অনলাইন ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা এলাকায় শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় মুয়াজ্জিন বাবার কাছে বেড়াতে এসে একসাথে লা’শ হলেন বাবা-ছেলে। মুয়াজ্জিনের নাম দেলোয়ার হোসেন (৪৫)। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। তিনি মসজিদের মেসেই থাকতেন। তার ছেলে জুনায়েদও এই বিস্ফোরণে মারা গেছেন। ছেলে জুনায়েদ শুক্রবারে বাবার কাছে বেড়াতে এসেছিলেন। জুনায়েদ নারায়ণগঞ্জের একটি আলিয়া মাদ্রাসায় পড়তো।
জানা যায়, কাল রাতে একসাথে এশার নামাজ আদায় করছিল বাবা ছেলে। বিস্ফোরণের পর সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা ছিলো দেলোয়ার হোসেনের। শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে মারা যান তিনি। আর দুপুরে মারা গেছেন ছেলে জুনায়েদ (২৮)।
নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণ : মৃত্যু বেড়ে ২৪
নারায়ণগঞ্জ শহরের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় একটি মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসাধীন বাকি ১৩ জনের অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে জানা গেছে। এশার নামাজ চলার সময় গত শুক্রবার রাতে পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে এ বিস্ফোরণ ঘটে।
মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় আজ রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন, মসজিদের নিচে গ্যাসের লাইনে অসংখ্য লিকেজ থেকে গ্যাস বের হয়ে এই বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে মসজিদের ভেতর ছয়টি এসি দুমড়েমুচড়ে গেছে। ২৫টি সিলিং ফ্যানের পাখা বাঁকা হয়ে গেছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, বিস্ফোরণের সময় শতাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করছিলেন। আহতদের প্রথমে শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহতদের ঢাকায় পাঠানো হয়। এর মধ্যে ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে নেওয়া হয়।
আহতদের কেউই শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন সর্বাত্মক চেষ্টা করার জন্য।’
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘আমাদের যা যা সুযোগ-সুবিধা আছে, সব ব্যবহার করে আমরা চেষ্টা করছি; বাকিটা ওপরওয়ালার ইচ্ছা। সবাইকে বলব, আহতদের জন্য দোয়া করবেন।’
এদিকে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে দাফন সম্পন্ন করার জন্য ২০ হাজার টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার করে টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
Leave a Reply