অনলাইন ডেস্ক:
এবার বিএনপির সব ধরনের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া। এ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির পাঁচ নেতা দলের সব ধরনের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন। এরমধ্যে মোবাশ্বেরসহ চারজন দল ছাড়লেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর।
বুধবার (৩ এপ্রিল) বিকালে বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে মোবাশ্বের আলমের অব্যাহতিপত্র জমা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বরাবর দলের সব ধরনের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে পত্র জমা দিয়েছি। শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থতার কারণে দলের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছি।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি অন্য কোনও দলে যাবো না। বিএনপি করেছি, আগামীতেও থাকবো। তবে কোন পদ-পদবিতে থাকবো না।’
মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১০ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তবে সেখানে মনোনয়ন পান মো. মনিরুল হক চৌধুরী।
মনোনয়ন না পাওয়ার কারণে পদত্যাগ করছেন কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচনের আগে জেলে ছিলাম। তখন আমাকে মনোনয়ন না দিয়ে আরেকজনকে দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে আর কিছু না।’
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের পরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির তিনজন ও ঢাকা মহানগরের একজন নেতা দল থেকে পদত্যাগ করলেন।এরমধ্যে গত ২৮ মার্চ মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বিএনপির রাজনীতি থেকে অব্যাহতি চান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি আবু মোতালেব।
তিনি বলেছেন, ‘আমি অন্য কোনও দলে যাচ্ছি না। রাজনীতি থেকেই অবসর নিচ্ছি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
একাদশ সংসদ নির্বাচনের পরে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগর লবি। গত ২৪ জানুয়ারি তিনি মির্জা ফখরুলের কাছে অব্যাহতিপত্র জমা দেন। এরপর গত ১৬ মার্চ দলে থেকে পদত্যাগ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় অর্থ বিষয়ক সহ-সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন।
এছাড়া একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে পদত্যাগ করেন সংগীতশিল্পী মনির খান। গত বছরের ৯ ডিসেম্বর তিনি সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন। মনির খান বিএনপির সংস্কৃতি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
দলে থেকে এভাবে একের পর এক নেতা চলে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘দল থেকে কেউ চলে গেলে সাময়িক শূন্যতা তৈরি হয়। তবে সাংগঠনিকভাবে গতিশীল দলের মধ্যে তেমন কোনও সমস্যা হয় না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের হত্যার পরে বিএনপির শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সেটা পূরণ হয়েছে। ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যার পরে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা দল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। এরপর তারা আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ফলে এখন বিএনপি থেকে যারা বেরিয়ে যাচ্ছেন, তাতে বিএনপিতে তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না।’
Leave a Reply