অনলাইন ডেস্ক:
গীতিকার-সুরকার শফিক তুহিনের করা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের মামলায় গ্রেফতার সংগীতশিল্পী আসিফ আকবরের রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সঙ্গে তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ সময় আদলাত প্রাঙ্গণে ভক্তদের ভীড় ছিল। তিনি হাসি মুখে ভক্তদের হাত নাড়ান এবং হাসি মুখে কারাগারের গেলেন বাংলা গানের যুবরাজ খ্যাত কুমিল্লার গর্বিত কৃতি সন্তান আসিফ আকবর।
বুধবার (০৬ জুন) দুপুরে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কেশব রায় চৌধুরী এ আদেশ দেন। এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আসিফকে আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ড চায়।
তবে শুনানি শেষে আদালত তা নাকচ করে দিয়েছেন। অন্যদিকে আসিফ আকবরের আইনজীবী আসাদুজ্জামান ও ফারুক মিয়া তার জামিনের আবেদন করেন।এ বিষয়েও আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে মঙ্গলবার (০৬ জুন) দিনগত রাতে রাজধানীর মগবাজারে আসিফ আকবরের স্টুডিও থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মোল্যা নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।
সোমবার (০৪ জুন) সন্ধ্যায় শফিক তুহিন আইসিটি আইনে আসিফের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। এতে আসিফ ছাড়াও আরও ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের পর থেকেই এই শিল্পীর অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী তার মুক্তির দাবি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পোস্ট করেছেন।
আসিফ আকবরের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ‘আসিফ’ থেকে জানানো হয়, ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় আসিফ আকবরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা তার আশু মুক্তি দাবি করছি।
জনপ্রিয় শিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক জুয়েল মোর্শেদ ফেসবুকে লিখেছেন, আসিফ আকবর-এর উপকার নেন নাই এমন কথা খোদ তার বিরুদ্ধে মামলাকারী পর্যন্ত বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন না। আমাদের অনেকেরই পায়ের তলার মাটিটা পর্যন্ত এই তথাকথিত মাতাল এর অবদান। আমাদেরকে ক্ষমা করুন আসিফ ভাই…।
সাংবাদিক রেজাউর রহমান রিজভী লিখেছেন, আসিফ আকবর যাদের জন্য অনেক করেছেন, তারাই আজ তার সবচেয়ে বড় ক্ষতি করলো। একজন শফিক তুহিনের গান না গাইলে আসিফের কিছু যায় আসে না। বরং আসিফের গানে শফিক তুহিন গংদের নাম হয়, খ্যাতি বাড়ে। তাই শিল্পীদের প্রতি অনুরোধ, কাছের মানুষ ও দূরের মানুষটিকে চিনতে শিখুন। যাদের সঙ্গে অহরহ খাতির করছেন, সেই মানুষটিই যখন ক্ষতির কারণ হয়, তখন আফসোস ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।
নাট্যনির্মাতা আফজাল হোসেন মুন্না লিখেছেন, আসিফ আকবর অন্যের হক মেরে খাইলে তার বিরুদ্ধে কেস তো হতেই পারে। তিনি গ্রেপ্তারও হতে পারেন। কিন্তু ৫৭ ধারা কেন? শিল্পী সমাজেই যদি ৫৭-এর চাষ করা হয় এর চাইতে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। অথচ শিল্পীদের অবস্থান এই ধরনের আইনের বিপরীতে হওয়া উচিত ছিল। দিস ইজ এলার্মিং, নট এ গুড সাইন এট অল!!
জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী রাফাত লিখেছেন, আসিফ আকবরকে গ্রেপ্তার-এর তীব্র নিন্দা জানাই।
( জাগো কুমিল্লা.কম)
নিজের বিরুদ্ধে করা মামলার অভিযোগের কথা শুনে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে হাসলেন কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। বিচারককে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘স্যার আগেই তার (সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিন) বিরুদ্ধে আমার মামলা করা উচিত ছিল। মামলা না করে আমি ভুল করলাম।’
বুধবার দুপুর ২টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম কেশব রায়ের আদালতে রিমান্ড শুনানির জন্য আসিফ আকবরকে নেয়া হয়। এ সময় আসিফের আইনজীবীরা তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানির এক পর্যায়ে বিচারককে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বিচারকে উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, ‘অনুমতি ছাড়াই সংগীতকর্মসহ অন্যান্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীদের ৬১৭টি গান সবার অজান্তে বিক্রি করেছি এ অভিযোগ আনা হয়েছে। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি এর লাভের এক টাকাও পাইনি। প্রয়োজনে আপনি আমার সমস্ত অ্যাকাউন্ট চেক করে দেখতে পারেন।’
বিচারক তার কথা শুনে বলেন, ‘আপনার বাসার সামনে আমাদের আড্ডার এলাকা। আমরাতো একই এলাকার। আমি আপনার সবকিছুই জানি। আপনি কেন গান ছেড়ে দিলেন!’
