(সৌরভ মাহমুদ হারুন, কুমিল্লা)
বালু বোঝাইকারী আন্তঃ জেলায় চলাচলকারী সাধারণ পরিবহনের একটি বড় ট্রাকের চাপায় সাইকেল আরোহী অষ্টম শ্রেনীর স্কুল ছাত্র মারাত্বকভাবে আহত হবার খবর পেয়ে প্রতিবাদ জানাতে এসে একই স্কুলের ৯ম শ্রেনীর অপর এক ছাত্র একই ট্রাকের নিচে চাপা গড়ে মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করছে।
কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা সদরে বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্র ও এলাকাবাসী জানায় উপজেলা সদরের দক্ষিণ বাজারে মেসার্স তালুকদার এন্টারপ্রাইজের একটি বালু ভর্তি ট্রাক যার নাম্বার- ঢাকা মেট্রো-ট-২২-২৯০০ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় কুমিল্লা-মীরপুর সড়কের ভিশন হাসপাতালের পূর্বদিকে তাদের দোকানের সামনে রাস্তার পাশে অবস্থান করছিল। এময় ট্রাকের হেলপার রাস্তার উপরেই বিশাল এ ট্রাকটিকে গুড়িয়ে উল্টোদিকে আনার চেষ্টা করার সময় পেছনে ভালভাবে না তাকানোর কারনে সাইকেলসহ একটি ছেলে ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে।
সাহেবাবাদ লতিফা ইসমাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র নগরপাড় গ্রামের জয়দল হোসেনের ছেলে মোঃ হৃদয় (১৪) ট্রাকের চাপায় তার শরীরের নিচের অংশের বাম দিকের হাড় ভেঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়ে মারাত্বকভাবে আহত হয়। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা পিজি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এলাকাবাসী ট্রাকটি আটক করলেও ট্রাকের চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে থানার এসআই যুযুৎসু চাকমা ও সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ট্রাকটি আটক করে। হৃদয়ের দূর্ঘটনার খবর পেয়ে লতিফা ইসমাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে শত শত শিক্ষার্থী দূর্ঘটনার উপযুক্ত বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিস ও থানায় উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ করে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জহিরুল হক ও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএএম শাহজাহান কবির অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে কঠিন বিচার করা হবে বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস করলে শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়।
এসময় বেশ কিছু শিক্ষার্থী থানার সামনে অবস্থান করছিল। আটককৃত বালু ভর্তি ট্রাকটি থানায় প্রবেশ করার মহুর্তে ব্রীজের উপরে উঠার সময় ব্রীজের উত্তর পাশের এপ্রুসিং দেবে যেয়ে গর্ত হয়ে ব্রীজের রেলিংয়ের সাথে হেলে পড়ে। এসময় একই স্কুলের ৯ম শ্রেনীর ছাত্র সাহেবাবাদ পূর্বপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ ইসরাফিল(১৫) ট্রাক এবং ব্রীজের রেলিংয়ের মাঝখানে চাপা পড়ে।
তাৎক্ষণিক থানার ওসি শাহজাহান কবির জীবনের ঝুকি নিয়ে প্রায় ৪০ মিনিট ব্রীজের রেলিংয়ে ঝুলে থেকে এলাকাবাসী ও পুলিশবাহিনীর সহযোগীতায় ব্রীজের রেলিং ভেঙ্গে ছাত্রটিকে উদ্ধার করে প্রথমে ব্রাহ্মণপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের ও পরে মাইক্রো ভাড়া করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
ইসরাফিলের ডান পায়ের উপরের অংশ ভেঙ্গে গেলে এবং শরীরের নিচের অংশ থেতলিয়ে যাবার কারনে সে মারাত্বভাবে আহত হয়।
থানার ওসি ইসরাফিলের পরিবারের সদস্যদের হাতে তাৎক্ষণিক নগদ ৫ হাজার টাকা তুলে দেন। স্কুলের শিক্ষার্থীদের শান্তনা দিতে ইউএনও, ওসি, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহমিনা হক পপি, এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা সারোয়ার খান স্কুলের বিভিন্ন ক্লাসে যেয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
এসময় ইউএনও আহত শিক্ষার্থীদের সরকারী অনুদান দেবার আশ^াস প্রদান করেন। থানায় ট্রাকটি আটক আছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানার মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল।
( জাগো কুমিল্লা.কম)
