( জাগো কুমিল্লা.কম)
বছর ঘুরে আবারো ফিরে এলো খুশির ঈদ। শৈশব কৈশোরের ঈদ উদযাপন করার আনন্দ প্রতিটা মানুষের কাছে একেবারে অতুলনীয় ছিল। কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা: মো: মুজিবুর রহমান এর শৈশবের ঈদ উদযাপনের স্মৃতি রোমন্থন নিয়ে লিখেছেন মাহফুজ নান্টু:
আমাদের শৈশব কৈশোরে ঈদের আনন্দ বেশ মজার ছিল। আমার বাবা শিক্ষক ছিলেন। একান্নবর্তী পরিবারের সন্তান আমি। গ্রামে বড় হয়েছি। তাই গ্রামের মাটি ও মানুষের সাথে আমার একটা আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। এখন ঈদ এলে আমার শৈশবে পার হওয়া ঈদের কথা মনে পড়ে যায়। নিজের অজান্তেই চোখে পানি জমে যায়। কত মধুর ছিলো সে সময়। কত স্মৃতি-কত কীর্তি কত না আনন্দের ছিলো।
আমার কিংবা আমার সমসাময়িক যারা আছেন তারা জানেন আমাদের শৈশব কৈশোরের ঈদ আনন্দে প্রাচুর্যতা ছিলো না বটে আনন্দ ছিলো ভরপুর। মনে পড়ে এখনো সে দিনগুলোর কথা। যখন ঈদ আসলেই আমাদের মুখগুলো রঙ্গিন হয়ে উঠতো আনন্দে। শিক্ষক বাবার সংসারে বছরে ঈদ অসলেই নতুন জামা পেতাম। তা ঈদুল ফিতরেই এবং ওই নতুন জামা নিয়ে আমার সে কি উত্তেজনা কাজ করতো বলে বুঝাতে পারবো না। ঈদে নতুন যখন হাতে পেতাম খুব সর্তকতার সাথে লুকিয়ে রাখতাম। কারণ কেউ দেখে ফেললে পুরোনো হয়ে যাবে। ঈদের দিন সকালে সে জামা পরে ঈদগাহে যাওয়া ছিলো সবচেয়ে আনন্দের ক্ষণ।
ঈদের স্মৃতি রোমন্থন করলে ঈদের চাঁদ নিয়ে আমার আরো একটি কথা মনে পড়ে। এখনকার মত তখন এত প্রচার মাধ্যম-গণমাধ্যম ছিলো। যার ফলে চাঁদ দেখা না দেখা নিয়ে বিভিন্নজনের মতবিরোধ ছিলো স্পষ্ট। আমরা ঈদের চাঁদ দেখার জন্য বাড়ির পাশে স্কুলের ছাদে যেতাম। পশ্চিম আকাশে তাকিয়ে থাকতাম। কেউ বলতো চাঁদ দেখেছি আবার কেউ বলতো না এখনো চাঁদ দেখি নাই। আমাদের চোখ জোড়া স্থির হয়ে পশ্চিম খুঁজতো ঈদের এক ফালি বাকা চাঁদ। একবার আমাদের বাড়িতে দু ভাগে ঈদ উদযাপন করা হয়েছিলো। একটি পরিবার ঈদের চাঁদ দেখেছে দাবি করে একদিন আগে ঈদ উদযাপন করেছিলো, ঠিক অন্য পরিবারটি ঈদের চাঁদ দেখেনি বলে পরদিনও রোজা রেখেছিলো। কই বাড়িতে দুই রকম আয়োজন দেখতাম।
ঈদের সালামী নিয়ে যদি বলি আমাদের সময়ে ঈদি বা সালামীর এমন কোন রীতি ছিলো না। আমরা ঈদের আগে পয়সা জমানো শুরু করতাম। ওই জমানো পয়সা দিয়ে ঈদেও দিন বন্ধুদের সাথে ঘুরে বেড়াতাম। কত মজার ছিলো। জমানো পয়সায় আমরা কত কিছু কিনে খেতাম। আহ! কত মজার ছিলো শৈশবের দিনগুলো। এখন মনে পড়লে ভাবি আসইে স্মৃতি শ্বাশত সুখের।
Leave a Reply