(আবু সুফিয়ান রাসেল, কুমিল্লা)
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলের সাধারণ মানুষ সরকারীভাবে চিকিৎসা সেবা গ্রহনের জন্য নির্ভর করে এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটির উপর। ২০১৩ সালে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজটি ৫শ শয্যায় উন্নীত করলেও বর্তমানে রোগীর চাপ বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে এক হাজারের অধিক রোগী চিকিৎসা সেবা নেয় এ হাসপাতাল থেকে। তবে প্রয়োজনীয় লোকবল ও স্থান সংকুলান না হওয়ায় চিকিৎসা সেবা প্রদান ব্যহত হচ্ছে।
সরেজমিনে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, শয্যার প্রতিটিতে রোগী ও তাদের স্বজনরা অবস্থান করছেন। এছাড়াও আরো রোগী ভর্তি হওয়ার কারনে মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে আরো অন্তত ৫শ জন।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে ৫০০ আসনের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ১০৩২ জন। বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে সরকার নির্ধারিত সিট রয়েছে ২টি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লোকাল সিট বৃদ্ধি করে আর ৩টি। বুধবার হাসপাতালে এ বিভাগে রোগী ভর্তি ছিল ৩৭ জন। মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে আসন সংখ্যা ৩০টি, রোগী ভর্তি আছে ১৪৭ জন। পুরুষ ওয়ার্ডে সিট ১০টি রোগী ভর্তি ৫৪ জন। কুমেক হাসপাতালের ২৬ টি ওয়ার্ডের একই চিত্র। প্রতিটি ওয়ার্ডে দুইগুন, তিনগুণ, কোন ওয়ার্ডে ৪গুণ রোগী ভর্তি রয়েছে। ৯ অক্টোবর রোগী ভর্তি ছিল ৯৯৪জন, ১০ অক্টোবর রোগী ভর্তি ছিল ১০৩২ জন। অতিরিক্ত রোগীর ফলে সেবা দিতে প্রতিদিন হিমশিম খাচ্ছে ডাক্তার, নার্স ও হাসপাতালের কর্মচারীরা। ২৫০ শয্যা নিয়ে ১৯৯২ সালে চালু হয় এ হাসপাতাল। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ২০১৩ সালের ২০ এপ্রিল ৫০০ শয্যায় উন্নীতকরণ হয়। তবে নতুন জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
ওয়ার্ড মাষ্টার মো: ইলিয়াস মিয়া জানান, ৫০০ শয্যার এই হাসপাতালে গড়ে এক হাজার রোগী প্রতিদিন চিকিৎসা সেবা গ্রহন করে। তবে লোকবল সংকটের কারনে তিন বেলা যথাযথ ভাবে হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা ও ভর্তি থাকা রোগীর চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য অন্তত ৪৮০ জন জনবল প্রয়োজন। এখানে সরকারি ও আউটসোসিংসহ কর্মচারী আছে ১৪৭ জন ।
সেবা তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) শাহানারা আক্তার সানু জানান, সাধারণ বেড ৯৮৬ জন, পেইং বেডে৩৮, কেবিন বেডে ৪ জন মোট ১০৩২ জন রোগী ভর্তি আছে। এ দিকে নাসিং এ ৭৮টি পদ শূন্য রয়েছে। আমাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়।
হাসপাতাল পরিচালক ডা: স্বপন কুমার অধিকারী বলেন, জনবল নিয়োগের বিষয়ে আমি কয়েক বার কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি, এখন পর্যন্ত কোন উত্তর পাইনি। বৃহত্তর কুমিল্লার সর্ববৃহৎ হাসপাতাল এটি। প্রতিদিন হাজারের বেশী রোগী ভর্তি থাকে, এখন এ হাসপাতলকে ১৫০০ শয্যায় উন্নীত করা প্রয়োজন।
Leave a Reply