অনলাইন ডেস্ক:
কুমিল্লা থেকে ময়মনসিংহ। অপহরণকারীরা ছিল দ্রুত গতির ট্রেনে। অপর দিকে পুলিশের তৎপরতা ও ভরসা ছিল অপহরণকারীদের মোবাইল ট্র্যাকিং। তাই গভীররাতে বি-বাড়িয়ার কসবা পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসে কুমিল্লার পুলিশ। রাতভর অপহরণকারীদের অবস্থান ছিল একেক স্থানে। শেষ পর্যন্ত শ্বাসরুদ্ধ অভিযানের পরিসমাপ্তি ঘটে রোববার দুপুরে।
কুমিল্লা নগরী থেকে অপহৃত মেহেদী হাসান মিরান নামের এক স্কুলছাত্রকে পুলিশের তৎপরতায় ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ময়মনসিংহের গৌরিপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় পুলিশ একই বাসার সাবলেট ভাড়াটিয়া নাহিদ (১৫) ও নাহিদের অপর সহযোগী মাসুদকে আটক করে।
উদ্ধার হওয়া স্কুলছাত্র মিরান কুমিল্লা নগরীর ইবনে তাইমিয়া স্কুলের কেজি শ্রেণির ছাত্র। সে জেলার চান্দিনা উপজেলার আট চাইল গ্রামের সৌদি প্রবাসী কেফায়েত খানের ছেলে এবং নগরীর টমছমব্রিজ এলাকার ফাতেমা মঞ্জিলের ভাড়াটিয়া।
কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ আবু সালাম মিয়া জানান, গত শনিবার বেলা সোয়া ১১টায় মিরানের মায়ের অনুরোধে তাদের বাসার সাবলেট ভাড়াটিয়া নাছিমার ছেলে নাহিদ কেজি শ্রেণির ছাত্র মিরানকে স্কুলে পৌঁছে দেয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন। পরে দুপুরে স্কুলে গিয়ে মিরানকে না পেয়ে নাহিদের বাসায় খোঁজ নিয়ে তাকেও বাসায় পাওয়া যায়নি। পরে নিখোঁজ মিরানের মা নুসরাত জাহান রাতে এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
ওসি আরও জানান, অপহরণকারীরা ছিল ট্রেনে। তাই মোবাইল ট্র্যাকিং করে রাতে তাদের অবস্থান বি-বাড়িয়ার কসবায় পাওয়া গেলেও সেখানে পুলিশ ছুটে গিয়ে ওদের না পেয়ে ফিরে আসে। কিন্তু অপহরণকারীরা ট্রেনে থাকায় রোববার দুপুরে মোবাইল ট্র্যাকিং করে তাদের অবস্থান ময়মনসিংহে নিশ্চিত হয়ে ময়মনসিংহ ডিবি ও জিআরপি পুলিশ গৌরিপুর রেলওয়ে স্টেশনে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে অপহরণকারী নাহিদ ও মাসুদকে আটক এবং অপহৃত মিরানকে উদ্ধার করে।
ময়মনসিংহ গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি শাহ কামাল আকন্দ জানান, ময়মনসিংহের গৌরিপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে জিআরপি পুলিশের সহায়তায় অপহরণকারীদের আটক ও অপহৃত ওই স্কুলছাত্র মিরানকে উদ্ধার করার পর তার সঙ্গে থাকা স্কুল ব্যাগ ও খাতা-পত্র ডায়েরি থেকে স্কুলের নম্বরে কল করে মিরানের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় খবর দেয়া হয়। বর্তমানে দুই অপহরণকারী ও উদ্ধার হওয়া শিশু ময়মনসিংহ জিআরপি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
ওই স্কুলছাত্রের মা নুসরাত জাহান জানান, আমার একটি বাসার রুম সাবলেট হিসেবে নাছিমা নামের এক মহিলাকে ভাড়া দিয়েছিলাম। সেখানে তার ছেলে নাহিদ মাঝে মধ্যে আসতো। গত ২/৩ ধরে সে (নাহিদ) বাসায় নিয়মিত অবস্থান করে আসছিল। শনিবার তাকে বিশ্বাস করে আমার ছেলেকে স্কুলে পাঠানোর পরই এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে অপহরণ ঘটনার সফল উদ্ধার অভিযানের খবরে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের একটি দল বর্তমানে ময়মনসিংহের পথে রয়েছে বলেও ওসি জানিয়েছেন।
Leave a Reply