কুমিল্লা নগরীর মফিজাবাদ কলোনীতে র্যাবের মাদক বিরোধী অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার হয়েছে। এসময় ১৫ জনকে আটক করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় এ অভিযান চালানো হয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব- ১১ এর ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি -২ কুমিল্লার অধিনায়ক মেজর মো. আতাউর রহমান নেতৃত্বে র্যাবের একটি দল নগরীর জেলা প্রশাসক কার্যালয় সংলগ্ন মফিজাবাদ কলোনীতে অভিযান চালায়। এসময় দলটি কলোনির বিভিন্ন ঘর থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজা, ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেন্সিডিল বোতল, বিয়ার ও মদ উদ্ধার করে। র্যাব এসময় মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী ১৫ জনকে আটক করে।
কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মো. আতাউর রহমান বলেন, আটকৃতদের যাচাই-বাচাই করে ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং রেগুলার মামালার মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
( মো: শাহীন আলম, চৌদ্দগ্রাম)
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় সুমি আক্তার নামের এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত সুমি উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের ধনিজকরা গ্রামের সামছু মিয়া মিস্ত্রীর মেয়ে ও ইউসুফ আলী মিস্ত্রীর স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের জননী। বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লার একটি হসপিটালে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সুমি আক্তার(২৮) জ্বরের কারনে স্থানীয় ধনিজকরা বাজারের কাকলী মেডিকেল হলের ডাক্তার বিশ্বজিৎ আচার্য্যরে চিকিৎসা নিয়েছে। সম্প্রতি বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরও সুমির শারিরীক অবস্থার উন্নতি হয়নি।
দুইদিন আগে আবারও ডাঃ বিশ্বজিৎ আচার্য্যকে দেখালে তিনি বেশি পাওয়ারের ইনজেকশন দেয়ার কারনে সুমির অবস্থার অবনতি হয়। বুধবার রাতে পরিবারের লোকজন সুমিকে কুমিল্লায় টাওয়ার হসপিটালে নিয়ে ডাঃ মিজানুর রহমানের স্মরনাপন্ন হয়।
পরে তিনি আগের কাগজপত্র দেখে বলেন, প্রয়োগকৃত ইনজেকশন ও হাই ইন্টিবায়োটিক ওষুধ সুমির শরীরের জন্য ক্ষতি হয়েছে। পরে বৃহস্পতিবার সকালে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমিকে মৃত ঘোষণা করেন। দুপুরে নামাজে জানাযা শেষে তাকে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়। ঘটনার পর থেকে ডাঃ বিশ্বজিৎ স্থানীয় মাতব্বদের মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংশার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
অপরদিকে আনুমানিক চার বছর আগে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় পাশ্ববর্তী কৃষ্ণপুর গ্রামের সারু মিয়া মারা যায় বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।
নিহত সুমির পিতা সামছু মিস্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডাঃ মিজানুর রহমান বলেছেন-পূর্বের ইনজেকশন ও ওষুধের রিয়েকশন হয়ে রোগী মারা গেছে।
এখন ডাঃ বিশ্বজিৎ আচার্য্যকে তার কাছে নিয়ে গেলে কথাটি অস্বীকারও করতে পারেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডাক্তার বিশ্বজিৎ আচার্য্য বলেন, সুমি আক্তার কুমিল্লা টাওয়ারে যাওয়ার আগে আমার কাছে চিকিৎসা নিয়েছিল। কিন্তু অযথা আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে মুন্সিরহাট এলাকায় একটি পোল্ট্রি ফার্মে বসে সুমির পরিবারকে ম্যানেজের চেষ্টার কথা তিনি প্রথমে স্বীকার করলেও পরে অস্বীকার করেন।
স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করে বলেন, কাকলী মেডিকেল হলের মালিক আবুল কালাম ধনিজকরা বাজারের তাজু মিয়ার দোকানে ওয়ার্কশপের কাজ করতো। পরবর্তীতে তার মামা ডাঃ এয়াকুবের দোকানে চাকরি করে। সেখান থেকে অসদুপায় অবলম্বন করে পালিয়ে যায়। কিছুদিন পর সে ওই বাজারে কাকলী মেডিকেল হল খুলে ডাঃ বিশ্বজিৎ আচার্য্যকে বসায়। ( ছবি ফাইল ফটো)
Leave a Reply