1. jagocomilla24@gmail.com : jago comilla :
  2. weekybibarton@gmail.com : Amit Mazumder : Amit Mazumder
  3. sufian3500@gmaill.com : sufian Rasel : sufian Rasel
  4. sujhon2011@gmail.com : sujhon :
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৫ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ

কারাগারে শারীরিক ও মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে আসিফ; গুরুতর অসুস্থের শঙ্কা

  • প্রকাশ কালঃ বৃহস্পতিবার, ৭ জুন, ২০১৮
  • ৪৮৭

( জাগো কুমিল্লা.কম)
চার দেয়ালে বন্দী জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর। পরিবার বলছে, আসিফের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা অথচ তাঁর কাছে ওষুধ দিতে পারেননি। এ নিয়ে চিন্তিত স্ত্রী সালমা আসিফ। আদালতেও আসিফের আইনজীবীরা চিকিৎসা সনদ দিয়ে দাবি করেছেন, আসিফ অসুস্থ। তবে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, আসিফ কারাগারে ভালোই আছেন।

‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ গান দিয়ে আসিফ রাতারাতি তারকা বনে যান। ২০০১ সালে গানের জগতে প্রবেশের মাত্র পাঁচ বছর পর আসিফ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। প্রশ্ন হলো, আসিফ কেন আজ কারাগারে? কারণ, গীতিকার শফিক তুহিন অভিযোগ করেছেন, আসিফ অন্যের গান বিক্রি করে দিয়ে অনেক টাকা কামিয়েছেন। ফেসবুকে শফিক তুহিন এর প্রতিবাদ করলে হুমকি দেন আসিফ।

বুধবার বিকেলে আসিফকে নেওয়া হয় কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে। কারা কর্তৃপক্ষ বলছেন, আসিফ ভিআইপি মর্যাদার আসামি নন। শিল্পী ও ভদ্রলোক হিসেবে পেশাদার অপরাধীদের সঙ্গে আসিফকে রাখা হয়নি। তুহিনের মামলায় গ্রেপ্তার আসিফকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। অবশ্য পুলিশ আসিফকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিল, আদালত সাড়া দেননি।

বেলা দুইটার দিকে আসিফকে আদালতের হাজতখানা থেকে পুলিশ বের করে নিয়ে আসে। দেখা গেল, হাজতখানা থেকে হাসতে হাসতেই আদালতের এজলাসে ওঠেন আসিফ। পরনে ছিল জিনস প্যান্ট আর লাল রঙের পাঞ্জাবি। আসিফকে অন্য আসামিদের সঙ্গে আসামির কাঠগড়ায় রাখা হয়। লোহার খাঁচায় থাকা আসিফ তখনো হাসতে থাকেন।
আসিফ এবং তাঁর আইনজীবীরা আদালতকে বারবারই বলছিলেন, আসিফ অসুস্থ। মেরুদণ্ডে প্রচণ্ড ব্যথা, আছে উচ্চ রক্তচাপও। আর আসিফের অসুস্থতার প্রমাণ হিসেবে চিকিৎসকের সনদ আদালতের কাছে তুলে ধরা হয়।

 

আসিফকে রিমান্ডে নেওয়ার পক্ষে পুলিশ যুক্তি তুলে ধরার পর আসিফের আইনজীবীরা বক্তব্য দিতে শুরু করেন। একপর্যায়ে আসিফ নিজেই আদালতের কাছে তাঁর যুক্তি তুলে ধরেন। আসিফ বলেন, গীতিকার শফিক তুহিন তাঁর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছেন। ফেসবুকে শফিক তুহিন তাঁর সম্পর্কে মানহানিকর মন্তব্য করেছেন। তিনি মামলা করতে পারতেন কিন্তু করেননি।

আসিফের আইনজীবীরা বলছিলেন, আসিফ দেশের জনপ্রিয় শিল্পী। তিনি অসুস্থ। বারবারই তাঁকে জামিন দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়।

তখন ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম কেশব রায় চৌধুরী বলেন, আসিফকে তিনি ভালোভাবেই চেনেন। বিচারক জানতে চান, আসিফ কেন গান বন্ধ করেছেন? দরাজ কণ্ঠে আসিফ তখন বিচারককে জানান, নতুন করে পাঁচ বছর আগে থেকে গান গাওয়া শুরু করেছেন।

এ সময় আইনজীবীরা আদালতে বলতে থাকেন, আসিফকে জামিন দেওয়া হোক। আদালতে ছিলেন আসিফের স্ত্রী বেগম সালমা আসিফ ও অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সাউন্ডটেকের মালিক সুলতান মাহমুদ বাবুল, গায়ক তরুণ মুন্সি এবং সোহেল মেহেদী। আসিফকে এক নজর দেখতে আদালতে ভিড় জমান ভক্তরা।

সব কথা শোনার পর আদালত আসিফকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করেন। একই সঙ্গে জামিনের আবেদনও নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠান।

