আকিবুল ইসলাম হারেছ,চান্দিনা।
দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনায় প্রাইভেটকারে রড নিক্ষেপ করে ফাঁদে ফেলে চালক ও যাত্রীদের মারধর, টাকা ও মালামাল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।বুধবার(১৭ জুন) রাতে মহাসড়কের চান্দিনার খাদঘর এলাকায় ওই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।উক্ত ঘটনায় ওই রাতেই চান্দিনা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ছিনতাইকারীদের হামলা ও মারধরে চালকসহ ছয়জন আহত হয়।পরে পার্শ্ববর্তী গৌরিপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন আহতরা। ছিনতাইকারীদের হামলায় আহত সবার বাড়ি কুমিল্লার হোমনা উপজেলার শ্রীমদ্ধি ও দারিগাঁ গ্রামে।
জানা যায়,ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন ৫০ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করে।মহাসড়ক ও সংলগ্ন কয়েকটি সড়কে অন্তত ২৫টি স্থানে ডাকাতরা সক্রিয় থাকে।তাই এসব এলাকা পণ্য পরিবহনের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোর মধ্যে সীতাকুণ্ড, কুমিরা, ছোট কমলদহ, মিরসরাই, জোরারগঞ্জ, ফাজিলপুর,ফেনীর মহিপাল, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম,পদুয়া,চান্দিনা, দাউদকান্দিসহ ২৫টি স্থান।কিন্তু মহাসড়কগুলোয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অপ্রতুলতার সুযোগ নিচ্ছে মহাসড়কের ডাকাতচক্র। স্থানীয় ডাকাতদলের সদস্যদের সঙ্গে যোগ দিয়ে আশপাশের জেলার ডাকাত দলের সদস্যরা নতুন নতুন গ্রুপ সৃষ্টি করে ডাকাতি করছে।এসব ডাকাতচক্রের মধ্যে স্থানীয় থাকে গুটিকয়েকজন। ডাকাতের বেশিরভাগ সদস্য আসে ফেনী ও মুন্সীগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে।
ডাকাতির শিকার এরফানুর রহমান লিটন বলেন, ডাকাত দলের সদস্যরা একটি রড গাড়িতে ছুড়ে মারে। এতে আওয়াজ হলে আমাদের চালক গাড়ি চাকা পাংচার হয়েছে মনে করে গাড়িটি থামায়। এর কয়েক মিনিটের মধ্যে ৬-৭ জনের ডাকাত দল বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে আমাদের উপর আক্রমণ করে।কয়েকজনকে মারধর করা হয়।ছিনতাইকারীরা আমার এবং আমার বন্ধুদের কাছে থাকা নগদ প্রায় ৬৫ হাজার টাকা, আই ফোনসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের পাঁচটি মোবাইল ফোন সেট, এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইনসহ সাথে থাকা যাবতীয় মালামাল ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
ইলিয়টগন্জ ফাঁড়ি পুলিশ জানায়,ডাকাতচক্রের সদস্যদের ধরতে তারা গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছেন।প্রায় ৩৬০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ দেড়শ’ কিলোমিটারের বেশি। এর মধ্যে হাইওয়ে পুলিশের ফাঁড়ি রয়েছে মাত্র ৩টি। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা কম হওয়ার কারণেও ডাকাতি প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। কেননা এত বিশাল মহাসড়ক নিরাপত্তা দেয়ার মতো লোকবল পুলিশ ফাঁড়িগুলোর নেই।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চান্দিনা থানার ওসি মো. আবুল ফয়সল জানান,বুধবার রাতে মহাসড়কে ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। জড়িত ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।এছাড়াও ‘দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পুলিশ কাজ করছে। যাতে ডাকাতির ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনা যায়।’
Leave a Reply