিসাবে প্রথমে পরিচয় দিয়েছিল। বিয়ের পর জানতে পারি ওদের মুল পেশা শুকর-পালন ও জনমজুরি। তবু মেয়ের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে জামাইকে ব্যবসায় নামিয়ে ছিলাম। নিজের বাড়ির কাছে ঘর তৈরি করে দিয়ে থাকার ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু তার আগেই আমাদের সর্বনাশ করে চলে গিয়েছে প্রসেনজিৎ।’
এদিকে অনুরূপা জানান, শ্বশুরবাড়ি থেকে তার এক বছরের ছেলে রণজিৎকে নিয়ে তিনি গত ৪ মে বাবার বাড়িতে আসেন। স্বামীও সঙ্গে ছিল। দু’দিন পর এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গত ৬ মে দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর অনুরূপা দেবী তার মা ও ছেলেকে নিয়ে শুয়েছিলেন। পাশের ঘরে শুয়েছিলেন প্রসেনজিৎ। কৃষ্ণ বর্মন ব্যবসার কাজে বাইরে ছিলেন। বিকালে ঘুম থেকে ওঠার পর অনুরূপা দেখতে পান তার মা ও স্বামী বাড়িতে নেই। তারপর তিনি বাবাকে খবর দেন। প্রতিবেশীদেরও জানানো হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও দু’জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এপরপর গত ৯ মে কেতুগ্রাম থানায় অনুরূপাদেবী নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পাশাপাশি তিনি তার স্বামীর বিরুদ্ধে মাকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে পালানোর অভিযোগ জানিয়েছেন।
যদিও এ ব্যাপারে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ জানিয়েছে দু’জনের খোঁজে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।
এ নিয়ে অনেকেই বলাবলি করছেন তাহলে জামাই-শাশুড়ির এই পরকীয়া কি আদৌ জানতেন না পরিবারের সদস্যরা?
কৃষ্ণ বর্মন বলেন, ‘আমার স্ত্রী আমার কাছে দু’একবার বলেছিল প্রসেনজিৎ তাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছে। আমি বলেছিলাম ও ছেলের মতো। মেয়ের স্বার্থে ওকে বোঝাতে। ভেবেছিলাম নেশার ঘোরে প্রসেনজিৎ বলে ফেলেছিল। কিন্তু এতবড় অপরাধ করতে পারে আমি স্বপ্নেও ভাবিনি।’
অনুরূপা বলেন, ‘আমি, বাবা ও আমার সন্তান এই তিন জনের এখন অসহায় অবস্থা। কিভাবে বেঁচে থাকব সেটাই এখন চিন্তার।’
Leave a Reply