( জাগো কুমিল্লা.কম)
সংগীতের রাজপুত্র বলে খ্যাত আসিফ আকবরের মুক্তির দাবীতে কুমিল্লা বিভিন্ন স্থানে মানবন্ধন করেছে আসিফ ভক্তরা। সেই সাথে সোসাল মিডিয়াতেওক্ষোভ প্রকাশ ও তীব্র প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সবার দাবী একটাই আসিফ আকবরের নি:শর্ত মুক্তি চাই। এদিকে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধনের আসিফ ভক্তরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বাংলাগানের যুবরাজ আসিফকে মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ জুন) নগরীর কুমিল্লা টাউনহলের সামনে কুমিল্লার সাংস্কৃতিক সংগঠন, আসিফ আকবরের ভক্তমহল এবং শুভাকাঙ্খীদের উদ্যোগে মানব বন্ধনের আয়োজন করা হয়।মানবন্ধনের বক্তরা বলেন, আসিফ শুধু কুমিল্লার নয় পুরো দশের গর্ব। আসিফের বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে তা কতটুকু গ্রহণযোগ্য তা আমাদের জানার বিষয় নয়। আমরা চাই আসিফের নি:শর্ত মুক্তি।
কুমিল্লার সুশীল সমাজ মনে করেন দেশ বরণ্য এমন এক শিল্পিকে এভাবে হেনস্থা না করেও বিষয়টি সমাধান করা যেত। কারণ আসিফ আমাদের সংগীত জগতকে অনেক দিয়েছে। এফ এন্ড এফ ফিল্মস প্রোডাকশন ও একতায় শক্তিসহ বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধনে অংশ নেন।
জিলা স্কুলের সাকেব ছাত্র তানভীর দিপু তার ফেইসবুক ফেইজে লিখেন আসিফ কুমিল্লার জিলা স্কুলের ছাত্র। আমার স্কুলের বড় ভাই। আমি আসিফের মুক্তি চাই। সেলিম মুন্সি নামে আসিফের এক বন্ধু লিখেন বন্ধু আসিফের নি:শর্ত মুক্তি চাই।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে কুমিল্লার মহিউদ্দিন নামে আসিফের এক ভক্ত লিখেন আসিফ আমাদের গর্ব। আসিফের নি:শর্ত মুক্তি চাই।
কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও ছড়াকার জহিরুল হক দুলাল জানান, আসিফ আমাদের আবেগের জায়গা। আসিফ শুধু একজন বড় শিল্পিই না,সে আমার কুমিল্লার আমার সোনার বাংলার একজন প্রতিনিধি। তার মতো কজন শিলিপই দেশের প্রতিনিধিত্ব করে? আমি বিশ্বাস করিনা তবুও আসিফ যদি কোন ভুল করে থাকে সেটা যেন সংশ্লিষ্টরা আলোচনার মাধ্যমে শেষ করে নেয়। আসিফ যেন কোন ভাবেই হেনস্থার শিকার না হয় । আমি সংগীত শিল্পি আসিফের নি:শর্ত মুক্তি চাই।
অনলাইন ডেস্ক:
সংগীতশিল্পী শফিক তুহিনের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন বাংলা গানের যুবরাজ আসিফ আকবর। তার এ গ্রেপ্তারকে বাংলা গানের ভবিষ্যতের জন্য সুফল বয়ে আনবে না বলে মত দিয়েছেন অনেক শিল্পী। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর বিরোধীতা করে নিজস্ব মতামত জানিয়েছেন। সেই সাথে এর আশু সমাধানও চেয়েছেন।
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আঁখি আলমগীর লিখেছেন ‘প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা, ঝগড়া, মারামারি… এটাই কি সমাধান? কী হচ্ছে এসব? কোথায় যাচ্ছি আমরা?’
সংগীতশিল্পী পারভেজ ফেসবুকে লিখেছেন ‘আমাদের সংগীত জগতে চলমান বিবাদ নিয়ে এতদিন কিচ্ছু বলিনি, নীরবে সয়ে গেছি। আজ মুখ খুলতে বাধ্য হলাম। অনেক দিন ধরেই দুঃখভারাক্রান্ত মনে শ্রদ্ধেয় তিন শিল্পী আর তাদের অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি দোষারোপ সয়ে আসছিলাম। আমরা সবাই এতটা আগ্রাসী কেন? গত রাতে আসিফ ভাই গ্রেপ্তার হলেন! কারণটাও জানতে পারলাম। মনটা ভেঙে গেল। আমরা নাকি শিল্পী! তা হলে আমাদের সেই শৈল্পিক মনটা কি স্বার্থান্বেষণ আর অর্থ-বিত্তের লালসায় ঢাকা পড়ে গেল? কেন, কেন, কেন! আমি সব সময়ই বিশ্বাস করি, কোনো দ্বন্দ্ব-বিবাদই মীমাংসার ঊর্ধ্বে নয়। বিশ্বযুদ্ধের মতো দ্বন্দ্বের অবসান হতে পারে আর আপনাদের দ্বিমতের অবসান নেতিবাচকভাবেই হতে হবে, এমন তো হতে পারে না। তিনজন মেধাবী, গুণী, দেশবরেণ্য সংগীত ব্যক্তিত্ব এভাবে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়াতে আমাদের এই ক্ষয়িষ্ণু, ধুঁকতে থাকা সংগীতাঙ্গনের কতটা ক্ষতি হচ্ছে সেটা কি আমরা বুঝতে পারছি না? শ্রদ্ধেয় আসিফ ভাই, আমার সংগীত জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ে অভিভাবক হয়ে আমাকে আগলে রেখেছিলেন। শফিক তুহিন ভাই, প্রীতম ভাই, আমার অত্যন্ত কাছের দুজন বড় ভাই, আমার শুভাকাঙ্খী। আপনারা সবাই কি পারতেন না একটা ইতিবাচক সমাধানে পৌঁছে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে? এত কি কঠিন ছিল কাজটা? আমরা ছোটরা কী শিখলাম, কী শিখব তা হলে?’
