(অমিত মজুমদার, কুমিল্লা)
তিন দিনের ব্যবধানে আবারও ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় শিকার হলো কুমিল্লা নগরবাসী । রোববার (৪ জুলাই) ভোর থেকে দুই ঘন্টার বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে কুমিল্লার নগরীর বেশির ভাগ এলাকা। বার বার বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেলেও দায় নিতে নারাজ কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন । এছাড়া কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভেতরে হাটু সমান পানি । এতে চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত এক্সরে মেশিনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন যন্ত্রাংশ পানিতে ডুবে আছে ।হাসপাতালের কর্মকর্তাসহ চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে । এছাড়া পানিতে তলিয়ে আছে কুমিল্লা সদর হাসপাতালও । ভোর থেকে কুমিল্লায় ১০৯ মিলি মিটার বৃষ্টাপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
প্রবল বর্ষণে পানি ঢুকে গেছে দোকান ও বাসা বাড়িতে । কুমিল্লা নগরীর চর্থা, কালিয়াজুরি, বিষ্ণপুর, রেইসকোর্স, ঠাকুরপাড়া ,শাকতলাসহ বেশ কিছু এলাকা ভয়াবহ জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বেশি ভোগান্তি পড়েছে যাদের নিচ তলা বাসা । অনেকের ভবনের সামনে হাটু পানি । নগরবাসী জরুরী প্রয়োজনে বের হতেও পারছে না।
কুমিল্লা মেডিকেল আকলিম বেগম নামে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী জানান, সকলে হাসপাতালে এসে দেখি বাইরে কোমড় পানি আর হাসপাতালের ভেতরে হাটু পানি ।
কুমিল্লা নগরীর বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম জানান, ফৌজদারি মোড় থেকে বিষ্ণপুর পর্যন্ত কোমড় সমান পানি, ডিসি রোডের অবস্থা তো করুন। স্টেডিয়ামের সামনে, চকবাজার-সালাউদ্দিন রোডের বজ্রপুর চৌমুহনী তে অবস্থা খুবই খারাপ।
কুমিল্ল সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে রোববার সকাল ১০ টায় কয়েকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেনি । তবে তার কর্মকর্তারা দাবি করছেন সড়ক বিভাগ কুমিল্লা টু বেগমগঞ্জ ফোর লেইন করার কারণে টমছমব্রীজ কান্দিখাল সরু হয়ে গেছে । এই কান্দিখাল দিয়েই নগরীর পানি ডাকাতিয়া নদীতে যায় । এছাড়া ডাবল রেললাইন নির্মাণের ফলে অনেক গুলো ছোট ছোট কালভার্ট বন্ধ করে দিয়েছে। যারা কারণে কুমিল্লা নগরী থেকে পানি সরতে সময় লাগছে ।
তবে স্থানীয়রা বলছে, কান্দিখাল দখল করে বড় বড় ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সড়ক বিভাগের নিজস্ব জায়গায় রাস্তা করছে । সমন্বয়হীনতার অভাবে সাধারণ মানুষ জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ।
কুমিল্লা আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: ইসমাইল ভূঁইয়া জানান, কুমিল্লাতে আবারও অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে।চলতি মৌসুমে এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। রোববার সকাল ৬ টার আগে ১৩ মিলিমিটার ও ভোর ৬ টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়ছে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে। তাই চলতি সপ্তাহ এবং আগামী সপ্তাহে মাঝারি ও ভারি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
Leave a Reply