স্টাফ রিপোর্টারঃ
লন্ডনে পলাতক বির্তকিত সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্ণেল শহীদ উদ্দিন খানের প্ররোচনায় দায়েরকৃত তিনটি মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি পেয়েছেন কুমিল্লার আ’লীগ নেতা কাজী আবু মোঃ নওশাদ।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় কুমিল্লা নগরীর ১ নং ওয়ার্ডের মুন্সেফ কোয়ার্টারের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিঃ এর সাবেক সিবিএ নেতা ও আ’লীগের সক্রিয় রাজনীতিবিদ কাজী আবু মোঃ নওশাদ। এ সময় তার স্ত্রী কুমিল্লা আদালতের এপিপি এড. শিরিন সরকার উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে কাজি আবু মোঃ নওশাদ জানান, আমি সারা জীবন সত্যের পথে কাজ করার জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। আমি গত ৭ বছর যাবৎ কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত শহীদ উদ্দিন খানের প্রত্যক্ষ মদদে র্যাব ও প্রশাসন কর্তৃক দায়ের করা তিনটি মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছি। সম্প্রতি এ তিনটি মামলা থেকে আমি বেকসুর খালাস পেয়েছি। আমি মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে আজ হাজার হাজার শুকরিয়া আদায় করছি। সেই সাথে বাংলাদেশ বিচার বিভাগের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
আপনারা জানেন, কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত শহীদ উদ্দিন খান অত্র এলাকায় সেনাবাহিনী এবং র্যাব সদস্যদেরকে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে সর্বদা একটি ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে রাখত। তারই ধারাবাহিকতায় বিগত ২০১৩ সালে আমার বাড়ির সামনে অবস্থিত রাস্তাটি অবৈধভাবে দখল করে তার শশুর কাজী মশিউর রহমানের নামে নামফলক স্থাপন করার উদ্দেশ্যে কাজ করার সময় আমি এই অবৈধ কাজে অসম্মতি জানাই। এরই প্রেক্ষিতে আমি কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত শহীদ এর রোষানলে পড়ে যাই। এরপরই কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত শহীদ উদ্দিন তার ক্ষমতা দেখিয়ে র্যাব সদস্যদেরকে আমাকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে আমার বাড়িতে প্রেরণ করেন। র্যাব সদস্যরা হঠাৎ কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতিরেকে আমার বাড়িতে ঢুকে পরে। সেই সাথে তারা আমাকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে টেনে হিঁচড়ে বের করতে চেষ্টা করে। ওই সময় বিষয়টি এলাকাবাসি জানতে পেরে এলাকায় র্যাবের গাড়ির সামনে বিক্ষোভ করলে র্যাব সদস্যরা আমাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত শহীদ উদ্দিনের সরাসরি হস্তক্ষেপ ও তার দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব সদস্যরা আমাকে অস্ত্র, ইয়াবা, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তিনটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। ওই সময় আমার স্ত্রী এড. শিরিন সরকার একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে মিথ্যা মামলা দায়েরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। আর এই মামলা তিনটির মাধ্যমে আমি বিগত ৭ বছর যাবৎ ব্যক্তিগত পারিবারিক এবং সামাজিক জীবনে চরম হেনস্থা ও দুর্দশার মধ্যে পড়ে যাই।
আমি় আল্লাহর কাছে আবারও শোকরিয়া আদায় করছি যে তিনি আমাকে মনুষ্যসৃষ্ট বিশাল বিপদ এবং ষড়যন্ত্রকারী, লন্ডনে পলাতক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল শহীদ উদ্দিন খানের ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করেছেন ।
তিনি আরো বলেন, কর্নেল সহিদ উদ্দিন খানের ইশারায় দায়ের করা এই মিথ্যা মামলায় আমি সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি, আমার মান হানি হয়েছে, মানসিকভাবে আমি বিপর্যস্ত হয়েছি, মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে চরম দুঃচিন্তায় কাটিয়েছি এই সাতটি বছর।
জাল জালিয়াতিসহ বিভিন্ন মামলায় কর্নেল সহিদ উদ্দিন খানের কয়েক বছরের সাজাও হয়েছে। বিনা কারনে অহেতুক মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে যে হয়রানি করেছে সেই প্রতারক, দুর্নীতিবাজ ও মামলাবাজ কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত শহীদ উদ্দিন খানকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে রাষ্ট্রের কাছে অনুরোধ করছি।
উল্লেখ্য যে, ২০০৫ সালে কর্ণেল (অবঃ) শহীদ উদ্দিন খান সেনাবাহিনী হতে চাকরিচ্যুত হয়ে বর্তমানে পরিবার নিয়ে লন্ডনে অবস্থান করছে। তার বিরুদ্ধে একটি মামলায় ৫ বছরের জেল ও দুটি মামলায় গ্রেফতারি প্ররোয়ানা জারি হয়েছে।
Leave a Reply