নিজস্ব প্রতিবেদক:
মুক্তিযোদ্ধাদের সংবধর্না অনুষ্ঠানে মঞ্চে বসা এমপিকে রাজাকারের সন্তান ও ভাতিজা বলে বক্তব্য প্রধান করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান এন এম মইনুল ইসলাম।
এই সময় প্রধান অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা-৮ আসনের সংসদ সদস্য নাছিমুল আলম চৌধুরী।
শনিবার ( ২৬ মার্চ) বরুড়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবধর্না অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এসময় দুই গ্রুপের নেতা কর্মীদের মাঝে উত্তেজনা শুরু হয়।
এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে কুমিল্লা জুড়ে আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হয়।
ভাইরাল হওয়া বক্তব্যে বরুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান এন এম মইনুল ইসলাম বলেন, বরুড়ার মাটিতে যার নেতৃত্বে রাজাকার-আলবদর-আলশামস বাহিনী গঠন করা হয়েছিল, তিনি হলেন আদ্রা ইউনিয়নের বিতর্কিত কুট্টু মিয়া। কুট্টু মিয়ার ভাই সিএসপি অফিসার শামসুল আলম মিয়া, যার নাগরিকত্ব দেশবিরোধী অবস্থানের কারণে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু বাতিল করেন।
অথচ যাকে আজ প্রধান অতিথি করা হয়েছে, তিনি আর কেউ নন, সেই কুট্টু মিয়ার ছেলে শামসুল আলম মিয়ার ভাতিজা নাছিমুল আলম চৌধুরী। যে স্বাধীনতাবিরোধীরা মা-বোনের ইজ্জত লুটেছে, ভাইদের পাখির মতো গুলি করে মেরেছে, শহীদদের রক্তে রঞ্জিত যাদের হাত, সেই রাজাকার পুত্রের হাতে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হলে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমি এটা কিভাবে মেনে নেব?” বিষয়টি অবশ্যই সত্যি। তার চাচার নাগরিকত্ব বঙ্গবন্ধু বাতিলই করে দিয়েছেন। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন, সে কারণে এটি আমাদের নলেজে আছে। মুক্তিযোদ্ধা ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বইয়ের ৩৫ নম্বর পৃষ্ঠায় এর প্রমাণ আছে। ‘
এ ঘটনার সাথে সাথে বরুড়া উপজেলা পরিষদের চত্বরে শোরগোল বেঁধে যায়। হলরুমের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা উপজেলা চেয়ারম্যান মইনুলের কর্মী সমর্থকেরা চিৎকার করে বক্তব্যকে সমর্থন জানান। অপরদিকে, এমপি নজরুলের সমর্থকেরা এ বক্তব্যের বিরোধিতা করে মিছিল দিতে গিয়ে দু গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। তাৎক্ষণিক ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য নাছিমুল বলেন, আমার আপন কোনো চাচা নেই। একাত্তরে সিএসপি অফিসার ছিলেন আমার বাড়ির সামছুল আলম মিয়া। তাকে আমার সাথে চাচা-ভাতিজা সম্পর্ক উল্লেখ করে অপপ্রচার চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের বক্তব্যের পর আমি এর ব্যাখ্যা দিয়েছি, কিন্তু ওই অংশটি ফেইসবুকে ভাইরাল হয়নি। তিনি রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেওপ্রতিপন্ন করার জন্য এসব অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে বরুড়া পৌর মেয়র বকতার হোসেন বখতিয়ার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর রাশেদুজ্জামান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন লিংকন এবং উপজেলা মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply