( জাগো কুমিল্লা.কম)
কুমিল্লার দাউদকান্দির বারপাড়া ইউনিয়নে গ্রাম্য সালিশের নামে মধ্যযুগীয় কায়দায় প্রবাসী স্ত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নিয়ে অসন্তোষজনক সত্য পাওয়া এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কুমিল্লা জেলা প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো: আবুল ফজল মীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঠিক তদন্তের জন্য কঠোর বার্তা দিয়েছেন বলে জানা যায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এই মামলা দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের দ্রুত গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সামগ্রিক বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিকট প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, ওই নারীর দেবরদের (স্বামীর ভাই) যোগসাজশে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তাকে বেধড়ক মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী চার সন্তানের ওই জননী ‘পরকীয়ায় জড়িত’ এমন অভিযোগ এনে ৩১ জুলাই রাতে পাশের বারপাড়া গ্রামের আলম নামে এক ব্যক্তিকে ডেকে এনে জোর করে তার ঘরে আটকে রাখেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। পরবর্তীতে আটক দু’জনের ওপর রাতভর দফায় দফায় নির্যাতন চালায় প্রবাসী কবিরের ভাই সাইফুল, বাবুল, মিন্টু, মোস্তাক ও আরেক ভাই খোকনের স্ত্রী। পরদিন সকালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনির হোসেন তালুকদারের উপস্থিতিতে সামাজিক বিচারের আয়োজন করা হয়। সালিশ বৈঠক চলাকালে প্রতিবেশী মিন্টু মাতবরদের নির্দেশে লাঠি দিয়ে ওই নারীর ওপর নির্যাতন চালানো হয়। এছাড়া, বেধড়ক পেটানো হয় আটক আলমকেও।
তাদেরকে নির্যাতনের ঘটনায় ১ আগস্ট ওই নারীর বোন বাদী হয়ে দাউদকান্দি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দু’জনকে গ্রেফতার করে।
এ বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন তালুকদার বলেন, বিষয়টা তাদের পারিবারিক ষড়যন্ত্রের অংশ। কবিরের চার ভাই ও এক ভাবি মিলে এ কাণ্ডটি ঘটিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ওই দিন সকালে বৈঠক শুরুর পর হঠাৎ করেই কবিরের এক ভাই এসে তার ভাবিকে মারধরের নির্দেশ দিতে থাকে। পরে আমার ইউনিয়নের তিনজন সদস্য ও আশপাশের লোকজন মিলে আহত দু’জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠায় এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, মামলার দুই আসামিকে এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply