অনলাইন ডেস্ক:
বিগত সময়ে কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামের সংসদ সদস্য মুজিবুল হক রেলমন্ত্রী ছিলেন । কিন্তু নতুন মন্ত্রী সভাতে স্থান পেলেন না তিনি। কুমিল্লা ছেড়ে পঞ্চগড়ে চলে গেল রেলমন্ত্রণালয়। প্রধান মন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন কুমিল্লাবাসী। তাদের প্রত্যাশা সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের প্রতি সুবিচার করবে প্রধানমন্ত্রী। যদি ও কুমিল্লাবাসী বড় দুইটি মন্ত্রণালয় পেয়েছে। সরকারের নতুন মন্ত্রী সভায় কুমিল্লার আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী হিসেবে তাজুল ইসলাম শপথ গ্রহন করেছেন।
১৯৯৬ সালের পর এই প্রথম জাতীয় সংসদের মন্ত্রীত্ব পাচ্ছেন পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন। এ ছাড়া এর আগে আওয়ামী লীগ চার বার বিজয়ী হলেও পঞ্চগড়ের দুটি আসনের কোনো সংসদ সদস্যই মন্ত্রীত্ব পাননি। পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পঞ্চগড়-২ আসনে তিন বারের সংসদ অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজনকে এবার আওয়ামী লীগ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রী পাওয়ার খবরে পঞ্চগড়ের সাধারণ মানুষের মাঝে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও মিষ্টি বিতরণও হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিলও করেছে দলের নেতাকর্মীরা।
নূরুল ইসলাম সুজন এবারসহ তিন বার পঞ্চগড়-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথম অংশগ্রহণ করেন নূরুল ইসলাম সুজন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয় বিএনপির প্রার্থী মোজাহার হোসেন।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী পরাজিত করে প্রথম বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন। এরপর ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাসদের প্রার্থী এমরান আল আমিনকে পরাজিত করে দ্বিতীয় বার নির্বাচিত হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিএনপি প্রার্থী ফরহাদ হোসেন আজাদকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে তৃতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নূরুল ইসলাম সুজন পেশায় সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলারও একজন আইনজীবী ছিলেন তিনি। তিনি পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের দুই বারের সভাপতি।
ছাত্রাবস্থা থেকে তিনি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ডাকসুর বিজ্ঞান মিলনায়তন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ঢাবি’র সিনেট সদস্য ছিলেন। ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহআইন বিষয়ক সম্পাদক ও আইন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহ-সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এবার নির্বাচনের আগের দিন নূরুল ইসলাম সুজনের স্ত্রী নিলুফার ইসলাম অসুস্থতায় মৃত্যুবরণ করেন। ভোটের পরদিন তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে বিএনপির সময়ে পঞ্চগড়-১ আসনে বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। অস্টম জাতীয় সংসদে তিনি স্পিকার ও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। তার আগে বিএনপির মির্জা গোলাম হাফিজ এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া মির্জা গোলাম হাফিজ স্পিকারের দায়িত্বও পালন করেন। তবে আওয়ামী লীগ একাধিকবার জয়ী হলেও পঞ্চগড়ের দুটি আসন থেকে কোনো মন্ত্রী ছিল না।
Leave a Reply