অনলাইন ডেস্ক:
অমূল্য প্রত্নসম্পদে ভরপুর কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী লালমাই পাহাড়ে এবার কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ সময়ে পাহাড়ের আশপাশের বাজারে এখন কাঁঠাল আর কাঁঠাল।লালমাই পাহাড়ের উঁচু-নিচু টিলার চূড়া, ঢাল ও টিলার ফাঁকে ফাঁকে, পাহাড়ের পাদদেশে ও আশপাশের সমতল ভূমিতে গাছে গাছে প্রচুর কাঁঠাল ধরেছে। পাকা সুমিষ্ট কাঁঠালের গন্ধ পুরো পাহাড়ি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। পাহাড়ি অঞ্চলজুড়ে এখন কাঁঠাল বিক্রির ধুম লেগেছে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে হাটবারে বিক্রির জন্য সাইকেলসহ বিভিন্ন বাহনে নেওয়া হচ্ছে কাঁঠাল। কেউ কেউ স্বজনদের বাড়িতে কাঁঠাল পাঠাচ্ছেন। কেউ জামাই আদর করে দাওয়াত দিয়ে কাঁঠাল খাওয়াচ্ছেন। বাজারে কাঁঠালের দামও কম।
কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে লালমাই পাহাড়। ১২ মাইল লম্বা ও সর্বোচ্চ ৩ কিলোমিটার প্রস্থের এই পাহাড়ের যেদিকে যত দূর চোখ যায়, শুধু কাঁঠাল আর কাঁঠাল। ছোট-বড় সব গাছেই কাঁঠাল। গাছের গোড়া থেকে মগডালে শোভা পাচ্ছে কাঁঠাল। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার চণ্ডীমুড়া মন্দির, ধর্মপুর, লালমাই, লালমাই সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস, বড় ধর্মপুর, রতনপুর, বিজয়পুর, মধ্যম বিজয়পুর, রাজারখলা, চৌধুরীখলা, জামমুড়া, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বন বিভাগ, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড), কুমিল্লা সেনানিবাস, কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ, ফায়ারিং স্কোয়াড ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ কুমিল্লা সেক্টরে এবার বেশি পরিমাণে কাঁঠাল ধরেছে।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোটবাড়িতে অবস্থিত বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ক্যাম্পাসের ৭০৭টি গাছে এবার ৭ হাজার ৭৩২টি কাঁঠাল ধরেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ কুমিল্লা সেক্টরের সব গাছেই কাঁঠাল ধরেছে। বিজিবির মাল্টিপারপাস কমিউনিটি সেন্টারের সামনে ছোট ছোট গাছেও দেখা গেছে বড় আকৃতির কাঁঠাল ঝুলে আছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের অনুচ্চ ও সরু পাহাড়শ্রেণি এলাকায় এক গাছেই ধরেছে অন্তত ৫০টির মতো কাঁঠাল।কুমিল্লার লালমাই, রতনপুর, চণ্ডীমুড়া, বাতাইছড়ি বাজার, কোটবাড়ি বাজার, বিজয়পুর বাজারে প্রচুর কাঁঠাল উঠছে। এবার কাঁঠালের দাম আকারভেদে সর্বনিম্ন ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫০ টাকা।রতনপুর বাজারের বিক্রেতা আবদুর রশিদ বলেন, এখন পুরোদমে কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে। গতবারের চেয়ে এবার দাম একটু কম। লালমাই পাহাড়ের কাঁঠালের ঐতিহ্য আছে।
কুমিল্লার ইতিহাসবিদ আহসানুল কবীর বলেন, লালমাই পাহাড়ের কাঁঠাল কুমিল্লার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশই। প্রাচীনকাল থেকে এই পাহাড়ের মাটি কাঁঠাল চাষের জন্য উপযোগী। এখানকার আবহাওয়ার কারণে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হচ্ছে। পাহাড়ের ছোট গাছেও কাঁঠাল ঝুলছে। এই মৌসুমে শখ করে হলেও মানুষ লালমাইয়ের কাঁঠাল কেনেন। কাঁঠালের কোনো কিছুই ফেলনা নয়। কাঁঠালের বিচি দিয়ে ভর্তা ও তরকারি রান্না করা হয়।
লালমাই উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, লাল মাটিতে কাঁঠালের ফলন বেশি হয়ে থাকে। লালমাই পাহাড়ের মাটি কাঁঠাল চাষের জন্য উপযোগী। এই মাটিতে কাঁঠাল ফলনের সব উপাদান রয়েছে। প্রতিবছর কাঁঠালের ফলন বাড়ছে। সূত্র: আমাদের কুমিল্লা
Leave a Reply