(আবু সুফিয়ান রাসেল, কুমিল্লা)
কুমিল্লায় ফুটপাত, ফার্মেসী ও মুদি দোকানে বিক্রি হচ্ছে পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট বা পিপিই। ২০০-৪০০ টাকায় বিক্রি হওয়া এ ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের মান নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। একই সাথে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন জুতার কভারসহ গাউন, গ্লাভস, ফেস শিল্ড, গগলস, এন ৯৫ মাস্ক, নতুন কোম্পানীর হ্যান্ড স্যানিটাউজার বিক্রি করছেন খোলা আকাশের নিচে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পিপিই ২০০-৪০০, কাপড়ের মাস্ক ২০, সার্জিকেল মাস্ক ৩০, এন ৯৫ মাস্ক ৩০-৫০, হ্যান্ড গ্লাবস পলিথিন ১০ টাকা, হ্যান্ড গ্লাবস প্লাষ্টিক ৩০-৮০, গগলস ১৫০-২৮০, হ্যান্ড স্যানিটাউজার ১০০ গ্রাম ১৩০ টাকা, ফেস শিল্ড ১০০-১২০, নিরাপত্তা সরঞ্জাম সেট ৬০০-৮০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
কান্দিরপাড় পুবালী চত্তর থেকে লিবার্টি মোড় পর্যন্ত রয়েছেন ১৫ জন বিক্রেতা। এছাড়া রাজগঞ্জ, পদুয়ার বাজারসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী বিক্রেতাদের দেখা গেছে। শহরতলী দিশাবন্দ-রাজাপাড়া এলাকার চা ও মুদি দোকানে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাবস বিক্রি করতে দেখা গেছে। কুমিল্লার বিভিন্ন উপজে’লা ও গ্রামেও একই চিত্র।
কান্দিরপাড়ের ব্যবসায়ী মো. ফরিদ জানান, মোবাইল করি ঢাকা থেকে মাল পাঠায় আমারা বিক্রি করি। বিভিন্ন গার্মেসে চায়না টিস্যু কাপড়ে পিপিই তৈরি হয়। আমাদের থেকে নিয়ে অনেক খুচরা বিক্রেতারা নিয়ে যায়। দিনে তিন-চার হাজার টাকা বিক্রি হয়।
বাদুরতলাস্থ প্রেসক্রিপশন পয়েন্টের একজন বিক্রেতা জানান, বিভিন্ন কোম্পানীর প্রতিনিধিরা এসে দিয়ে যায়। আমরা ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি করি। ডাক্তার, নার্স ও সাধারণ মানুষ সবাই ক্রয় করে।
মেডিকেল শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল ইমতিয়াজ বলেন, এন ৯৫ মার্স্কের ফিল্টারিং ভালো না, শুধু দেখানোর জন্য দেওয়া হয়েছে। কিছু মাস্ক আছে বাজারের ব্যাগ, কাপড়ের ব্যাগ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এ বিষয়ে কতৃপক্ষের দৃষ্টি দেওয়া দরকার।
এ বিষয়ে ফার্মাসিউটিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ এসোসিয়েশন (ফারিয়া) কুমিল্লার সভাপতি রমিজুল হক ভূইয়া জানান, কিছু ঔষধ কোম্পানী চিকিৎসক ও কর্মীদের পিপিই বিনামূল্যে সরবরাহ করেছে। তবে বিক্রির জন্য ফার্মেসীতে দেয়নি।তবে, নামে-বেনামে সার্জিক্যাল মালামাল বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান এসব তৈরি করে থাকে। যা খুবই নিন্ম মানের। হোল সেল থেকে ব্যবসায়ীরা তা সংগ্রহ করে, বাজারে বিক্রি করছে। ঔষধ কোম্পানীর সাথে তাদের সম্পর্ক নেই।
বাংলাদেশ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এসোসয়েশন (বিএমটিএ) কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক মো.আল মামুন বলেন, যারা সরাসরি করোনা রোগীর সেবায় জড়িত পিপিই শুধু তাদের জন্য। সাধারণ মানুষ পিপিই পড়ে রাস্তায় রাস্তায় হেঁটে কোন লাভ নেই। কারণ এটা সাধারণ মানুষের জন্য নয়। আর এটার খোলা মার্কেটে যা পিপিইর নামে বিক্রি হচ্ছে, আসলে তা পিপিই কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালন ডা. মো. মুজিবুর রহমান জানান, ডাক্তার, নার্স ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট যারা করো’না রোগী নিয়ে কাজ করেন পিপিই শুধু তাদের জন্য। সকল মানুষের জন্য মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাবস ব্যবহার করা জরুরি। পিপিই একবার ব্যবহারের পর পুড়িয়ে ফেলতে হবে। সাধারণ মানুষ একই পিপিই প্রতিদিন ব্যবহার করছে।
Leave a Reply