(নাজমুল সবুজ, কুবি প্রতিনিধি )
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষার্থীদের বাসে হামলার ঘটনা শুধু মামলা এবং পুলিশের তদন্তের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এ ঘটনার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো কাউকে আটক করতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
কুবি সূত্রে জানা যায়, গত ১১ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থার (বিআরটিসি) একটি বাস নগরীর ধর্মপুর এলাকায় পৌঁছলে কিছু ব্যক্তি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাসটির চালক আলাউদ্দীনকে মারতে উদ্যত হয়। এ সময় বাসে থাকা শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে ওই ব্যক্তিরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় বাসের চালক আলাউদ্দীন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দ্বীন মোহাম্মদ আহত হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ঐদিন রাতে বেলতলী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। এ ঘটনার পরদিন ১২ অক্টোবর (শুক্রবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদেক হোসেন মজুমদার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনকে আসামী করে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা করেন। তবে হামলাকারীদের একজন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য আশিকুর রহমান জুয়েল বলে সনাক্ত করে হামলায় আহত হওয়া শিক্ষার্থী দ্বীন মোহাম্মাদ।
হামলার ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে হামলা একবার নয় কয়েকবার ঘটেছে। কিন্তু প্রশাসন বারবার আশ্বাস দেওয়ার পরও ঘটনাগুলো ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। আমরা এ ঘটনাসহ পূর্বের সকল হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম হানিফ বলেন, ‘আমরা শান্তি-শৃঙ্খলার কথা চিন্তা করে ৬ ঘন্টার সময়সীমা দিয়ে আমাদের আন্দোলন স্থগিত করেছিলাম। পুলিশ প্রশাসন দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামীদের আটক করবে বলেছিল। কিন্তু পরিতাপের বিষয় তারা কথা রাখেনি। শিক্ষার্থীরা বারবার এমন হামলা ও হতাশ ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। আমরা দ্রুতই অভিযুক্তদের আটকের দাবিতে মাঠে নামবো এবং কোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে প্রশাসনই দায়ী থাকবে।’
প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ হতে মামলা করা হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন কি ব্যবস্থা নিয়েছে সেটা আমার জানা নেই। আর আসামি আটক করার দায়িত্ব হচ্ছে পুলিশের। আমি উপাচার্য ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে এ বিষয়ে কথা বলবো।’
মামলার অগ্রগতির বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ হতে যে মামলা হয়েছে সেটির তদন্ত চলছে। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’ file photo
Leave a Reply