(আব্দুল্লাহ আল মানছুর, কুমিল্লা)
এক সময়ে জুলফো বেগম(৮৫) স্বামী কন্যা সন্তাকে নিয়ে শুশুর বাড়ি থাকলেও বর্তমানে তার ঠাঁই মিলল রানীর দিঘী ইসলামপুর ছাত্রাবাসের কাঠাঁল গাছ তলায়। সময়ের সাথে সাথে জুলফো বেগমের ভাগ্যের নির্মম চিত্র ফুটে ওঠে। কুমিল্লা নগরীর রানীর দিঘী পূর্ব পাড়ে কাঠাঁল গাছ তলায় ঠাঁই পাওয়া অসুস্থ বৃদ্ধা জুলফো বেগমের সাথে কথা বললে তিনি জানান- নগরীর সুজানগর এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুল আলিমের সাথে জুলফো বেগমের বিবাহ হয়। জুলফো বেগমের পরিবারে একটি মাত্র কন্যা সন্তান জন্ম নিলেও তিনি এরপর হতে আর কোন সন্তান নেয়নি। একমাত্র কন্যা সন্তানের নাম আদর করে রাখেন মেন্নেকা।
মেন্নেকা কে সব চেয়ে বেশি মা জুলফো বেগম আদর ¯েœহ করার কারনে তাহার পার্শ্ববতী গ্রামের রাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী শাহ আলমের সাথে বিয়ে দেন। মেয়ে মেন্নেকা’র বিয়ের কয়েক বছর পর বৃদ্ধা জুলফো বেগমের স্বামী ্ব্যবসায়ী আব্দুল আলিমের মৃত্যু হয়।
একদিকে জুলফো বেগম তাহার স্বামীকে হারিয়ে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পরে অন্যদিকে জুলফো বেগম তার একমাত্র ঠাঁই স্বামীর বাড়িও হারাতে বসে। জুলফো বেগমের ভাই কুমিল্লা আর্দশ সদর উপজেলার ৬নং জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বারপাড়া গ্রামের মৃত. কুদ্দুস মিয়ার পুত্র ব্যবসায়ী সহিদ মিয়া, তিনি কয়েক বছর বৃদ্ধা বোনের সেবা যতœ করলেও পারিবারিক কারনে এখন আর বোনের খোঁজ খবর রাখেন না। এদিকে আদরের একমাত্র মেয়ে মেন্নেকার কোন খোঁজও নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়-বয়স্ক জুলফো বেগমের স্বামী ব্যবসায়ী ছিলেন, কখনো পরিবারে অর্থ সম্পদের অভাব ছিলো না । বয়স বাড়ার সাথে সাথে জুলফো বেগম অসুস্থ হয়ে পরলে, তার দায়িত্ব নিতে চায় না পরিবারে কেউই। গত কিছু দিন পূর্বে কুমিল্লা রানীর দিঘীর পূর্ব পাড়ে তাহার পরিবারের কে বা কাহারা ইসলামপুর ছাত্রাবাসে বদ্ধা জুলফো বেগম(৮৫) কে রেখে চলে যান।
এরপর হতে ১১নং ওয়ার্ড মুন্সেফবাড়ী রোড রানীর দিঘী এলাকার সমাজ সেবক শাহআলম তাহার নিজ উদ্যেগে রানীর দিঘী পূর্ব পাড় ইসলামপুর ছাত্রাবাসের উত্তরে কাঠাঁল গাছ তলায় টিন ও বাশেঁর বেড়া দিয়ে ছোট্ট ঘর তৈরি করে দেন। এ ঘরেই যেন বদ্ধার দিন কেটে রাত পোহায়। বৃদ্ধার স্বজনদের যেন নেই খোঁজ।
বৃদ্ধা জুলফো বেগমের খাবার দায়িত্ব নেন উত্তর চর্থা মালু বাড়ির জোসনা বেগম।
জোসনা বেগম প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় এসে বৃদ্ধার খাবার দিয়ে যান বলে জানান। এছাড়া স্থানীয় সমাজ সেবক শাহআলম- বদ্ধা জুলফো বেগমের বিভিন্ন খোঁজ খবর রাখেন। জুলফো বেগমের আত্মীয় স্বজন থাকলেও এখন অসুস্থ থাকার কারনে বদ্ধার কেউ খোঁজ খবর নেয় না বলে জানা যায়। বর্তমানে বৃদ্ধা জুলফো বেগম(৮৫) সরকারের বয়স্ক ভাতা হতেও বঞ্চিত। জুলফো বেগমের জন্য স্থানীয় রানীর দিঘী এলাকাবাসীদের দাবি- কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার যেন এ বৃদ্ধা অসুস্থ মায়ের খোঁজ খবর নিয়ে সার্বিক সহযোগিতার করবেন।
Leave a Reply