অনলাইন ডেস্ক:
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে নিহত কৃষক ৫ সন্তানের পিতা মোকলেছ হাওলাদার (৫৫)’র দাফন সোমবার সন্ধায় পুলিশের উপস্থিতিতে পূর্ব চরহোগলাবুনিয়া গ্রামে সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার বেলা ১১টার দিকে প্রকাশ্যে রাস্তার ওপর ঘণ্টাব্যাপী নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। মোকলেছের স্ত্রী ও দুই মেয়ে ঘাতকদের হাত থেকে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে খুলনায় নিয়ে গেলে কিছুক্ষণ পরেই তিনি মারা যান। সোমবার এই হত্যাকান্ডের বর্নণা দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী স্ত্রী তাছলিমা, দুই মেয়ে মাজেদা ও রাবেয়া।
স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে আহত স্ত্রী তাছলিমা বেগম (৪৫) বলেন, ‘হত্যা মিশনের সদস্য ছিল ২০/২৫ জন। অবস্থান নেয় ৩টি স্পটে। প্রথম দলটি মোকলেছের খুব কাছে গিয়ে সালাম দিয়ে চোখে গুল ছিটিয়ে দেয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে চিৎকার দেয় মোকলেছ। তখনই তার কণ্ঠ রোধে ব্যবস্থা নেয় খুনিরা। মুখের মধ্যেও গুল ঢেলে দিয়ে গামছা দিয়ে বেঁধে রাখে। এর পরে দা দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে পায়ের রগ কাটে। ভারি লাঠি দিয়ে পেটায়। নিস্তেজ হয়ে পড়লে মোকলেছের দুই পায়ে দড়ি বেঁধে প্রায় দেড় কিলোমিটার পিচ ঢালাই রাস্তার ওপর থেকে টেনে নিয়ে যায়।
রক্তাক্ত আহত মেয়ে মাজেদা বেগম বলেন, সন্ত্রাসীরা আমার বাবাকে পিটিয়ে দুই পা ও একটি হাত গুড়াগুড়া করে ফেলে। আমরা এমন খবর পেয়ে ছুটে যাই ঘটনাস্থলে। মোকলেছকে তখন অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে রওয়ানা হয় তারা। আমরা তিন মা-মেয়ে জীবনের মায়া ত্যাগ করে বাবাকে ছাড়িয়ে রাখি। দুর্বৃত্তরা তখন আমার মা তাছলিমা (৪৫), ছোট বোন রাবেয়া আক্তার (১৮) ও আমাকে মারপিট করে জখম করে। এক সময় আমার মায়ের পরনের কাপড়ও খুলে নিয়ে যায়। ওই অবস্থায়ও আমরা বাবাকে ছাড়িনি। দীর্ঘ এই ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে খুনিরা বিভিন্ন দিকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পালিয়ে যায়। পথচারীসহ ওই এলাকার বাসিন্দারা মোকলছের ওপর নির্মম নির্যাতনের দৃশ্য দেখলেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি বলেও অভিযোগ করেন মেয়ে মাজেদা বেগম।
জমিজমা ও ঈদগাহ্ মাঠ নিয়ে পূর্ব শত্রুতার কারণে রবিবার বেলা প্রায় ১১টার দিকে পূর্ব চরহোগলাবুনিয়া গ্রামের বটতলা পুলের কাছে কৃষক মোকলেছ হাওলাদারকে পিটিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে থানার ওসি (তদন্ত) মো. আলমগীর কবির জানিয়েছেন। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
Leave a Reply