( আকিবুল ইসলাম হারেছ, চান্দিনা)
বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান প্রবীণ নেতা, সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি, সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও কুমিল্লা-৭(চান্দিনা) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আলী আশরাফ এমপি।
শনিবার (৩১ জুলাই) বাদ আসর চতুর্থ ও শেষ জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদকে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার গল্লাই গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
বর্ষীয়াণ এই রাজনীতিবিদের জানাজায় অংশ নিতে এবং কফিনে শ্রদ্ধা জানাতে করোনার স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে সমবেত হয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার হাজার হাজার মানুষ।
এর আগে শুক্রবার রাত ৯টায় রাজধানীর গুলশান আজাদ মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শনিবার সকাল ১১ টায় কুমিল্লার চান্দিনা মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় ও বাদ জোহর দোল্লাই নোয়াবপুরে তৃতীয় ও সর্বশেষ জানাজা বাদ আছর নিজ গ্রামের গল্লাই ইসমাইল দাখিল মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় । এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদ সহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ।
গত ২ জুলাই পিত্তথলির পাথর অপসারণের জন্য রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন এই রাজনীতিবিদ। তার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ফুসফুসে ক্ষতসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা ছিল। এরপর ৯ জুলাই নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় তাকে দ্রুত আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।মৃত্যুকালে অধ্যাপক আলী আশরাফের বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি চার মেয়ে, এক ছেলের জনক।
চান্দিনার গল্লাই মুন্সিবাড়ির মরহুম মো. ইসমাইল হোসেন মুন্সির ছেলে অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ এমপি ১৯৬২ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগে যোগদান করে রাজনীতির অঙ্গনে পা রাখেন।
১৯৭০-এর পাকিস্তান সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে ‘মই’ প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। ওই নির্বাচনে জয় না পেলেও ‘মাছ’ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ১৯৭৩ সালের প্রথম বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ যতগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে তার প্রত্যেকটিতেই তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চমবারের মতো বিজয় লাভ করেন। ২০০০ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে প্রায় ৬০ বছরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের ইতি টানেন।
অধ্যাপক আলী আশরাফের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,স্পিকার ড. শিরিন শারমিন শোক জানিয়েছেন।
এছাড়াও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল,এলজিআরডি মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম,সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মজিবুল হক মজিব এমপি,কুমিল্লা সদর আসনের এমপি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার,কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা.প্রান গোপাল দত্ত সহ বিভিন্ন আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেন।
Leave a Reply