অনলাইন ডেস্ক:
মুঠোফোনে পরিচয় হওয়ার পরে পরকীয়ার টানে প্রথম স্বামীর সংসার ছেড়ে বরিশালের গৌরনদী পৌর এলাকার গেরাকুল মহল্লায় জাহিদুর রহমান মৃধার সঙ্গে সংসার বেঁধেছিলেন এক সন্তানের জননী নাদিয়া বেগম (২০)।
পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে এক বছর সংসার করে অবশেষে দ্বিতীয় স্বামী জাহিদুরের নির্যাতনের শিকার হয়ে সোমবার রাতে মারা গেছে নাদিয়া বেগম। মঙ্গলবার সকালে হাসপাতাল থেকে নাদিয়া বেগমের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নাদিয়ার স্বজনরা জানান, প্রায় ৩ বছর আগে মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার চরপালরদী গ্রামের কবির আকনের মেয়ে নাদিয়ার সঙ্গে আগৈলঝাড়া উপজেলার মো. মনির হোসেনের (৩০) সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। স্বামী মনির হোসেন ঢাকায় থাকা সুবাদে নাদিয়া বেগম সন্তানকে নিয়ে বাড়িতে বসবাস করতেন। দেড় বছর আগে মুঠোফোনের মিস কলের সূত্র ধরে নাদিয়া বেগমের পরিচয় হয় গৌরনদী পৌর এলাকার গেরাকুল মহল্লার মৃত মো. সেলিম মৃধার ছেলে জাহিদুর রহমান মৃধার (২১) সঙ্গে। ফোনে কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরকীয়ার এক পর্যায়ে গত বছর (২০১৭) এপ্রিল মাসে নাদিয়া স্বামীর ঘর ছেড়ে পরকীয়া প্রেমিক জাহিদুরকে বিয়ে করে তার সঙ্গে সংসার শুরু করেন।
নিহত নাদিয়ার মা আলেয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে নাদিয়ার দ্বিতীয় স্বামী জাহিদুর রহমান একজন মাদক সেবি। সে মাদক সেবন করে প্রায়ই নাদিয়াকে মারধর করতো। নাদিয়া বিষয়টি পূর্বেই তাকে জানান। গত সোমবার রাতে নাদিয়ার সঙ্গে স্বামী জাহিদুরের ঝগড়াঝাটি হয়। এক পর্যায়ে জাহিদুর নাদিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করে মৃতদেহ ঘরে ঝুলিয়ে রাখে। পরবর্তীতে মঙ্গলবার সকালে নাদিয়ার লাশ হাসপাতালে রেখে আমাকে আত্মহত্যার কথা জানিয়ে খবর দেয়। আমি এসে নাদিয়ার গায়ে নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পাই। আমার কন্যা নাদিয়াকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। অভিযোগের ব্যাপারে জাহিদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এলাকার লোকজন জানান, হাসপাতাল থেকে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করার পর থেকে জাহিদুর রহমান গা ঢাকা দিয়েছে।
গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইকবাল কবির জানান, অভিযোগ পেয়ে সকালে হাসপাতাল থেকে গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে থানায় ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রির্পোট হাতে পাওয়ার পরে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে হত্যা মামলা রুজু করা হবে।
Leave a Reply