সংগীতশিল্পী কোনাল লিখেছেন ‘শুধু মনে হচ্ছে, আজকে আমি বা আমরা কেউ এমন পরিস্থিতিতে পরলে সবার আগে আসিফ ভাই এগিয়ে আসতেন, আর বলতেন, “ঘাবড়াবা না একদম… আমি আছি, দেখছি কী করণীয়. ইনশাআল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে!” এমন কথা তিনি অনেক বিপদগ্রস্ত মানুষকে বলেছেন, এবং তিনি তার সাধ্যমতো করেছেন! ঠিক বেঠিক জানি না… আমি বিচারক নই! কিন্তু ভাই ভাইয়ের মাংস খাওয়া-খাওয়ি মোটেও ভালো লাগছে না! সংগীত পরিবারটা কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে! গায়ক আসিফ না, মানুষ আসিফের কথা বলছি, যিনি আমার চোখে দেখা অন্যতম হেল্পফুল পারসন। একজন লিডার, একজন পরোপকারী। আমি মানি, একজন শিল্পীর যেমন শালীন, নম্র, শুভাশিস হলে শোভা পায়, তেমনি ক্ষমাশীল হওয়াটাও শিল্পীর অন্যতম চরিত্র। ভুল তো মানুষেরই হয়। আমরা কেউই ভুলের ঊর্ধে নই! আসিফ ভাই আপনি ফিরে আসুন, এসে সব ঠিক করে দিন, ভালোবাসা থাকুক অবিরাম।
‘ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক, আসিফ আকবর ভাই ফিরে আসুক আমাদের মাঝে শিল্পী সমাজের সিনিয়রদের জরুরি হস্তক্ষেপ চাই’ এ কথাগুলো বলেছেন গায়ক সংগীত পরিচালক শান।
‘সখি ভালোবাসা কারে কয়’খ্যাত গায়ক মিলন লিখেছেন ‘ভাইয়ের মতো একজন বাংলা গানের যুবরাজ গ্রেপ্তার হওয়া মানে বাংলা গান ও বাংলার সব শিল্পীর জন্য অপমানজনক। দ্রুত এর সমাধান কামনা করছি।
সংগীতশিল্পী মুহিন বলেছেন, ‘সংগীত জগতের নক্ষত্র আসিফ আকবর ভাই। যারা বোঝেন নাই তাদের উদ্দেশ্য কী? জাতি তা জানতে চায়। আমিও ব্যতিক্রম নই। খুব শিগগির তার খোলস উন্মোচন হবে নিশ্চিত। বাংলাদেশের গান, বাংলাদেশের প্রাণ বলছি তাদের কে যে উন্মাদনা কমিয়ে দেশের গানের ভবিষ্যতের কতটুকু অপমান করলেন একটু ভেবে দেখবেন। আছি সব সময় তারুণ্যের সঙ্গে, জয় হবে নিশ্চয়… এখন শুধু অপেক্ষা।’
গায়ক সংগীত পরিচালক অয়ন চাকলাদার আসিফের গ্রেপ্তার নিয়ে বলেন, ‘টেবিলে বসেই যে ভুল বোঝাবোঝির সমাধান সম্ভব; সেটাকে মামলা, গ্রেপ্তার, হয়রানি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সত্যিই দুঃখজনক। আসিফ আকবর ভাইয়ের মতো একজন সিনিয়র জনপ্রিয় শিল্পীকে এভাবে মধ্যরাতে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া এটা অবশ্যই মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যতের জন্য কোনো সুখকর ঘটনা কিংবা উদাহরণ নয়। রোজার সময়ে ঈদের কয়েক দিন আগে এমন কিছু দেখব বলে আশা করিনি। আসিফ ভাইকে মুক্তি দিয়ে দ্রুত নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান করুন শিল্পী-সমাজ। আমি ছোটখাটো আর্টিস্ট, মিউজিশিয়ান ইন্ডাস্ট্রির। এর বেশি আমার আর কিছু চাওয়ার নেই।’
সংগীতশিল্পী রাফাত বলেন, ‘আসিফ আকবরকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানাই।’
সংগীতশিল্পী শশী লিখেছেন, ‘শ্রদ্ধেয় আসিফ আকবর, আপনি বীরের মতন আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন ইনশাআল্লাহ। ভালোবাসা অবিরাম।’
সংগীতশিল্পী বিউটি ভীষণ মন খারাপ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘সকালে খবরটা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গেল। ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে আসিফ আকবর ভাই ফিরে আসুক আমাদের মাঝে। এটাই আশা করছি।’
