(অনলাইন ডেক্স): গত ১২ অক্টোবর নেওয়া ভর্তি পরীক্ষায় যে ১৮ হাজার ৪৬৪ জনকে উত্তীর্ণ ঘোষণা কর হয়েছিল, কেবল তাদের নিয়েই নতুন করে এই পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার দিনক্ষণ পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।
প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে ওই পরীক্ষার ফলাফল বাতিল এবং নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অংশের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিল।
ডিনস কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ‘ঘ’ ইউনিটে ভর্তির পুনঃপরীক্ষায় মূল সমন্বয়কারী থাকবেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম। যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে থাকবেন জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ইমদাদুল হক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন। বুধবার বৈঠক করে তারা পরীক্ষার তারিখ ঠিক করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যারা প্রথম পরীক্ষায় ৪৮ নম্বর পেয়ে পাস করেছে, কেবল তাদের নিয়েই পুনরায় পরীক্ষার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
“ডিজিটাল জালিয়াতি বা প্রশ্নপত্র ফাঁস- যাই হোক না কেন, এই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে সে বিতর্কের অবসান হবে বলে আশা করি। তাতে প্রকৃত মেধাবীরাই ভর্তির সুযোগ পাবে। সবচেয়ে বড় কথা এর ফলে জনমনে সে সন্দেহ এবং সংশয়, তার অবসান হবে।”
গত ১২ অক্টোবর ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরুর পৌনে এক ঘণ্টা আগে হাতে লেখা প্রশ্নপত্রের ১৪টি ছবি এক শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোনে আসে। প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্তের পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি স্বীকার করে নিলেও গত মঙ্গলবার ফল প্রকাশ করে। সেখানে দেখা যায় ‘ঘ’ ইউনিটের প্রথম ১০০ জনের তালিকায় থাকা অন্তত ৭০ জন ভর্তিচ্ছু অন্য ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণই হতে পারেননি।
এরপর আইন বিভাগের এক ছাত্র ফল বাতিলের দাবিতে অনশন শুরু করলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সরব হয়ে ওঠেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদও ‘ঘ’ ইউনিটের ফল বাতিলের দাবিতে সংহতি জানায়।
ওই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হওয়া এক শিক্ষার্থীর বাবা রোববার ফল বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন।সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগও নতুন করে পরীক্ষা নেওয়াসহ চার দফা দাবিতে মঙ্গলবার উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেয়।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, “আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এখানে এসেছি। আমরা চাই মেধাবীরা যেন বঞ্চিত না হয়। যেখানে প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পাওয়া গেছে, প্রশাসনও স্বীকার করেছে, মিডিয়াতে এসেছে, সেখানে আমরা চাই আবার পরীক্ষা নেওয়া হোক। যদি সম্ভব না হয় তবে যারা পাস করেছে তাদেরটা নেওয়া হোক।”
স্মারকলিপি গ্রহণ করে উপাচার্য সে সময় বলেন, ডিনস কমিটির বৈঠকে তিনি দাবির বিষয়গুলো তুলবেন। পরে বিকালে ডিনস কমিটির বৈঠক শেষে উত্তীর্ণদের ফের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানান তিনি।
Leave a Reply