অনলাইন ডেস্ক:
হতাশা ও কষ্ট থেকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছেড়ে বাড়িতে চলে গেছেন ‘বৃক্ষমানব’ নামে পরিচিত আবুল বাজানদার।
আবুল বাজানদার বলেছেন, ‘হাসপাতালের নার্সরা মুখে না বললেও আমার প্রতি তাদের মধ্যে একটা বিরক্তি এসে গেছে। আগে আমাকে দুইবেলা খাবার দিত। এখন আমাকে একবেলা খাবার দেয়। এ ছাড়া আমি কিছু বললে আমাকে পুলিশের ভয় দেখায়।’
বাজানদার বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেলে ডাক্তাররা বলেছেন আমার সমস্যাটা জেনেটিক। এটা সারবে না, সারাজীবন থাকবে। প্রথম দিকে যতটা যত্ন নিয়ে চিকিৎসা করা হয়েছে, পরের এক বছর সেটা করা হয়নি। এক রকম হতাশা এবং কষ্ট থেকেই আমি হাসপাতাল ছেড়ে চলে এসেছি।’বৃক্ষমানব বাজানদার মনে করেন সঠিক চিকিৎসা হলে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবেন।
এর আগে হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, কাউকে কিছু না জানিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন আবুল বাজানদার।
বিরল জিনঘটিত ‘এপিডার্মোডিপ্লেসিয়া ভেরুসিফর্মিস’ রোগে আক্রান্ত খুলনার পাইকগাছার আবুল বাজানদার। রোগটি ‘ট্রি-ম্যান’ (বৃক্ষমানব) সিনড্রম নামে পরিচিত।
হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এ রোগ হয়। ১০ বছর ধরে আবুল এই রোগে ভুগছেন। তার হাত ও পায়ের আঙুলগুলোতে গাছের শিকড়ের মতো গজায়। পরে ২০১৬ সালে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন তিনি। ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২৪টি অস্ত্রোপচার করা হয় আবুলের দুই হাত ও পায়ে।
এসব অস্ত্রোপচারে বাজানদারের শরীর থেকে পাঁচ কেজি ওজনের বাকলসদৃশ টিউমার অপসারণ করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সব খরচ রাষ্ট্রীয়ভাবে করার নির্দেশ দেন। তার সব অপারেশন বিনামূল্যে করা হয়। বাজানদার ও তার পরিবারের বিনাখরচে হাসপাতালে থাকা-খাওয়া এবং ওষুধপত্রের ব্যয় বহন করে কর্তৃপক্ষ।
অস্ত্রোপচারের পরও এক বছর ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন বাজানদার।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
Leave a Reply