( জাগো কুমিল্লা.কম)
দেবীদ্বারে মাদকের টাকার জন্য পিতাকে কুপিয়ে হত্যাকারী সেই মাদকাসক্ত সোহেল রানা (২৮) কে অতিষ্ট হয়ে জবাই করে হত্যা করল তার মেঝোভাই মেহেদী হাসান (২২)। পুলিশ হত্যাকান্ডের ৪ঘন্টার মধ্যেই হত্যাকারীকে সনাক্ত করে আটক করার পর জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের বর্ননা দিলেন ডেকোরেটর ব্যবসায়ি নিহতের মেঝো ভাই মেহেদী হাসান। ওই ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই হাফেজ এমরান বাদী হয়ে রোববার দুপুরে মেহেদী হাসানকে একমাত্র আসামী করে দেবীদ্বার থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে ২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারী নেশার টাকার জন্য তার বাবা ইউনুছ মিয়াকে পুত্র সাহেল রানা কুপিয়ে হত্যা করেছিল। সম্প্রতি নিহতের বড়ভাই সুমন মিয়া(৩০) ও মাদক সেবনের দায়ে ভ্রাম্যমান আদালতের রায়ে ৬মাসের সাজায় কারাগারে রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় পৌর এলাকার মরিচাকান্দা গ্রামে নিজ বাড়ির পাশে সোহেল মিয়ার লাশ গলাকাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করে। নিহত সোহেল রানা পৌর এলাকার মরিচাকান্দা গ্রামের বাদু মিয়া বাড়ির মৃত: ইউনুছ মিয়ার দ্বিতীয় পুত্র। পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে নিহতের সেজো ভাই ডেকোরেটর ব্যবসায়ি মেহেদী হাসান(২২)কে আটক করে এবং জিজ্ঞাসাবাদে মেহেদী হাসান হত্যাকান্ডের বর্ননা দেন।
মেহেদী হাসান ক্ষোভের সাথে জানান, নেশাগ্রস্থ সোহেল পরিবারের শান্তি, সম্মান এমনকি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি আমাদের পিতাকেও নেশার টাকার জন্য হত্যা করেছে। সোহেলকে মাদক আইনে এবং পিতাকে হত্যার অভিযোগে করাগারে পাঠালেও কারাগার থেকে বেড়িয়ে এসে আবারো নেশার জগতে চলে যায়। পিতার অবর্তমানে মেহেদী হাসান ডেকোরেটরের ব্যবসা দিয়ে সংসারের হাল ধরেন। এব্যবসাতেও সোহেলের নেশার টাকার চাঁপে মেহেদী হাসান অতিষ্ঠ হয়ে উঠে।
শনিবার দিবাগত রাতে সোহেলকে পুকুরপাড়ে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় দেখে মেহেদী হাসান প্রথমে রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে অচেতন করে, পরে ছুরি দিয়ে তার গলা কেটে এবং বিভিন্ন অংশে আঘাত করে হত্যা করে। পরে বাড়ির পাশে লাশ ফেলে আসে। পরনের রক্তাক্ত কাপড় ও ছোরাটি ধুয়ে ডেকোরেটর দোকানে রেখে মেহেদী বাড়িতে এসে ঘুমিয়ে থাকে। পুলিশ আলামত হিসেবে হত্যাকারীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধীতে ডেকোরেটর দোকানে রক্ষিত ছোরা ও রক্তেভেজা কাপড়গুলো উদ্ধা করেছে।
পৌরসভার সহায়তা কমিটির স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল কাদের জানান, সোহেল মিয়া দীর্ঘ দিন ধরে মাদকাসক্ত, ২০১৫সালের ১০জানুয়ারী নেশার টাকার জন্য তার বাবাকেও সে কুপিয়ে হত্যা করেছিল। সে মাদক মামলায় কয়েক বছর জেল খাটার পর জামিনে ছিল। তার আরেক ভাইও মাদকের মামলায় জেলে ৬মাসের সাজা ভোগ করছে।
এ ব্যাপারে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, পুলিশ সকাল সাড়ে ৭টায় ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। নিহতের ছোট ভাই হাফেজ এমরান বাদী হয়ে মেহেদী হাসানকে একমাত্র আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। তবে নেশার কারনে একটি সুন্দর পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল।
Leave a Reply