(এমএ কাশেম ভূঁইয়া, হোমনা-তিতাস প্রতিনিধি)
কুমিল্লার তিতাসের মজিদপুর ইউনিয়নের “দুধঘাটা নুরে মোহাম্মদী (সঃ) দাখিল মাদ্রাসা”র ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন দীর্ঘ ২৩ বছর পর ১৬জুলাই ১৮ইং সোমবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও রহস্যজনক কারণে তা আকস্মিকভাবে স্থগিত করা হয়। গত তাং ১৫ জুলাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও নির্বাচন প্রিজাইডিং অফিসার আনোয়ারা চৌধূরী স্বাক্ষরিত স্বারক নং উমাশিকা/ তিতাস/ কুমিল্লা/ ম্যাকনি/ ৫০/২০১৩/১০২৫ নোটিশের মাধ্যমে আকস্মিকভাবে এ নির্বাচন স্থগিত করায় ওই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীসহ মাদ্রাসার ভোটার ও এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। একটি মহলের ইশারায় দুর্ণীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে এমন ঘৃনিত কাজ করেছে বলেও এলাকাবাসী ও সুশিল সমাজের ব্যক্তিরা অভিযোগ করেন।
আকস্মিকভাবে পাঠানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়,“দুধঘাটা নুরে মোহাম্মদী (সঃ) দাখিল মাদ্রাসা”র ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন ২০১৮ এর সুপারসহ অধিকাংশ প্রার্থীর আবেদন ও ভোটার তালিকা যথাযথ না থাকা এবং নির্বাচন বিষয়ে নানাবিধ অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ায় আসন্ন ১৬/০৭/১৮ খ্রিঃ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য অভিভাবক শ্রেনীর নির্বাচনসহ নির্বাচন সংক্রান্ত গৃহীত যাবতীয় কার্যক্রম নির্দেশ ক্রমে স্থগিত ঘোষনা করা হলো।
আরো জানা যায়, নির্বাচনে এবতেদায়ী শাখায় ২জন ও দাখিল শাখায় ৫জন মোট ৭জন প্রার্থীর মনোনয়ন যাচাই বাছাই করে বৈধ করেন প্রিজাইডিং অফিসার। নির্বাচনে অংশগ্রহন কারী প্রার্থীরা ইতি মধ্যে ভোটারদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভোট প্রার্থনার পাশাপাশি গনসংযোগও করেন। কিন্তু নির্বাচনের আগের দিন বিকালে হঠাৎ করে নির্বাচন স্থগিত করেন প্রিজাইডিং অফিসার।
অভিভাবকরা জানান, আজ (সোমবার) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তাই সকাল থেকেই আমরা মাদ্রাসায় ভোট দিতে আসি। কিন্ত এসে শুনতে পাই নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন কেন স্থগিত করা হয়েছে জানতে চাইলে? মাদ্রাসা সুপার মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা ও নির্বাচন প্রিজাইডিং অফিসার আনোয়ারা চৌধূরী নোটিশের মাধ্যমে নির্বাচন স্থগিত করেছেন।
অভিভাবক মনির হোসেন ভূইয়া বলেন, ১৯৮৮ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্টা হওয়ার পর এইবারই প্রথম নির্বাচনের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হবে এবং আমাদের পছন্দ মতো যোগ্য ব্যক্তিদের নির্বাচিত করতে পারবো আশা ছিলো! আর নির্বাচিত কমিটি উক্ত মাদ্রাসার শিক্ষার মান উন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সুষ্ঠভাবে মাদ্রাসাটি পরিচালনা করবে বলে আমরা আজ অনেক আনন্দ ও উৎসাহ নিয়ে ভোট দিতে এসেছিলাম। কিন্তু কি কারনে তরিগরি করে নির্বাচন স্থগিত করেছে তা জানিনা। এবতেদায়ী শাখার সদস্য প্রার্থী মো. লিটন ভূইয়া জানান, মনোনয়নপত্র বাছাই সংক্রান্ত প্রত্যয়নে প্রিজাইডিং অফিসার উল্লেখ করেছেন, প্রবিঃ ৪(১) ঘ এর ১৯/২/২০১৩ তারিখের মাদ্রাসা বোর্ডের পরিপত্র অনুযায়ী পঞ্চম শ্রেনীর অভিভাবক প্রার্থী হতে পারবেনা। সুতরাং তাহার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী শাহিন মিয়ার ছেলে পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ে এবং শাহিন মিয়ার প্রস্তাবকারী মো. জহির ভূইয়া এবতেদায়ী শাখার কোন ভোটার না। তাই ১২/৭/১৮ইং তারিখে লিটন ভূইয়া প্রিজাইডিং অফিসার বরাবর আবেদন করেন যাছাই বাছাই পূর্বক শাহিন মিয়ার প্রার্থীতা অবৈধ ঘোষনা করা হোক। কিন্তু প্রিজাইডিং অফিসার তা না করে নির্বাচনের আগের দিন মনগড়াভাবে নির্বাচন স্থগিত করেন।
এবিষয়ে উক্ত মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কিছুই জানিনা। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলতে পারবেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও নির্বাচনর প্রিজাইডিং অফিসার আনোয়ারা চৌধুরী দৈনিক সংবাদকে বলেন, নির্বাচন প্রস্ততীর শুরু থেকেই প্রার্থীদের মাঝে উত্তেজনা ছিলো এবং একের পর এক অভিযোগ আসতে থাকে আমার কাছে।
শাহিন নামের এক প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিলও করা হয়। নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্ত আমার নিকট অভিযোগ আসায় অবশেষে আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্বাচন স্থগিত করতে বাধ্য হই। উল্লেখ্য, ২৫জুন ১৮ইং তারিখে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন ও ২৭জুন ১৮ইং যাছাই-বাছাই সম্পন্ন করেন এবং ৩০জুন ১৮ইং প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল। ১৬জুলাই ১৮ইং ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
Leave a Reply