অনলাইন ডেস্ক:
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় সাবেক চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও রাজশাহী কিংস। রাজশাহীর দেয়া ছোট টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ১৮.২ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় কুমিল্লা।
আবারও ম্যান অফ দ্য ম্যাচ ‘বুম বুম’ আফ্রিদি! প্রথম ম্যাচের পর এবারও ম্যাচসেরার পুরষ্কার পেলেন শহীদ আফ্রিদি। বল হাতে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে ৪ ওভারে মাত্র ১০ রান খরচায় নিয়েছেন ৩ উইকেট।
টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ১৮.৫ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১২৪ রান করে মিরাজ বাহিনী। তাই জয়ের জন্য ১২৫ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সামনে। যা খুব সহজেই পৌঁছে যায় বিজয়, তামিমরা।
অবশেষে হাসল এনামুল হক বিজয়ের ব্যাট। কুমিল্লার ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৪০ রানের চোখ-জুড়ানো এক ইনিংস খেলেন। তবে দুভার্গ্যই বলতে হবে। রান আউটে কাটা না পরলে হয়তো নিজের ইনিংসটাকে আরও বড় করতে পারতেন।
প্রথম দুই ম্যাচে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি বিজয়। সিলেটের বিপক্ষে ৫ রানে আউট হন তিনি। এরপর রংপুরের বিপক্ষে ২ রান করে ড্রেসিংরুমে ফিরে আসেন। ৩২ বলে ৪০ রান করেন তিনি। তার ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ১টি ছক্কা।
রান আউট হন বিজয়। নন স্ট্রাইকে ছিলেন তিনি। তামিম শট খেলেন। নন স্ট্রাইকে থাকা বিজয় দুই ধাপ সামনে এগিয়ে এসেছিলেন। বোলার উদানা বাঁ পা দিয়ে বল ঠেকানোর চেষ্টা করেন। বল তার বুটে লেগে স্টাম্প ভেঙে দেয়। রান আউটে কাটা পরতে হয় কুমিল্লার ব্যাটসম্যান বিজয়কে। দলীয় ৮৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় কুমিল্লা।এ ম্যাচেও জ্বলে উঠতে পারেননি তামিম ইকবাল। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ২৫ বলে ২১ রান করে আউট হন। আগের দুই ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৫ ও ৪ রান।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা রাজশাহী ১৮.৫ ওভারে ১২৪ রানে অলআউট হয়। কুমিল্লা ১৮.৪ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩০ রান তোলে। ম্যাচটি ৫ উইকেটে জিতে নিয়েছে কুমিল্লা। তৃতীয় ম্যাচে তামিমদের এটি দ্বিতীয় জয়। অন্যদিকে তৃতীয় ম্যাচে দ্বিতীয় হার রাজশাহীর।
ইনজুরির কারনে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে গেছেন কুমিল্লার নিয়মিত অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। শুক্রবার তাই দলকে নেতৃত্ব দেন ইমরুল কায়েস। এ ম্যাচে এভিন লুইসের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামেন এনামুল হক বিজয়। বলে রাখা ভালো, প্রথম দুই ম্যাচে তাকে ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামানো হয় দলকে দারুণ সূচণা এনে দেন বিজয় ও লুইস। উদ্ধোধনী জুটিতে আসে ৬৫ রান। লুইসকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন কুয়াইস আহমেদ।
এর আগে আফ্রিদি, আবু হায়দার, সাইফ উদ্দিনদের বোলিংয়ে সুবিধা করতে পারেনি রাজশাহীর ব্যাটসম্যানরা। এ ম্যাচে ওপেনিংয়ে নামেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুমিনুল হক। উদ্ধোধনী জুটিতে আসে ২০ রান। মুমিনুলকে (৩) ফেরান সাইফ উদ্দিন। সৌম্য নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। রানের খাতায় খুলতে পারেননি তিনি। ১৭ বলে ৩০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন মিরাজ।
মোহাম্মদ হাফিজ, জাকির হাসান ও উদানার ব্যাটে লড়াই করার মতো পুঁজি পায় রাজশাহী। হাফিজ ১৬, জাকির ২৭ ও নয় নম্বরে নেমে ৩০ বলে ৩২ রান করেন উদানা। দারুণ বোলিং করেছেন আফ্রিদি। কুমিল্লার পাকিস্তানী স্পিনার ৪ ওভারে ১০ রান খরচায় পান ৩ উইকেট। এছাড়া আবু হায়দার, সাইফ উদ্দিন ও ডসন প্রত্যেকেই শিকার করেন ৩টি করে উইকেট।
মাঝারিমানের লক্ষ্য তাড়া কুমিল্লার শুরুটা ভালো হয়। তাদের দারুণ শুরু এনে দেন লুইস ও বিজয়। তবে শুরুর ছন্দটা ধরে রাখতে পারেনি। ১২৫ রান তাড়ায় জয়ের জন্য তাদের ১৮.৪ ওভার খেলতে হয়েছে। ইমরুল কায়েস (৬) ও শোয়েব মালিকও (২) নিজের ছায়া হয়েছিলেন। ছক্কা মেরে দলকে জয়ী করেন আফ্রিদি (৯*)। ডসন ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
রাজশাহী: মুমিনুল, মিরাজ, সৌম্য, হাফিজ, জাকির, লুইস, ফজলে মাহমুদ, কুয়াইস, উদানা, আরাফাত সানী, মোস্তাফিজ।
কুমিল্লা: বিজয়, লুইস, তামিম, ইমরুল, শোয়েব মালিক, ডসন, শহিদ আফ্রিদি, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মেহেদী হাসান, আবু হায়দার, মোহাম্মদ শহিদ।
Leave a Reply