আদেশ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আসিফকে হাজতখানায় নেওয়া হয়। এরপর প্রিজন ভ্যানে করে ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয় আসিফকে।

ওষুধ নেই
আসিফ অসুস্থ। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ। ওষুধ না খেলে রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে। আসিফের স্ত্রী সালমা আসিফ বলছিলেন, মঙ্গলবার রাত থেকে আসিফের কাছে ওষুধ নেই। ওষুধ না খেতে পারলে যেকোনো সময় আসিফ আরও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়বেন। আসিফকে নিয়ে তিনি খুব চিন্তিত।

আদালতের কাছে আসিফ তাঁর চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র জমা দেন। সেখানে দেখা যায়, আসিফ নিয়মিত থেরাপি নেন। নয় বছর ধরেই থেরাপি নিয়ে চলছেন। আর চিকিৎসকেরা আসিফকে লিভারের নিয়মিত পরীক্ষা করানোর সুপারিশ করেছেন। স্ত্রী সালমা আসিফ বললেন, আসিফের ঘাড়ে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়। মাঝেমধ্যেই তা তীব্র আকার ধারণ করে।

কারাগার সূত্র বলছে, আর পাঁচজন সাধারণ কয়েদিকে যেখানে রাখা হয় আসিফকেও সেখানে রাখা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীর কবির বুধবার রাতে বলেন, আসিফকে পেশাদার অপরাধীদের সঙ্গে রাখা হয়নি। তাঁকে অন্য সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গেই রাখা হয়েছে। আসিফ কারাগারে সুস্থই আছেন।

যেভাবে গ্রেপ্তার আসিফ
মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টা। আসিফ এফডিসির কাছে নিজের অফিসে বসে কাজ করছিলেন। অফিসের দরজা বন্ধই ছিল। বাইরে থেকে কল বেল চাপ দেওয়া হলে অফিসের লোকজন দরজা খুলে দেন। তখন সিআইডির একটি দল আসিফের অফিসে ঢোকেন। এরপর অফিসে তল্লাশি চালান বলে ঘটনাস্থলে থাকা আসিফের পরিচিত একজন বন্ধু প্রথম আলোকে জানান।

আসিফকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার খবর তাঁর স্ত্রী সালমা জানেন অফিসের একজনের কাছ থেকে। সালমা বললেন, ‘হঠাৎ আমাদের অফিস থেকে একজন ফোন করে বলেন, আসিফকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে সিআইডি। তখন আমি বারবারই আসিফের মোবাইলে ফোন দিই কিন্তু মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।’

আসিফের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ
আসিফের বিরুদ্ধে গীতিকার শফিক তুহিনের অভিযোগ, আসিফ অনুমতি না নিয়ে তাঁর গানসহ ৬১৭টি গান বিক্রি করেছেন। শুক্রবার রাতে তুহিন বিষয়টি জানার পর ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে গায়ক আসিফও তাঁর মত তুলে ধরেন। তুহিনের দাবি, আসিফ তাঁর সম্পর্কে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন।

মামলায় তুহিন দাবি করেন, শনিবার রাতে আসিফ ফেসবুকে লাইভে এসে তুহিনকে হুমকি দেন। আসিফের লাখো অনুসারী দেখেছেন, পড়েছেন, যাতে তুহিনের মানহানি হয়েছে।

আসিফের বিরুদ্ধে তুহিন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার পাশাপাশি প্রতারণা ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনেছেন। আসিফের বিরুদ্ধে তুহিনের আরও অভিযোগ, আসিফের অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম আর্ব এন্টারটেইনমেন্ট। এর প্রধান হিসেবে আসিফ অন্যের গান ডিজিটালে রূপান্তর করে অনেক টাকা কামিয়েছেন।
আসিফের আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ হীরু অবশ্য বলেছেন, আসিফের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। যে অভিযোগ তা কপিরাইট আইনের।
আসিফকে নির্দোষ দাবি করে তাঁর আইনজীবীরা আদালতে যুক্তি দেখান যে তুহিনকে কী হুমকি দিয়েছেন আসিফ, তা মামলায় বলা হয়নি।
আর আসিফ তো আদালতে দাবি করে বসলেন, তুহিনই ফেসবুকে তাঁর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। তিনি তো মামলা করতে পারতেন, কিন্তু করেননি। আবার আসিফ এটাও বললেন, ফেসবুক লাইভে তাঁর আগে তুহিনই এসেছিলেন।

আদালতে আসিফ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে কয়েক মিনিট ধরে যুক্তি তুলে ধরেন। আসিফের সাফ কথা, হয়রানি করার জন্য তুহিন মিথ্যা মামলায় তাঁকে ফাঁসিয়েছেন। অন্যের গান বিক্রি করে একটি টাকাও কামাননি।

শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুনঃ

© All rights reserved © 2024 Jago Comilla
Theme Customized By BreakingNews