জেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা
কুমিল্লায় ইউটিউব সেলিব্রেটি করার প্রলোভনে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আইনজীবী জাহিদ চৌধুরী(৪১) কে আটক করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার ( ৪ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর উপ-পরিচালক কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
তিনি জানান, দুই সন্তান জিম্মি করে রেখেছে এমন একটি অভিযোগ আসে আমাদের কাছে। তদন্তে জানা যায় ভিকটিমের মায়ের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল আসামীর। জাহিদ চৌধুরী প্রায়ই পড়াশোনা ও অন্যান্য ব্যাপারে সহযোগীতার নাম করে বাড়িতে নিয়মিত যাতায়ত শুরু করে। পরিবারের সাথে তার আরও ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে উঠে। অভিযোগকারীর ২ সন্তানকে ভাগ্নি ও মামা বলে সম্মোধন করতো।
কুমিল্লা ফিল্মস নামে একটি ইউটিউবে চ্যানেলে মিউজিক ভিডিও ও শর্টফিল্মে অভিনয়ের সুযোগ দিয়ে সেলিব্রেটি করার প্রলোভনে স্কুল ছাত্রীর সাথে সু সম্পর্ক তৈরি করে আসামী। এবং সে প্রায়শই তাদের মায়ের অগচোরে আসামী স্কুল ছাত্রী তার ভাইকে বাহিরে ঘুরতে নিয়ে যেত। বাহিরে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের শর্টফ্লিম এবং ভিডিও তৈরী করে তার ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করত।
সর্বশেষ গত ২৫ নভেম্বর আসামি এ্যাডভোকেট জাহিদ চৌধুরী(৪১) তাদের পরিবারকে না জানিয়ে তাদের তার স্কুল থেকে নিয়ে জেলার ধর্মসাগর পাড় এলাকায় ঘুরতে যায়। ঘুরাঘুরির একপর্যায়ে ধর্মসাগর পাড় এলাকা হতে তার গোপন বাসা কুমিল্লা নগরীর মধ্যম আশ্রাফপুর এলাকার ৭ তলা ভবনে নিয়ে যায়।
সেখানে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। এবং ধর্ষণের ঘটনা কারো কাছে না বলার জন্য ভয় দেখায়। কিন্তু সে তার কাছে বিষয়গুলি জানালে তার মা আসামির সাথে যোগাযোগ করতে নিষেধ করেন। এবং তিনি তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলে যান।
পরবর্তীতে ১৭ ডিসেম্বর দুপুরে তার ছেলে মেয়েরা তাদের বাসা থেকে এ্যাডভোকেট জাহিদের সাথে দেখা করতে যায়। সেখানে গেলে এ্যাডভোকেট জাহিদ তাদেরকে বাসায় ফেরত না যাওয়ার অনুরোধ করে এবং বাসায় গেলে তাদের স্বপ্ন কোনদিন বাস্তবায়ন হবেনা মর্মে তাদেরকে জোরপূর্বক তার গোপন বাসায় রেখে দেয়।
যেহেতু ভিকটিমের সাথে তার ভাই ও ছিল সেহেতু এ্যাডভোকেট জাহিদ প্রাথমিকভাবে ভিকটিমের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে ব্যর্থ হয়। যার কারণে সে হোসনেয়ারার(৩২) নামের আরেকজন মহিলাকে চাকুরী দেওয়ার নাম করে তার গোপন বাসায় নিয়ে আসে এবং তার ভাই ও হোসনেয়ারা(৩২)কে একটি রুমে আবদ্ধ রেখে তাদেরকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করে এবং তাদের শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে। যখন তার ভাই বাধা দিতে আসে এ্যাডভোকেট জাহিদ হোসনেয়ারার সাথে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার ভাই এর মুখ বন্ধ রাখে।
উল্লেখ্য যে, আইনজীবী জাহিদ একজন বিবাহিত ব্যক্তি এবং তার দুইটি সন্তান রয়েছে। সে তার পরিবার নিয়ে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার দৌলতপুর রেলগেট এলাকায় বসবাস করে।
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেফতারকৃত আসামী এর আগেও এমন কাজে লিপ্ত ছিল।
র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর উপ-পরিচালক কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন আরও জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ধর্ষণের মতো সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
Leave a Reply