অনলাইন ডেস্ক:
বিএনপি সর্বশেষ অংশ নেওয়া ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিন শরিকদের ৪১টি আসন ছেড়ে দিয়ে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়েছিল ২৫৯টি আসনে। এবার দলের প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার সংখ্যা আরো কমে যেতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত চারটি কারণে এবার বিএনপির প্রার্থী তালিকায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, আগের নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন এমন অর্ধশত প্রার্থী এবার মনোনয়ন পাচ্ছেন না। ওই সব আসনের কোনোটিতে বিএনপির নতুন প্রার্থী, আবার কোনোটি জোটের শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হবে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি ও তৎকালীন চারদলীয় জোট।
যে চার কারণে বিএনপির প্রার্থী তালিকায় বড় পরিবর্তন আসতে পারে তার প্রথমটি হচ্ছে, ১০ বছর আগে নির্বাচনে অংশ নেওয়া অনেক প্রার্থী ইতিমধ্যে মারা গেছেন। দ্বিতীয়ত, বয়স বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই এবার নির্বাচন করতে পারছেন না। তৃতীয়ত, ওই সময়ের চারদলীয় জোট এখন ২০ দলীয় জোটে পরিণত হয়েছে এবং চতুর্থত, গত মাসে বিএনপিসহ অন্য চারটি দলের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ফলে আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে মোট ২৪টি দলের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করতে হবে। বিষয়টি বিএনপির জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্টের নেতারা অবশ্য বলছেন, সংখ্যার ভিত্তিতে নয়; আসন বণ্টন হবে প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনার ভিত্তিতে।
কুমিল্লার ১১টি আসনের মধ্যে অন্তত পাঁচটিতে এবার প্রার্থী পরিবর্তন করবে বিএনপি। এর মধ্যে কুমিল্লা-১ আসনের পাশাপাশি কুমিল্লা-২ আসনেও স্থায়ী কমিটির প্রবীণ সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রার্থী হচ্ছেন। কুমিল্লা-২ আসনের সাবেক এমপি, স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য এম কে আনোয়ার মারা গেছেন। তাঁর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কেউ নির্বাচন করতে আগ্রহী নন। দলের কোনো ভালো প্রার্থীও নেই ওই আসনে। অন্যদিকে শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ পলাতক থাকায় তাঁর পরিবারের যেকোনো একজন সদস্যকে মনোনয়ন দেওয়া হবে কুমিল্লা-৩ আসনে।
কারাগারে থাকায় কুমিল্লা-৪ আসন থেকে মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী নির্বাচন করতে না পারায় ২০০৮ সালে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল তাঁর স্ত্রী মাজেদা আহসানকে। কিন্তু এবারে মুন্সী নিজেই নির্বাচন করবেন। অবশ্য সমঝোতা হলে আসনটি ছেড়ে দেওয়া হবে জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতনকে। এ এস এম আলাউদ্দিন ভূঁইয়ার বদলে কুমিল্লা-৫ আসনটি এবার ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে। কুমিল্লা-৭ আসনের আগের প্রার্থী খোরশেদ আলম মারা গেছেন। ওই আসনটি শরিক দল এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদকে ছেড়ে দেবে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আসন বণ্টন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। বিএনপির প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের পর এ বিষয়ে আলোচনা শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ১০ বছর আগে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। কেউ কেউ ইতিমধ্যে মারাও গেছেন। ফলে অনেক যাচাই-বাছাই করে এবার প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, বয়সজনিত কারণে তিনি নির্বাচন করবেন না। ‘আমার মতো অনেকেই নির্বাচন করবেন না। তা ছাড়া ১০ বছরে বিএনপির পাশাপাশি রাজনীতিতেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। তরুণ বা নতুন মুখ তৈরি হয়েছে। ফলে তাদেরও জায়গা করে দিতে হবে।’
Leave a Reply