বিচারক আরো বলেন, মামলাটি করা হয়েছে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে। জামিন দিলে আইনের কিছু জটিলতা আছে। সবকিছু জানার পরও আমার কিছু করার নেই।
এরপর আসিফের আইনজীবী বলেন, ‘স্যার তিনি (আসিফ) আবারও গান শুরু করেছেন। সামনে ঈদ। তাকে তো সবাই চেনেন। জামিন দিলে তিনি পালাতক হবেন না। ভক্তরা তাকে নিয়ে ঈদ করতে চায়। আর মামলায় তথ্য-প্রযুক্তি আইনের যে ধারা দেয়া হয়েছে অভিযোগের সঙ্গে তার কোনো মিল নেই। এতে সর্বোচ্চ কপি রাইট আইনে মামলা হতে পারে।’
এরপর আদালত আসিফের জামিন ও রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালতে আসিফ আকবার বলেন, ‘মামলায় আমি ভীতু নই। আইনি গতিতে মামলা চালিয়ে যাবো। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। মামলায় আমি খালাস পাবো ইনশাআল্লাহ।’
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় তাকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সিআইডির উপ-পরিদর্শক প্রলয় রায় পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। অন্যদিকে আসিফ আকবরের পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে তার জামিন আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মামলার আসামি আসিফকে জামিন দিলে পলাতক হতে পারে। ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন এবং মূল হোতাকে খুঁজে বের করার জন্য আসামি আসিফকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন রয়েছে। স্বল্প সময়ে আসামিদের নাম ঠিকানা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। আসিফের সহযোগীদের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহের জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।
অনলাইন ডেস্ক:
বাংলাগানের যুবরাজ আসিফ আকবরকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তার স্ত্রী বেগম সালমা আসিফ বলেছেন, তার স্বামীকে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসিফ আকবর ষড়যন্ত্রের শিকার। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করতেই আসিফ আকবরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বেগম সালমা আসিফ আজ বুধবার সকালে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্র করে আসছিল। যার ফলশ্রুতিতে তার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আসিফ আকবর সব সময় সঙ্গীত জগতের শিল্পী, গীতিকার, সুরকার ও কলাকুশলীদের অধিকার আদায়ে লড়াই করে আসছেন। কিন্তু স্বার্থান্বেষী মহল তার এই আন্দোলনকে বন্ধ করার জন্য শফিক তুহিনকে দিয়ে মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করেন। আমি এই মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
অনলাইন ডেস্ক:
বাংলা গানের জনপ্রিয় তারকা আসিফ আকবর এবং শফিক তুহিন। কখনো তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কথা খুব একটা শোনা না গেলেও এখন তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। বেশ কিছুদিন ধরেই এই দুই কণ্ঠশিল্পীর মধ্যে চরম মনোমালিন্য চলছিল।
আর তার প্রমাণ পাওয়া গেল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের পাতায় দেয়া দু’জনের পোস্টগুলোতে। খবর বিবিসি বাংলা।
ফেসবুকের পোস্টগুলোতে দেখা যায়, এই দুই তারকা একজন আরেকজনের সমালোচনায় বেশ কিছুদিন ধরেই মুখর ছিলেন।
শেষ পর্যন্ত বিষয়টি মামলায় গড়িয়েছে এবং ওই মামলায় গায়ক আসিফ আকবর এখন কারাগারে।নিজের ফেসবুক পেজে শফিক তুহিন কিছু কাগজপত্র শেয়ার করে স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে গান বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ তোলেন।বিষয়টিতে সাংঘাতিক ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন আসিফ আকবর এবং স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় লাইভে আসেন ৪ঠা জুন।দীর্ঘ ওই ফেসবুক লাইভে প্রীতম আহমেদ এবং শফিক তুহিনের কড়া সমালোচনা করেন আসিফ আকবর।তাদের ব্যক্তিগত জীবনের নানা বিষয় নিয়েও কথা বলেন তিনি।এ নিয়ে আসিফ আকবর, শফিক তুহিন এবং প্রীতম আহমেদের দ্বন্দ্ব আরও প্রকাশ্যে চলে আসে।
সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন ‘চ্যানেল ২৪’ সার্চলাইট নামে ১ জুন রাতে ২০ মিনিটের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদন থেকে সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিন জানতে পারেন আসিফ আকবর অনুমতি ছাড়াই তার সংগীতকর্মসহ অন্যান্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীর ৬১৭টি গান সবার অজান্তে বিক্রি করেছেন।
এর প্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে করা একটি মামলায় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত দেড়টায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে।সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম জানান, তথ্যপ্রযুক্তি আইনে তেজগাঁও থানার সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিনের করা একটি মামলায় আসিফকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার মামলা নম্বর ১৪।
সোমবার সন্ধ্যায় শফিক তুহিনের করা এ মামলায় আসিফ আকবর ছাড়া আরও ৪-৫ জন অজ্ঞাত আসামি রয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।বুধবার তাকে আদালতে উপস্থাপন করে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন নজরুল ইসলাম।কিন্তু আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
Leave a Reply