আকিবুল ইসলাম হারেছঃ
হঠাৎ করেই কুমিল্লা নগরীসহ জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলার গ্রামে-গঞ্জে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক পরেছে। বিশেষ করে তরুণ ও যুবকদের মধ্যে এ প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। শুধু ন্যাড়া হয়েই তারা ক্ষ্যান্ত হচ্ছেন না। নানা ভঙ্গিতে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ন্যাড়া মাথার ছবি পোস্ট করছেন।
করোনা ভাইরাস নিয়ে আ’তঙ্কের মধ্যে এমন দৃশ্যে বেশ কৌতূহলের সৃষ্টি হলেও যারা ন্যাড়া হয়েছেন তারা বলছেন, সরকারের নির্দেশে ঘরে বন্দি, সেলুনও বন্ধ, তাই মাথায় চুল বড় হওয়ায় তারা ন্যাড়া হয়েছেন। আবার অনেকেই বলেছেন, নিছক মনের বাসনা কিংবা ভালো লাগা থেকেই তারা ন্যারা হয়েছেন। আবার অনেকে জানিয়েছেন, পাশের বা পরিচিত কারও একজনের ন্যাড়া হওয়া দেখে তিনিও উৎসাহিত হয়েছেন।
অতিসম্প্রতি ন্যাড়া হওয়াদের মধ্যে তরুণ ও যুবকদের পাশাপাশি কুমিল্লার বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মী, ছাত্রলীগ নেতা, চাকরিজীবী, শ্রমজীবীসহ অনেকেই রয়েছেন। যাদের অধিকাংশরাই ন্যাড়া হওয়ার পর কোনো না কোনো ভঙ্গিতে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন।
গরমের এমন সময়টাতে প্রতিবছরই গ্রুপ বেঁধে একই বয়সের তরুণদের মাঝে ন্যাড়া হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। যদিও চলতি সময়ে ন্যাড়া হওয়া তরুণরা জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশে তাদের গৃহবন্দি থাকতে হচ্ছে। যে যার মতো নিজ বাড়িতে থাকছেন, কবে নাগাদ বাহিরে বের হতে পারবেন এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন তা কারো জানা নেই। এমন সুযোগে তাই মাথা ন্যাড়া করেছেন।কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মহিচাইল এলাকার বাসিন্দা রাসেল হোসেন জানান, তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি একটি চাকরি করেন। বর্তমান পরিস্থিতি তাদের বাড়ির সবাই নিজ ঘরেই আছেন। দিনের বেলা ঘর থেকে বের হয়ে উঠান কিংবা বাগানের বাহিরে কোথাও যাচ্ছেন না। বাড়িতেও কেউ আসছে না। এই সুযোগে তারা সমবয়সি কয়েকজন মিলে মাথা ন্যাড়া করেছেন।
উপজেলার নবাবপুর এলাকার মেহেদি হাসান বলেন, চুল বড় হয়ে গেছে, সেলুন বন্ধ থাকায় চুল কাটার সুযোগ নেই। তার ওপর গরম বেড়েছে, ফলে এক স্বজনের সহায়তায় তিনি মাথা ন্যাড়া করেছেন।
এদিকে নরসুন্দরদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, দীর্ঘদিন সেলুন বন্ধ থাকায় নরসুন্দররা খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তার পরেও একমাত্র সেলুন যেখানে সামাজিক দূরত্ব কোনোভাবেই নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। নরসুন্দরদের সাধারণ মানুষদের স্পর্শ করেই চুল কাটা কিংবা সেভ করার কাজটি করতে হয়। সেখানে যদি কেউ করোনায় আক্রান্ত থাকেন, তাহলে ওই নরসুন্দরসহ পরে সেলুনে আসা বহু লোক এতে আক্রান্ত হতে পারেন। এই চিন্তা থেকে সরকারি নির্দেশনা মেনে গত ২৫ মার্চ থেকে গোটা উপজেলায় সেলুন বন্ধ করা হয়েছে।
Leave a Reply