তাপস চন্দ্র সরকার:
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আগামী ৩ নভেম্বর শনিবার থেকে ৬, ১০, ১৩ ও ১৭ এই পাঁচ দিন কুমিল্লা মহানগরীর রামঘাটলা রোডস্থ মহেশাঙ্গণ (ঈশ্বর পাঠশালা) নাট মন্দির প্রাঙ্গণে শ্রী শ্রী লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘ ও শ্রী শ্রী লোকনাথ যুব সেবা সংঘ এর যৌথ উদ্যোগে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও রাখের ব্রত উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
ওই প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও রাখের ব্রত অনুষ্ঠানে দল মত নির্বিশেষে লোকনাথ ভক্তদেরকে যথা-সময়ে নিবন্ধন করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন মহেশাঙ্গণ শ্রী শ্রী লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘ ও শ্রী শ্রী লোকনাথ যুব সেবা সংঘ এর নেতৃবৃন্দ।
এদিকে, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্ঠাণ ঐক্য পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মহেশাঙ্গণ শ্রী শ্রী লোকনাথ যুব সেবাসংঘের অন্যতম সদস্য এডভোকেট তাপস চন্দ্র সরকার জানান- আপনজনের কল্যাণ কামনায় বছর বছর কার্তিক মাসের শেষ ১৫ দিনের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার উপবাস পালন করেন লোকনাথ ভক্তরা। তারই ধারাবাহিকতায় আগামী ১৬ কার্তিক শনিবার থেকে ৩০ কার্তিক শনিবার পর্যন্ত সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লা মহেশাঙ্গণ নাট মন্দির প্রাঙ্গণে ঘিয়ের প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি বলেন- সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়লে ঘিয়ের প্রদীপে আগুন জ্বালান ভক্তরা। অন্ধকার ভেদ করে তখন ভক্তদের পবিত্র প্রদীপালোকে আলোকিত হয় মহেশাঙ্গণের চারপাশ। সন্ধ্যা নামার আগে সারিবদ্ধভাবে মহেশাঙ্গণ নাট মন্দির ঘিরে বসতে শুরু করেন পুণ্যার্থীরা। অপক্ষোয় থাকেন সূর্য ডোবার। নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলাস্থিত বারদী শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী বাবার আশ্রমসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার লোকনাথ আশ্রমগুলোতে রাখের উপবাসকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার পুণ্যার্থীরা ভিড় জমান। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়- কথিত আছে, কলেরা-বসন্তের হাত থেকে বাঁচার জন্য কার্তিক মাসে উপবাস থেকে ঘিয়ের প্রদীপ ও ধূপ জ্বালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বাবা লোকনাথ।
এর পরথেকে লোকনাথ ভক্তরা তাই কার্তিক মাসে এই উৎসব পালন করেন। উপবাস শেষে ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালানো শেষ হলে ভাঙা হয় সারাদিনের উপবাস। আপনজনের কল্যাণার্থে প্রদীপ জ্বালানো হলে ধূপের ধোয়ায় আচ্ছন্ন লোকনাথ আশ্রমগুলোতে প্রার্থনায় মগ্ন হন পুণ্যার্থীরা। নানাহ আশা নিয়ে মনের বাসনা পূরণের জন্য পাগলের মতো ছুটে আসেন বাবার সমাধি মন্দিরে।
প্রতি বৎসর কার্তিক মাসের ১৫ তারিখের পর দলমত নির্বিশেষে হাজার হাজার ভক্ত বারদী আশ্রমে সমবেত হন এবং বাবার রজ ও চরণামৃত গ্রহণ করে সবাই বাবার পাদপদ্মে পুষ্পাঞ্জলী দিয়ে একনিষ্টভাবে প্রার্থনা করে “হে দীন দয়াল তুমি আমাদেরকে সত্য নিষ্ট পথে চালাও। আমরা যেন তোমার মহা বাণী অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে পারি এবং তোমার চরণে চিরজীবন দাস হয়ে থাকতে পারি।” আরও জানা যায়- বাবার ভক্তরা বাবাকে কিছুতেই ভুলতে পারছেন না।
আপদে-বিপদে সর্বদা একমাত্র বাবা লোকনাথের নামই ভরসা এই ভেবে বাবার নামজপ করে রোগ-শোক ও দুঃখ-বেদনা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। দিনের পর দিন বাংলার প্রতি ঘরে ঘরে বাবা লোকনাথের তৈলচিত্র শোভ পাচ্ছেন; কিন্তু কোন প্রচার নেই। একজনকে দেখেঅন্যজন এভাবে আবাল-বৃদ্ধ-বর্ণিতা বাবার ভক্তে রূপান্তরিত হচ্ছেন। জয় বাবা লোকনাথ, জয় মা লোকনাথ, জয় শিব লোকনাথ, জয় গুরু লোকনাথ, জয় ব্রহ্ম লোকনাথ। ওঁ শান্তি! ওঁ শান্তি!! ওঁ শান্তি!!!
তাপস চন্দ্র সরকার
Leave a Reply