অনলাইন ডেস্ক:
কুমিল্লার চান্দিনায় মহাসড়কে দোকানির ছি’ন্নভি’ন্ন ম’রদেহ উদ্ধারের ঘটনার ১০ দিন পর রহ’স্য উদ’ঘাটন করেছে পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, চা দোকানি নাছিরকে টাকার জন্য নয়, প্রতিব’ন্ধী কিশোরীকে ধ’র্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ করায় হ’ত্যা করা হয়। পুলিশ মোয়াজ্জেম হোসেন (২৫) এবং অটোরিকশাচালক সানাউল্লাহকে (২৪) আ’টকের পর এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।
ঘটনার বর্ণনা করে আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মো. নূরুল ইসলাম।
গত ১৩ জানুয়ারি সকালে ব্য’স্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে নাছির উদ্দিনের ছি’ন্নভি’ন্ন ম’রদেহের অংশ উ’দ্ধার করে হাইওয়ে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ একে সড়ক দুর্ঘটনা বলে সন্দেহ করলেও নিহতের পিতা রবিউল্লাহ দাবি করেন, তার ছেলেকে খু ন করা হয়েছে। প্রমাণ হিসেবে তিনি দোকানে র ক্তের চি হ্ন দেখান পুলিশকে। চান্দিনা থানা পুলিশও নাওতলা মাদ্রাসা এলাকায় মহাসড়ক সং লগ্ন ওই চা দোকানের কয়েকটি স্থানে ও কম্বলে ছোপ ছোপ র ক্তের দাগ দেখতে পান। সোমবার রাতে নিহতের পিতা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে চান্দিনা থানায় একটি হ ত্যা মামলা দায়ের করেন।
চাঞ্চল্যকর এই হ ত্যাকা ণ্ডের পর থেকে এলাকায় নানা রকম গু ঞ্জন সৃষ্টি হয়। কেউ বলেন, পার্শ্ববর্তী এক দোকানদার নাছির উদ্দিনের পিতা রবিউল্লাহর কাছে টাকা আমানত রেখে যান। আর রাতে ওই টাকা লুটে নেওয়ার জন্য নাছিরকে হ ত্যা করা হয়। আবার কেউ বা বলেন, হয়তো রাতে কোনো ক্রেতার সঙ্গে ঝামেলার কারণে ওই ঘটনা ঘটে।এদিকে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে মাঠে নামে চান্দিনা থানা পুলিশসহ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), সিআইডি ও পিবিআই।
পুলিশ জানায়, ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় চান্দিনা এলাকা থেকে মোয়াজ্জেম নামের একজনকে আ টক করতে সক্ষ ম হয় পুলিশ। পরে রাত ৮টায় চান্দিনার নাওতলা এলাকা থেকে ঘটনার মূল হো তা অটোরিকশাচালক সানাউল্লাহকে (২৪) আ টক করা হয়। মোয়াজ্জেম জানায়, সানাউল্লাহ ও মোয়াজ্জেমই তাকে হ ত্যা করেছে। কিন্তু হ ত্যাকা ণ্ডের পর যাতে কেউ সন্দেহ করতে না পারে সেজন্য তারা এলাকা ছাড়েনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সানাউল্লাহ পেশায় একজন অটোরিকশাচালক। গত ৭ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে সানাউল্লাহ ৪-৫ জন সহযোগী নিয়ে পাশের বাড়ির ১৫ বছর বয়সী এক প্রতিব ন্ধী কিশোরীকে সংঘ বদ্ধ ধ র্ষণ করে। বিষয়টি দেখে বাধা দেয় নাছির। ধর্ষ ণের পর ওই কিশোরীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর ধ র্ষক সানাউ ল্লাহ এলাকায় প্রকা শ্যে ঘুরে বেড়ায়। প্রতিব ন্ধীর পিতা সামাজিক মর্যাদার কারণে মা মলা না করে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চে ষ্টা করেন।
ধ র্ষক সানাউল্লাহ গত ১২ জানুয়ারি বিকালে নাছির উদ্দিনের দোকানে আসলে কেন ওই প্র তিবন্ধী কিশো রীকে ধ র্ষণ করা হলো, কেনইবা ধর্ষ করা প্রকাশ্যে এলা কায় ঘুরছে- এমন প্রশ্ন করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সানাউল্লা হ। এসময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। সবার সামনে নাছির উদ্দিন এসব কথা বলায় সানাউল্লাহকে ক্ষু ব্ধ হয়। সানাউল্লাহ রাতে মোয়াজ্জেম নামে অপর একজনকে সাথে নিয়ে প্রতি শোধ নিতে আসে নাছিরের দোকানে। দা দিয়ে না ছিরকে কয়েকটি কো প দেয় সানাউল্লাহ। নাছির জীবন বাঁচাতে দৌড়ে মহাসড়ক পারাপারের সময় গাড়ির চাকায় পি ষ্ট হয়ে নিহত হন। নাছিরের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার প র র ক্ত মাখা দা ধুয়ে দোকানে রেখে পালিয়ে যায় হত্যাকারীরা। সারারাত গাড়ির আসা-যাওয়ায় নাছিরের মরদেহ ছি ন্নভি ন্ন হয়ে পড়ে থাকে মহাসড়কে।
প্রসঙ্গত, রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নাওতলা আলিম মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি মার্কেটে নৈশ প্রহরীর কাজ করেন নাওতলা গ্রামের রবিউল্লাহ। ওই মার্কেটে চা দোকান দিয়ে ব্যবসা করতেন রবিউল্লাহর ছেলে নাছির উদ্দিন। রবিবার রাতে রবিউল্লাহ শারীরিক অসুস্থতার কারণে নৈশ প্রহরীর দায়িত্ব পালন করেন ছেলে নাছির উদ্দিন। রাতের কোনো এক সময়ে হ ত্যাকারীরা তাকে কু পিয়ে যায়। রাতে গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মহাসড়কের দেড় কিলোমিটারজুড়ে মরদেহের বিচ্ছিন্ন অংশ পরে থাকে। সকালে দে হের অংশ উদ্ধার করে পুলিশ।
Leave a Reply