অনলাইন ডেস্ক:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবলীগনেতা জামাল হত্যা মামলায় নয়জনের ফাঁসি ও নয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদাণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার (১২ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) জহিরুল হক সেলিম। রায় ঘোষণাকালে দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ১৮ জনের মধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নয়জনের মধ্যে একজন আদালত কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত নয়জনই অনুপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া পাঁচজনকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন চৌদ্দগ্রাম আলকরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন বাচ্চু, আলকরা ইউনিয়নের কুলাসার গ্রামের সালাউদ্দিন, আব্দুর রহমান, মফিজুর রহমান খন্দকার, জিয়াউদ্দিন শিমুল, জাহিদ বিন শুভ, রেজাউল করিম বাবলু, মো. রিয়াজ উদ্দিন মিয়াজী ও মমতা আমির হোসেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন আলকরা ইউনিয়নের কুলাসার গ্রামের নুরুল আলম, কফিল উদ্দিন, নুরুন্নবী সুজন, ইকবাল আহমেদ, সাইফুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান খন্দকার, মোশারেফ হোসেন, মো. আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ আলী হোসেন।
মামলা থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন আলকরার কুলাসার গ্রামের নজরুল ইসলাম শিমুল আজিম উদ্দিন আনোয়ার হোসেন সোহেল আতিকুর রহমান নান্টু ও ইউসুফ হারুন মামুন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম আলকরা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জামাল উদ্দিনকে হত্যা করা হয়। সেই সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় যুবলীগনেতা জামাল উদ্দিনের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরে জামাল উদ্দিনের ওপর হামলা করে তাঁকে আহত করেন আসামিরা। এ বিষয়ে জামাল উদ্দিন নিজে বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। মামলার করার পর চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি রাত ৮টায় বাড়ি থেকে জামালকে ঢাকায় যাওয়ার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামের পদুয়ায় সড়কের উপর চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর নেতৃত্বে অন্য আসামিরা গুলি করে এবং কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত জামালের বড় বোন জোহরা আক্তার বাদী হয়ে ২৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসলি (পিপি) জহিরুল হক সেলিম বলেন, মামলায় ২০ জনের সাক্ষগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নয়জনের মৃত্যুদণ্ড, নয়জনকে যাবজ্জীবন এবং পাঁচজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত একজন ও খালাস পাওয়া দুজন আদলতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক।
Leave a Reply