নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিভিন্ন রোগের নিরাময়, বিপুল সম্পত্তির মালিক, খনাশ জ্বীনকে পাতিল বন্দী করা এবং অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী করার প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে বিভিন্ন সময়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে কথিত জ্বীনের বাদশ জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। জাকির হোসেনের বাড়ি বরিশাল জেলার বানারিপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুরে।
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দির উপজেলার গৌরিপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। কুমিল্লা র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন শনিবার দুপুরে তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, কথিত জ্বীনের বাদশা কোরআন শরীফ পড়তে না জানলেও আজগুবি সব মন্ত্র বলে ঝাড়ফুঁকের নাটক করতেন। আর বিভিন্ন মাটির পাতিল, প্রাণীর হাড়গোড় ইত্যাদি বস্তু ব্যবহার করে নাটকীয় কারবার করে ভুক্তভোগীদের প্রভাবিত করে টাকা হাতিয়ে নিত। এতোদিন ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বরিশালে ৫ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে বানিয়েছেন প্রসাদসম একটি বাড়ি। যার ১ম তলার ভিতর ও বাহির টাইলস করা সহকাজ সম্পন্ন করেছে এই টাকা দিয়ে।
তিনি আরও বলেন, ভোক্তভোগী কৃষক আবুল খায়েরের মধ্যে নাকি কথিত জ্বীনের বাদশা জাকির এক অলৌকিক চিহ্ন দেখতে পেয়েছে। কিছু সাধনা করলে আবুল খায়ের হয়ে যেতে পারবেন অদৃশ্য জগতের মহা ক্ষমতার অধিকারী। তখন সে যা চাইবে তাই হবে। ছেলে মেয়েদের জীবন বাঁচানোর জন্য ও অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার জন্য জমানো অর্থ, জমি-জামা বিক্রি ও লোন করে ৬মাসে বিভিন্ন ধাপে জাকিরের হাতে তুলে দেন ৫০ লক্ষ টাকা।বিভিন্ন ধাপে টাকা প্রাপ্তিতে জাকির পূর্ব পদ্ধতি অবলম্বন করে একে একে সব কটি জ্বীনকে পাতিল বন্ধি করে। তবে খায়ের সাহেবের অলৌকিক শক্তি প্রাপ্তির অপেক্ষা শেষ হয় না।
খায়ের সাহেব জাকিরের সাথে যোগাযোগ করলে জাকির জানায় খায়ের সাহেবকে অলৌকিক শক্তির অধিকারী করার জন্য জাকিরকে ১০০টি নদীর পানিতে শুকর ও চিলের হৃদপিন্ড দিয়ে সাধনা করতে হবে, যার জন্য প্রয়োজন আরও ২০ লক্ষ টাকা। টাকা সংগ্রহের কোন পথ না পেয়ে খায়ের সাহেব এবার বিষয়টি তার বড় ছেলেকে জানায়। আবুল খায়েরের ছেলে বুঝতে পারেন তার পরিবার ভয়ানক প্রতারণার শিকার হয়েছে। ভুক্তভোগী আবুল খায়েরের ছেলে জ্বীনের বাদশার কাছে প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি র্যাবে নিকট লিখিত অভিযোগ জানানোর পর নারায়ণগঞ্জের তার নিজ বাসা থেকে জ্বীন বন্দির কাজে ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি মাটির পাতিল ও তাবিজ কবজ উদ্ধার করে র্যাব। জাকিরের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর অজান্তে তার বড় মেয়েকে প্রভাবিত করে কাবিন ও সাক্ষী ছাড়াই বিয়ের অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
Leave a Reply