নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গে মারা যাওয়া ৪৫০ তম লাশ দাফন করেছে সামাজিক সংগঠন বিবেক।
আর্তমানবতার সেবায়” এমন স্লােগানকে ধারণ করে গত পৌনে দুই বছর ধরে কুমিল্লা জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়াদের লাশ দাফনের কাজটি করে চলছে বিবেক।
বুধবার বেলা ১০ টায় কুমিল্লা সিএমএইচে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান এক ব্যক্তি। মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম আবদুল গফুর (৭৬)। কুমিল্লা নাঙ্গলকোট উপজেলার উল্লাখালী গ্রামের বাসিন্দা তিনি।
করোনা আক্রান্ত হয়ে বাবার মারা যাওয়ার বিষয়টি টিম বিবেককে জানায় আবদুল গফুরের ছেলে জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার ফয়েজ আহমেদ।খবর পেয়েই জানাযার সরঞ্জামাদীসহ পুরো টিম হাজির হন। পরে গোছল ও জানাযার নামাজ শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
বিবেকের প্রতিষ্ঠাতা ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, যখন করোনা শুরু হয়, তখন অনেকই করোনা আক্রান্ত জীবিত মানুষটির কাছে যেতো না। আর যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যেতো তাদের স্বজনরাও দূরে চলে যেতো। বাবা তার ছেলের কাছে যেতো না। মা আর সন্তানের দূরত্ব দেখেছি। কি নিষ্ঠুর সময় দেখেছি আমরা।
তখন বিবেকের তাড়নায় বিবেক নামে একটি সংগঠন করি। আমি ও আমাদের দলটি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা আক্রান্তদের দাফনের কাজটি করতাম। লাশ বহনের সময় স্বাভাবিক রাস্তা দিয়ে যেতে পারতাম না। সংক্রমণের ভয়ে স্থানীয়রা বাঁধা দিতো। তাই বাধ্য হয়ে ধানী জমি – খানাখন্দ ও ডোবা দিয়ে লাশ বহন করতাম। এভাবে ৯ জন হিন্দু একজন খৃষ্টান ও ৪৪০ জন মুসলমানের লাশ সমাহিত করেছি। আর্তমানবতার সেবায় আমাদের এই কাজটি অব্যহত থাকবে।
কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন বলেন, এখন করোনার প্রকোপ খুব কম। তবে যখন কুমিল্লা জেলায় পুরোপুরিভাবে করোনার প্রকোপ দেখা দেয় তখন ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কেউ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে স্বজনরাও দূরে চলে যেতো। ওই রকম ভয়াবহ মুহুর্তে বিবেক নামে এগিয়ে আসে একটি সংগঠন । তারা করোনা আক্রান্তদের লাশ দাফনের কাজ শুরু করে। আমি মনে করি বিবেকের এ কাজটি ছিলো যুগান্তকারী। বিবেকের জন্য শুভ কামনা থাকবে।
Leave a Reply