( জাগো কুমিল্লা.কম)
অবৈধ অভিবাসীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার। ১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া তিন মাস মেয়াদি এই সাধারণ ক্ষমা কার্যকর থাকবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। অভিবাসীদের মধ্যে যাদের পাসপোর্ট নেই তাদের দ্রুত নতুন পাসপোর্ট করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সাধারণ ক্ষমা কাজে লাগাতে বলা হয়েছে, কারণ সুযোগ বার বার আসে না।
সাধারণ ক্ষমার এই সময়ের মধ্যে প্রায় ১ হাজার প্রবাসী আউট পাশ নিয়ে দেশে গিয়েছেন বলে জানান আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ডা. মোহাম্মদ ইমরান।
তিনি জানান, আগামী অক্টোবর মাসের ৩১ তারিখ সাধারণ ক্ষমার সময়সীমা শেষ হবে। তাই এ চলতি মাসের ২০ তারিখের মধ্যে যেকোন ধরনের সমস্যা থাকুক না কেন, সবারই দূতাবাস ও কনস্যুলেটে আসা উচিত।
সম্প্রতি আবুধাবিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কনফারেন্স রুমে দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পাসপোর্ট সংক্রান্ত কাজ সম্পন্ন না করলে এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে পাসপোর্ট বানানোর সুযোগ দিয়েছে আবুধাবিস্থ দূতাবাস ও দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেট।
তিনি বলেন, এখন থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ভিসা যে প্রদেশেরই হোক না কেন, দুবাই বা আবুধাবী দূতাবাসে এলে পাসপোর্ট বানানোর সুযোগ দেয়া হবে। দুবাই কনস্যুলেট থেকে পাসপোর্ট কপি না থাকায় যাদেরকে পাসপোর্ট বানানোর সুযোগ দেয়া হয়নি তাদেরকেও এখন থেকে পাসপোর্ট কপি ছাড়া পাসপোর্ট বানানোর সুযোগ দেয়া হবে বলে জানান রাষ্ট্রদূত। দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটে সেবার মান বৃদ্ধি ও প্রবাসীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাই দুবাই ও উত্তর আমিরাতের সকল প্রবাসীকে দুবাই কনস্যুলেট থেকে সেবা নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ইমরান জানান, যারা ছয় মাসের জব সিকার ভিসা পেয়েছেন তাদেরকে আমিরাতের লেবার মিনিস্ট্রি থেকে ভিসা দেয়া হচ্ছে। তারা যে কোনো কোম্পানিতে ভিসা লাগাতে পারবেন। তবে নতুন নিয়োগ ও ট্রান্সফার ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার সমাধান এখনো হয়নি। আর পাসপোর্ট এর রশিদ নাম্বার যাদের এআরই ৪১৯৯৯৯ এর মধ্যে আছে তাদের সকলের পাসপোর্ট দেশ থেকে দূতাবাসে চলে এসেছে এবং তাদের সবাইকে বাংলাদেশ মিশন থেকে পাসপোর্ট গ্রহণ করার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত।
এদিকে যারা ভিজিট ভিসায় এসে অবৈধ হয়ে সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নেয়ার আশা করছেন, তাদের মধ্যে যারা ৩১ জুলাই এর আগে অবৈধ হয়েছিলেন তাদের জন্য এই সুযোগ। আর ৩১ জুলাইয়ের পর যারা অবৈধ হয়েছেন তারা এই সুযোগ পাবেন না। সুতরাং সবাইকে সাবধান থাকার পরার্মশও দিয়েছেন রাষ্ট্রদূত।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের মধ্য আগস্ট থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত দেশটিতে চাহিদার অতিরিক্ত অদক্ষ বাংলাদেশি শ্রমজীবির অনুপ্রবেশ, ভিসা জালিয়াতিসহ নানা অপরাধকর্মে অধিক হারে বাংলাদেশিদের সংশ্লিষ্টতার কারণ বাংলাদেশিদের সব ধরণের ভিসা বন্ধ করে দেয়। বন্ধ হয়ে যায় বাংলাদেশিদের জন্য আভ্যন্তরীণ ভিসা ট্রান্সফারও। দুর্বল ও শ্লথগতির ভিসা ডিপ্লোমেসি ও বিভিন্ন টানাপোড়েনে দীর্ঘ ৬ বছরের বেশি সময়ে ভিসার জট না খোলায় আমিরাতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজারটি মুখ থুবড়ে পড়ে।
চাকরি হারিয়ে অনেকেই দেশে ফিরে যান, আবার ভিসা খোলার আশায় কেউ কেউ অবৈধ হয়ে পড়েন। চড়ামূল্যে আরব্য গৃহকর্মী কিংবা বিজনেস পার্টনার ভিসায় অনেকে কোনমতে তাদের অবস্থানের বৈধতা ধরে রাখেন।
গত ১ আগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশটিতে চলা ৩ মাসব্যাপী অ্যামনেস্টি বা সাধারণ ক্ষমার সময় চলছে। এর আওতায় দেশটিতে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের বিনা জেল-জরিমানায় আমিরাত ত্যাগের কিংবা দেশটিতে তাদের অবস্থান বৈধ করার সুযোগ তৈরি হয় যা অনেকের জন্যই স্বস্তির সংবাদ হয়। ধারণা করা হয় যে বৈধভাবে এদেশে এসেও বিভিন্ন কারণে অবৈধ হয়ে পড়া বাংলাদেশিদের সংখ্যা ১০ শতাংশ। বৈধ হতে কিংবা বিনা জেল জরিমানায় আমিরাত ত্যাগে ইচ্ছুক এ অবৈধ বাংলাদেশিদের ভিড়ে সীমিত জনবল নিয়ে থাকা আবুধাবি দূতাবাস ও দুবাই কনস্যুলেটের নাকাল অবস্থা।সূত্র; ভিডি24লাইভ
Leave a Reply