আকিবুল ইসলাম হারেছ,চান্দিনা।
কুমিল্লার চান্দিনায় গ্রাহকদের নিরিবিচ্ছিন্ন সেবা দিয়া যাচ্ছে শতভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক চান্দিনার মহিচাইল শাখা।চলমান করোনা সঙ্কটের কারণে দেশজুড়ে চলছে সাধারণ ছুটি। আর চান্দিনা উপজেলায় ১৭ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় গত ৩ মে থেকে এ উপজেলাকে রেড জোন ঘোষণা করে কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। এই রেড জোন ঘোষিত এলাকায়ও মানুষের অর্থনৈতিক লেনদেন ও চাহিদা মিটাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন ওই ব্যাংক এর কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ।
সোমবার(১৮ মে) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক মহিচাইল শাখায় ১৮০ জনকে বিধবা ভাতা,বয়স্ক ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান করা হয়।এসময় উপস্থিত ছিলেন মহিচাইল কৃষি ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক মো.মাসুদ রানা,সেকেন্ড অফিসার মো.ফরহাদ আহমেদ,ব্যাংক কর্মকর্তা মো.জয়নাল আবেদীন।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিবিএ কুমিল্লা অঞ্চলের কার্যকারী সভাপতি মো.নুরুল ইসলাম,চান্দিনা সমাজসেবা কার্যালয় প্রতিনিধি মো.মোরশেদ আলম।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়,মহিচাইল কৃষি ব্যাংক শাখায় আমানত সংরক্ষণ,আমানতের টাকা উত্তোলণ,বিধবা ভাতা,বয়স্ক ভাতা,প্রতিবন্ধী ভাতা,বিদেশী রেমিটেন্স,সরকারের পক্ষে প্রদত্ত সেবা ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দিয়ে আসছেন কর্মকর্তারা।এছাড়াও গত ২৯ এপ্রিল থেকে সমাজসেবা কার্যালয়ের অধিভুক্ত উপজেলার মহিচাইল,মাধাইয়া,বাড়েরা,শুহিলপুর,বাতাঘাসীসহ পাঁচটি ইউনিয়নের ৫৬০৮ জনকে বিধবা ভাতা,বয়স্ক ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা দিচ্ছে ব্যাংকটি।পাশাপাশি সরকারি মাটি কাটা প্রকল্পের ১৮০০ জনের নগদ অর্থ দিয়েছে ওই ব্যাংক।
সরেজমিনে সোমবার (১৮ মে) কৃষি ব্যাংক মহিচাইল শাখায় গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই ব্যবসায়ী,বয়স্ক-বিধবা-প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্ত ব্যক্তি,বিদেশিদের পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘ লাইন ধরে ব্যাংকে সেবা নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। ব্যাংকের ভিতরে প্রবেশ করে দেখা যায় কৃষি ব্যাংক মহিচাইল শাখার ব্যবস্থাপক মো.মাসুদ রানা নিজেই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে গ্রাহকদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। এছাড়া বাইরে লাইনে দাঁড়ানো গ্রাহকদের সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে সেবা নিতে অনুরোধ করে যাচ্ছেন ব্যাংকের নিরাপত্তকর্মী ও আনসার সদস্যরা।
কৃষি ব্যাংক মহিচাইল শাখার ব্যবস্থাপক মো.মাসুদ রানা জানান,করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার আগে থেকেই অর্থাৎ সব সময়ই কৃষি ব্যাংক গ্রাহকদের সেবায় নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই সঙ্কট মুহূর্তেও আমি আমার ব্যাংকের অফিসারদেরকে নিয়ে ব্যাংকিং খাতের সব ধরনের সেবামূলক কাজ অব্যাহত রেখেছি। এ পর্যন্ত এই শাখায় টাকার কোন সঙ্কট হয়নি। এপর্যন্ত কোন গ্রাহক সেবা না পেয়ে ফিরে যায়নি।
ব্যাংকটির সার্বিক কর্মকাণ্ড নিয়ে কৃষি ব্যাংকের কুমিল্লা অঞ্চলের উপ মহা-ব্যবস্থাপক মো.মোস্তাফিজুর রহমান মুঠোফোনে জানান, ‘সরকার আমাদেরকে যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে সেভাবেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে আমাদের প্রতিষ্ঠান। জনগণের কল্যাণে সরকারের কৃষি ও সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক প্রায় সব কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে কৃষি ব্যাংক। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেই দায়িত্ব পালন করছে ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।’
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সঙ্কট মোকাবেলায় ২৫ সদস্য বিশিষ্ট বিশেষ কমিটি বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে।এরই মধ্যে সাধারণ মানুষের সেবায় অনুদান হিসাবে প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর একদিনের বেতন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়া হয়েছে।’
গ্রাহকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এবং বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্য সুরক্ষার নীতিমালা অনুসরণ করেই আমরা গ্রাহকদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
Leave a Reply