স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ডেস্ক :
ওজন কমানো থেকে শুরু করে ফিট থাকতে অনেকেই রাতে ভাতের বদলে রুটি খেয়ে থাকেন। তবে কখনো কি ভেবে দেখেছেন রাতে রুটি খেলে শরীরে কী ঘটে? শরীরকে সুস্থ এবং রোগমুক্ত রাখতে রুটির কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। এতে উপস্থিত একাধিক পুষ্টিকর উপাদান হার্ট অ্যাটাকসহ একাধিক হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়, এছাড়া একাধিক ছোট-বড় শারীরিক সমস্যার প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে রুটি।
গমে থাকা ভিটামিন বি, ভিটামিন ই, সিলিকন, ক্লোরিন, সালফার, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, আয়োডিন, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম এবং প্রাকৃতিক লবন নানা দিক থেকে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।আটায় ফ্যাট থাকে না বললেই চলে। সেই সঙ্গে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকার কারণে রুটি খেলে হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হঠাৎ করে সুগার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকায় ডায়াবেটিক রোগীদের জন্যও এই খাবার খুবই উপকারি।
এখানেই শেষ নয়, রুটিতে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৬, এবং বি৯ থাকে। যা ক্যান্সার রোগের প্রকোপ কমানোর পাশাপাশি আরও নানাভাবে শরীরের উপকারে লাগে। তাই রুটি খাওয়ার অভ্যাস একেবারেই খারাপ নয়।
এখন প্রশ্নটা হলো, রাতে রুটি খেলে কী হয়?
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে রুটি খেলে শরীরের অন্দরে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে। গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে রুটি খেলে শরীরে এনার্র্জি মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে ক্লান্তি দূর হয়ে শরীর একেবারে চাঙ্গা হয়ে ওঠে। এছাড়া ওজন হ্রাসে সাহায্য করে।
রুটিতে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম থাকে, মাত্র ৭০। তাই রাতে রুটি খেলে ওজন বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনাই থাকে না। তাই যারা ওজন কমানোর বিষয়ে বদ্ধপরিকর, তারা ইচ্ছা হলে ডিনারের মেনুতে রুটি রাখতেই পারেন।
রাত যত বাড়তে থাকে, তত আমাদের শরীরের মেটাবলিজম রেট কমতে শুরু করে। তাই রাতে বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খেলে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এবার নিশ্চয় বুঝতে পরেছেন রাতে রুটি খাওয়ার উপকারতা কতটা।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, রুটি খেলে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত ফ্যাট ঝড়তে শুরু করে। ফলে নিমেষে ওজন কমে। আর্থাৎ রাতে রুটি খেলে ওজন তো বাড়েই না। উল্টো কমতে শুরু করে।
রুটিতে উপস্থিত ফাইবার শরীরে প্রবেশ করা মাত্র হজম ক্ষমতা বাড়াতে শুরু করে। সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বল এবং বদ-হজমের মতো সমস্যাও কমিয়ে দেয়। এখানেই শেষ নয়, দেখা গেছে রাতে ভাত এবং রুটির মধ্যে রুটি তাড়াতাড়ি হজম হয়। ফলে বদ-হজমের আশঙ্কা কমে।
রুটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুব কম হওয়ার কারণে এটি খাওয়া মাত্র রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা থাকে না। ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্তরাও নিশ্চিন্তে সকাল-বিকাল রুটি খেতেই পারেন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও রুটির কোনো বিকল্প হয় না। তাই যাদের পরিবারে এই মারণ রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা রাতে রুটি খাওয়া শুরু করতে পারেন।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত রুটি খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে হঠাৎ করে প্রেসার বেড়ে যাওয়ার কারণে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে রুটিতে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধিতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
খনিজের ঘাটতি পূরণ করেশরীরকে সুস্থ রাখতে যে যে ভিটামিন এবং খনিজের প্রতিনিয়ত প্রয়োজন পরে। সেগুলো সবই রয়েছে রুটিতে। তাই রাতে হোক কী দিনে রুটির কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। রুটিতে প্রচুর মাত্রায় জিঙ্ক রয়েছে।
যা ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি বলিরেখা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। রুটিতে উপস্থিত সেলেনিয়াম এবং ফাইবার একাধিক ক্যান্সার রোগের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যাদের পরিবারে এমন রোগের ইতিহাস রয়েছে তারা রাতে রুটি খাওয়ার বিষয় ভেবে দেখতে পারেন।
Leave a Reply