(মোঃ শাহীন আলম,চৌদ্দগ্রাম )
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পেশায় রাজমিস্ত্রী হয়েও ৩২ বছর বয়সে দাখিল পাশ করেছেন জাকির হোসেন নামের এক যুবক। রোববার প্রকাশিত ফলে উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের কাছারিপাড়া ফাযিল মাদরাসার থেকে তিনি জিপিএ-৪.৩০ পেয়েছেন। জাকির একই গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক নুরুল ইসলামের পুত্র। তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জনক। তার সাফল্যে আনন্দিত হয়েছেন মাদরাসার শিক্ষক, এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকজন।
গতকাল রোববার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, জাকির হোসেন আর্থিক সমস্যার কারণে পড়ালেখা বন্ধ করে রাজমিস্ত্রী কাজে যোগ দেন। রাজমিস্ত্রী হিসেবে এলাকায় তাঁর ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। কিন্তু তিনি নিয়মিত পবিত্র কোরআন ও হাদিস অধ্যয়ন করতে থাকেন। সুরা আলাক পড়ে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৬ বছর আগে আবারও নিয়মিতভাবে পড়ালেখা শুরু করেন। এরই মধ্যে তিনি ২০১৫ সালে কাছারিপাড়া মাদরাসা থেকে জেডিসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
সম্প্রতি তিনি মাদরাসার আরবী প্রভাষক মাওলানা মশিউর রহমান সালেহীর বেশি পরামর্শ নিতেন। প্রভাষকও যতœ সহকারে জাকিরকে পড়াতেন। অন্যান্য শিক্ষকরাও তাকে উৎসাহ দিতেন। বর্তমানে তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জনক। বড় মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণি ও ছোট মেয়ে নার্সারিতে পড়ালেখা করে। ছেলেকে আগামী বছর মাদরাসায় ভর্তি করানো হবে।
কি কারনে ছেলে-মেয়ে এবং সংসার থাকা স্বত্ত্বেও ৩২ বছর বয়সে দাখিল পরীক্ষা দিলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে জাকির হোসেন বলেন-শিক্ষার কোন নির্দিষ্ট বয়স নেই। জ্ঞান অর্জনের জন্যই পড়ালেখা করেছি। কারন-মুর্খ বন্ধুর চেয়ে শিক্ষিত শত্রু অনেক ভালো। আমি চাই-সমাজের সকলেই শিক্ষিত হয়ে যাক। তাহলে সমাজে আর হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি থাকবে না। সকলেই আল্লাহর নির্দেশিত পথেই চলবে।
এদিকে কৃষক নুরুল ইসলামের তিন ছেলের মধ্যে জাকির হোসেন সবার ছোট। সাংবাদিক ও স্থানীয়দের মাধ্যমে ছেলের সাফল্যের খবর পেয়ে তিনিও আনন্দিত হয়ে আল্লাহর নিকট শুকরিয়া প্রকাশ করেছেন।
এ ব্যাপারে মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাখছুদুর রহমান বলেন, জাকির হোসেন নামের ছেলেটি খুবই পরিশ্রমী। তার সাফল্যে আনন্দিত হয়েছি। আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করছি।
Leave a Reply