(জাগো কুমিল্লা.কম)
কুমিল্লার জেলা পুলিশ সুপার মো:. শাহ্ আবিদ হোসেন বলছেন, মাদকের বিরুদ্ধে এ সাঁড়াশি অভিযান চলবে। মাদকের বিষয়ে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। কুমিল্লাকে মাদক মুক্ত করতে সকল পদক্ষেপ নেয়া হবে। কোন পুলিশ সদস্যও যদি মাদককারবারীর সাথে যুক্ত থাকে তবে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তানভীর সালেহীন ইমনের নেতৃত্বে পরিচালিত এসব অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়াও প্রতিদিনই কুমিল্লা নগরীর চিহ্নিত মাদকের আস্তানাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালায় পুলিশ। এসব অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে শতাধিক মাদক কারবারী। আর উদ্ধার করা হয়েছে ইয়াবা-ফেনসিডিল-গাঁজাসহ বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য। এর মধ্যে ২৩ মে ৫৩ জন ও পরদিন ২৪ মে গ্রেফতার হয় প্রায় ১৫ মাদক ব্যবসায়ী এবং গতকাল কোতয়ালী পুলিশের অভিযানে আটক হয় ৬ মাদক বিক্রেতা। তাদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা প্রদান করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ মে) বিকেলে অভিযানকালে কোতয়ালি থানার ওসি আবু সালাম মিয়া জানান, মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নগরীর শাসনগাছা, পালপাড়া, বালুতুপাসহ নগরীর চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এ অভিযান চলবে।
গত মাদক বিরোধী অভিযানে গত ৯ দিনে পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে ১৩ জনসহ ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
গত গত ৮ দিনে কুমিল্লা জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত ১৩মাদক ব্যবসায়ী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। ২২ জুন থেকে শুরু হয় এই চিরুনী অভিযান। মাদক পাচারের অন্যতম রুট ভারতীয় সামান্তবর্তী উপজেলার আদর্শ সদর , সদর দক্ষিণ, চৌদ্দগ্রাম , বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বার মুরাদনগরে পুলিশ – মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে পৃথক বন্দুক যুদ্ধে তারা নিহত হয়।
২২ মে মঙ্গলবার রাত একটায় আদর্শ সদরের বিবির বাজার এলাকায় শরীফ নামের (২৬) পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। সে সদর দক্ষিণ উপজেলার মহেশপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ৫ টি মাদক মামলা রয়েছে।
পৃথক অভিযানে একই স্থানে পিয়ার আলী (২৮) বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। সে আদর্শ সদর উপজেলার শুভপুর গ্রামের আলী মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১৩ টি মামলা ছিল।
২৩ শে মে বুধবার রাত সাড়ে ১২ টায় আদর্শ সদর উপজেলার চাঁনপুর ব্রীজ এলাকায় ইসহাক ওরোফে ইসা (৩৫) ) পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। সে আদর্শ সদর উপজেলার আব্দুল জলিলে ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১১ টি মামলা রয়েছে।
২৪ মে বৃহস্পতিবার রাত একটায় চৌদ্দগ্রামের আমানগন্ডায় এলাকায় পুলিশের বন্দুক যুদ্ধে বাবুল, ওরোফে লম্বা বাবুল নিহত হয়। সে চৌদ্দগ্রামের বৈদ্দের খিল গ্রামের আমান মিয়ার ছেলে।তার বিরুদ্ধে ৫ টি মামলা ছিল।
একই সময় সদর দক্ষিণ উপজেলার গোয়ালমথন এলাকায় রাজিব (২৬) পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। সে সদর দক্ষিণ চাঙ্গিনি গ্রামের মৃত শাহ আলম মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১৩ টি মামলা ছিল।
২৬ মে শনিবার রাত দেড়টায় ব্রাহ্মণপাড়ার বাগড়া এলাকায় বাবুল (৪০) পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। সে ব্রাহ্মণপাড়া আশাবাড়ি গ্রামের আব্দুল মালেকে ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১৬ টি মামলা রয়েছে।
২৮ শে মে সোমবার কুমিল্লার দেবিদ্বারে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান চলাকালে কথিত বন্দুকযুদ্ধে এনামুল হক দোলন (৩৫) নামে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। সে ভিংলাবাড়ী মির্জানগর এলাকার মৃত আব্দুল্লাহ ভূইয়া ছেলে। অাত্মরক্ষার্থে জান-মালের নিরাপত্তায় ২৩ রাউন্ড শর্ট গানের গুলি বর্ষণ করে পুলিশ। এ সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়। তার বিরুদ্ধে ১২ টি মামলা রয়েছে।
একই সময় আলমাস(৩৬) নামে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। সে ব্রাহ্মণপাড়া এলাকায় দক্ষিণ তেতা ভূমি গ্রামের আফাজ উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ৮ টি মামলা রয়েছে।
২৯ শে মে মঙ্গলবার কুমিল্লা মুরাদনগরে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে বাতেন (৩৬) ও কানা লিটন (৩৬) নামে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। নিহত বাতেন মুরাদনগর উপজেলার বাখর নগর এলাকার শহিদ মিয়ার ছেলে এবং কানা লিটন একই উপজেলার পৈয়াপাথর গ্রামের আব্দুল সামাদ মিয়ার ছেলে। এ সময় তিন পুলিশ আহত হয়। তেনের বিরুদ্ধে মোট ৮টি ও লিটনের বিরুদ্ধে মোট ৭ টি মামলা বিচারাধীন আছে।
অপরদিকে এছাড়া পুলিশের বিশেষ অভিযানে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় নারী সহ কয়েক শতাধিক মাদক সেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। উক্ত অভিযানকে স্বাগত জানিয়েন জানিয়েছেন কুমিল্লাবাসী।
কুমিল্লার জেলার বুড়িচং থানা পুলিশ ও মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে বন্দুকযুদ্ধে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী রুশমত আলী নিহত হয়েছে। সে উপজেলার কালীকৃষ্ণ নগর গ্রামের মৃত আলী আহাম্মদের ছেলে।
বুধবার রাত সাড়ে ১২ টা ৫৫ মিনিটে উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের লড়িবাগ রাস্তার মাথায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় এসআই মোয়াজ্জেম, এএসআই সজীব ও কনেস্টবল আল আমিন আহত হযেছে।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোজ কুমার দে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মাদকের একটি বড় চালান আসার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে থানা পুলিশের একটি টিম উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের লরিবাগ রাস্তার মাথায় গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশের উপর হামলা করে মাদক ব্যবসায়ীরা।
পুলিশও আত্মরক্ষায় গুলিবর্ষণ করলে রুশমত আলী গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে দায়িত্বরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এসময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৪০ কেজি গাঁজা, ১টি পাইপগান ও ১ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে। নিহত রুশমত আলীর বিরুদ্ধে ৭টি মাদক মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।
এদিকে কুমিল্লা সদরের পাল পাড়া ব্রীজ এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে গোলাগুলি ঘটনা। সূত্র: কুমিল্লার কাগজ
Leave a Reply