খন্দকার বাপ্পি লিখেছেন, ‘মামলা, হামলা এগুলো কোনো সমাধান নয়, এমনিতে গানের জগতের অবস্থা বড়ই নাজুক। এটাকে নতুন করে আরও প্রশ্নবিদ্ধ না করে সিনিয়রদের উচিত এক জায়গায় বসে সমাধান করা।আসিফ ভাই সবার মাঝে দ্রুত ফিরে আসবে এই কামনা করছি।’
নিশিতা বড়ুয়া লিখেছেন, ‘আসিফ ভাই-শফিক তুহিন ভাই, প্লিজ ভাই, আসেন রোজার মাসে আর নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি না করে এক হয়ে যাই। ক্ষমা মহত্ত্বের লক্ষণ, একজন ক্ষমা করে এগিয়ে আসেন পাথর গলে যাবে প্লিজ।’
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার গভীর রাতে আসিফের মগবাজারের নিজস্ব অফিস থেকে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি দল আসিফকে গ্রেপ্তার করে তাকে নিয়ে যায় সিআইডি কার্যালয়ে। শফিক তুহিন তার মামলায় অভিযোগ করেছেন, ১ জুন রাত নয়টার দিকে একটি চ্যানেলের ‘সার্চ লাইট’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসিফ অনুমতি ছাড়া তার সংগীতকর্মসহ অন্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীদের ৬১৭টি গান সবার অজান্তে বিক্রি করেছেন। পরে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, আসিফ তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আর্ব এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গানগুলো ডিজিটালে রূপান্তর করে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন। ঘটনা জানার পর শফিক তুহিন ২ জুন রাতে অনুমোদন ছাড়া গান বিক্রির বিষয়টি উল্লেখ করে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট দেন। পরের দিন রাত ১০টার দিকে আসিফ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে এসে তাকে গালাগালি করেন।
লিভার ইনফেকশন হয়ে মা যখন হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় কাতরাচ্ছিল ডাক্তার প্রফেসর আব্দুর রব একটা কথাই বলেছিলেন, যত দ্রুত সম্ভব রক্তদাতা জোগাড় করে রক্ত দেয়া যাবে তত দ্রুত রোগী ইম্প্রুভ করবে। রক্তের গ্রূপ বি-পজেটিভ, পরিমান পাঁচ ব্যাগ। আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব,পরিচিত সবাইকে ফোন দিতে থাকলাম। এক ব্যাগ ম্যানেজ হলে চার ব্যাগ বাকি থাকে, কেউ কেউ বলে কুমিল্লায় না ঢাকায় হলে ভালো হতো, কেউ কেউ বলে আজকে না কালকে।
অসহায়, নিরুপায় হয়ে ফেবুতে পোষ্ট দিলাম গর্ভধারিনী মা’র জন্যে রক্ত চেয়ে। শতশত শেয়ার, কমেন্টস কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছিলোনা। ঘন্টা খানেক পর আসিফ ভাইয়ের টেক্সট ” টেনশন করবেন না ভাইজান, বি-পজেটিভ পাঁচ ব্যাগ ম্যানেজ হয়েছে। বাসার নাম্বার+হাসপাতালের ঠিকানা দেন রক্তদাতারা সময়মতো পৌঁছে যাবে। এরপর রক্ত দেয়া থেকে শুরু করে মা যতদিন হাসপাতাল ছিল ততদিন রুটিন করে মায়ের খবর নিয়েছেন। আসিফ ভাইয়ের খাতিরে রক্ত দাতারা এক গ্লাস জুস্ কিংবা পানি পর্যন্ত পান করেনি আমার বোন-ভাবী’র কাছ থেকে।
এরপর যতবারই কথা হয়েছে আমাদের “রক্তের ভাই” বলে সংবোধন করি আমি। উনি উনার ট্রেড মার্ক হাসি দিয়ে আরো বেশি আপন করে নেন। মহান প্রভুর অশেষ কৃপায় মা এখন অনেকটা সুস্থ্য। মায়ের প্রতি ওয়াক্ত নামাজের মোনাজাতে থাকে আসিফ আকবর ও নাম না জানা রক্তদাতারা।
আমি কনফিডেন্টলি বলছি,যে আসিফ মুমুর্ষ মায়ের রক্তদাতা সে আসিফ অবশ্যই ন্যায় বিচার পাবেন ইনশাআল্লাহ।মায়ের দোয়া বিফলে যায়না।
………মনির খান নামে এক ব্যক্তির ফেসবুক আইডিতের দেয়া পোস্ট থেকে নেয়া
Leave a Reply