অনলাইন ডেস্ক:
শৈশব কৌশরের কষ্টের চাকায় মোড়ানো সংগ্রামী জীবনের গল্পকে সামনে রেখে এগিয়ে চলা মানুষটির নাম আ হ ম মুস্তফা কামাল। যিনি এদেশের মানুষের কাছে লোটাস কামাল নামেই বেশি পরিচিত। বিশ্বপরিমন্ডলে ও বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি’র সাবেক সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামালের পরিচিতির ব্যাপকতা রয়েছে। শিক্ষা জীবন থেকে শুরু করে ব্যবসা, ক্রীড়াঙ্গন ও রাজনীতিতে সফল আ হ ম মুস্তফা কামালের সংগ্রামী পথচলা নতুন প্রজন্মকে উদ্দীপ্ত করে তুলে। আ হ ম মুস্তফা কামাল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১০(নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণের একাংশ ও লালমাই উপজেলা) আসনে নৌকা প্রতীকে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে চতুর্থবারের মতো জয় তুলে কেবল কুমিল্লাই নয়, দেশবাসীকে তাক লাগিয়েছেন।
অস্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা জয়ের মধ্যদিয়ে কুমিল্লার মানুষ পায় আ হ ম মুস্তফা কামালের মতো একজন ক্লিন ইমেজের রাজনীতিক। তারপর ২০০৮ সালের নির্বাচনে নতুন সংসদীয় এলাকা নাঙ্গলকোটেও নৌকা জয়ের মধ্যদিয়ে ওই অঞ্চলের মানুষ বেছে নেয় জীবনে হার না মানা সংগ্রামী নেতা লোটাস কামালকে। ২০১৪ সালে এ আসন থেকে তিনি আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোন। আর পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের। দেশের বরেণ্য রাজনীতিকদের একজন আ হ ম মুস্তফা কামালের জন্ম কুমিল্লার এক অজপাড়াগাঁ (নতুন উপজেলা লালমাই) দুতিয়াপুর গ্রামে। দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম নেয়া আ হ ম মুস্তফা কামাল দারিদ্রের অন্ধকারে থেকেও স্বপ্ন দেখতেন আলোকিত জীবনের।
স্বপ্ন দেখতেন লক্ষ্যপূরণে সামনে এগিয়ে চলার। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্য ও আইন বিষয়ে স্নাতক পাস করেন। এরপর অ্যাকাউন্টিংয়ে স্নাতকোত্তর অর্জন এবং বিশ্বের নানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি প্রাপ্ত লোটাস কামাল আজও গ্রামের সেই কাদামাটির মানুষটিই রয়ে গেছেন। নেই অহঙ্কার, নেই অর্থের দাপট। আছে শুধু মানুষের জীবন কিভাবে অর্থবহ হবে, সাফল্য আসবে এসব ভাবনা। কৃষকপুত্র লোটাস কামাল আর রাজনৈতিক নেতা ও মন্ত্রী লোটাস কামালের মধ্যে কোন ফারাক খুঁজে পাননা কুমিল্লার মানুষ। তবে লোটাস কামালের ভেতর খুঁজে পাওয়া যায় আত্মবিশ্বাসী ও দৃঢ়প্রত্যয়ী এক মানুষের জীবন্তরূপ।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে চারবারের জয়ের পর্দা উন্মোচন করেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ সারির নেতা পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৪ লাখ ৫৪৮৬ ভোট। আর প্রতিদ্ব›দ্বী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরীর ধানের শীষ পেয়েছে ১২ হাজার ১৮৩ ভোট।
নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী এ আসনটিতে বিপুল ভোটের ব্যবধানে ধানের শীষ পরাজিত হওয়ায় বাজেয়াপ্ত হয়েছে মনিরুল হক চৌধুরীর জামানত। আ হ ম মুস্তফা কামালের জয়ে উচ্ছ¡সিত কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণের একাংশ ও লালমাই উপজেলা) আসনের জনগণ। এবারে নির্বাচনী সভাগুলোতে আত্মবিশ্বাসী ও দৃঢ়প্রত্যয়ী লোটাস কামাল তার বক্তৃতায় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারুণ্যের শক্তি কাজে লাগানোর ওপরই বেশি জোর দিয়েছেন। ভোটের লড়াইয়ে নতুন ও তরুণ প্রজন্মের ব্যাপক সাড়া পড়ে নৌকা প্রতীকে।
এবারের নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয়ের প্রক্রিয়ায় পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল বলেন, এ বিজয় নতুন প্রজন্মের। এ বিজয় আজকের ছোট্ট শিশুটির, যে হবে উন্নত বাাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে তরুণদের হাত ধরেই বাংলাদেশের আগামীর পথ চলা অর্থবহ হয়ে উঠবে। আমরা নতুন ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য তাদের উপজ্জীব্য করে সমাজ বিনির্মাণে কাজ করে যাবো।
যেখানে তাদের জন্য থাকবে উচ্চতর শিক্ষার অবারিত দরজা এবং শিক্ষা শেষে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। কেবল তাই নয়, এখন আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য থাকবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও কৃষি পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি করে টেকসই উন্নয়নের। ইনশাআল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতেৃত্বেই আমাদের স্বপ্ন মুজিববর্ষ-২০২০, ডিজিটাল বাংলাদেশবর্ষ-২০২১, এসডিজিবর্ষ-২০৩০ ও উন্নত বাংলাদেশবর্ষ-২০৪১ সালের রূপকল্প বাস্তবায়ন করবো। সূত্র: ইনকিলাব রিপোর্টার: সাদিক মামুন
Leave a Reply