অনলাইন ডেস্ক:
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (কুমেক) বার্ন ইউনিটে এসিডে পোড়া যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন কিশোরী খাদিজা আক্তার মনি। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় বৃহস্পতিবার রাতে ১৩ বছরের ওই কিশোরীকে এসিড নিক্ষেপ করে বখাটেরা।
মনির বাবা ভূমিহীন বার্নিশ মিস্ত্রী মোসলেম মিয়ার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না মেয়েকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা থেকে ঢাকা নেয়ার। এ সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম। তিনি এ মেয়েটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন।ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বাগড়া গ্রামে গত বৃহস্পতিবার রাতে জানালা দিয়ে ছোড়া বোতল ভর্তি এসিডে খাদিজার শরীরের ৫০ভাগ পুড়ে গিয়েছে।তার পরিবারের সন্দেহ স্থানীয় আপন ও জাহিদ নামে দুই তরুণ তার মেয়ের শরীরে এসিড নিক্ষেপ করেছে।
আবার খাদিজার মা-বাবা জানান, হারুন নামে এক রংমিস্ত্রির সাথে খাদিজার বিয়ের কথা ঠিক হয়ে রয়েছে। একবছর পরে তাদের বিয়ে হওয়ার কথা। খাদিজার অন্য কোথাও বিয়ে হতে পারে ভেবে হারুন এ আশঙ্কা থেকে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
মেয়ের শরীরে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় বাবা মোসলেম মিয়া কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়া থানায় একটি মামলা করেছেন। ওই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে হারুন নামে একব্যক্তিকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়েছে।
ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, নির্যাতনের শিকার খাদিজার পরিবারের সন্দেহের তালিকায় আপন ও জাহিদ নামে দুই তরুণ রয়েছে। তবে আমরা মামলার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে হারুন নামে একব্যক্তিকে আটক করেছি। সন্দেহের তালিকায় থাকা ওই দুই তরুণকে গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
খাদিজার বাবা মোসলেম মিয়া জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার নয়নপুর গ্রামে। বাড়িতে সম্পত্তি না থাকায় তারা কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বাগড়া গ্রামের হোসেন মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকেন। বার্নিশের কাজ করে কোনোভাবে ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন। গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে খাদিজা জানালার পাশে বসে মোবাইল ফোনে গান শুনছিল। ঠিক ওই মুহূর্তে দুই থেকে তিন জন ব্যক্তি জানালা দিয়ে বোতলভর্তি এসিড তার মেয়ে খাদিজার শরীরে নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। তখন তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তিনি। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চিকিৎসকরা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় তাকে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে এখানকার চিকিৎসকরা বলছেন, মেয়েকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে। কিন্তু আমার আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মো. রাসেল খান বলেন, এসিডে ঝলসে গেছে মেয়েটির শরীরের প্রায় ৪৫-৫০ ভাগ। ৫০ ভাগ অতিক্রম করলেই আমরা কোনও পুড়ে যাওয়া রোগীকে এ হাসপাতালে রাখি না। কারণ আমাদের আইসিইউ’র চিকিৎসা সেবা নেই। শরীরের অতিরিক্ত স্থান এবং শ্বাসনালী পুড়ে যাওয়া রোগীদের জন্য আইসিইউ খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঠিক তখন ওই সেবা দিতে না পারলে পোড়া রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। সুত্র: সময় নিউজ
Leave a Reply