অনলাই ডেস্ক:
চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৭ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা যায়।
শনিবার (২৬ মে) দিবাগত রাত থেকে রোববার (২৭ মে) ভোর পর্যন্ত এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
তার মধ্যে- কুষ্টিয়ায়-১, চট্টগ্রাম-১, কক্সবাজার-১, মেহেরপুর-১, ঝিনাইদহ-১, পঞ্চগড়-১, ময়মনসিংহ-১, বাগেরহাট-১, চাঁদপুর ও নোয়াখালীতে একজন করে মোট ১০ জেলায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। তবে নিহতরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বিডি২৪লাইভের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরের আংশিক চিত্র তুলে ধরা হল-
কক্সবাজার
টেকনাফের নোয়াখালীপাড়া এলাকায় র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে টেকনাফ পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. একরামুল হক (৪৬) নিহত হয়েছেন।
র্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের ইনচার্জ মেজর রুহুল আমিন জানান, গভীর রাতে টেকনাফ থানাধীন নোয়াখালীপাড়া এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে র্যাব-৭ এর একটি আভিযানিক দলের গুলিবিনিময় হয়। ঘটনাস্থলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও ইয়াবার শীর্ষ গডফাদার টেকনাফ পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. একরামুল হকের গুলিবিদ্ধ দেহ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল থেকে ১০ হাজার ইয়াবা, একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শ্যুটার গান, ছয় রাউন্ড গুলি ও পাঁচটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের বড়দাহ জামতলা নামক স্থানে মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে গোলাগুলিতে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শৈলকুপা থানার ওসি আলমগীর হোসেন।
তিনি আরও বলেন, মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে টহল পুলিশ সেখানে পৌছিয়ে দেখে রাস্তার পাশে অজ্ঞাত এক মাদক ব্যবসায়ীর লাশ পড়ে আছে। সেখান থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শুটার গান, ২ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৩ রাউন্ড বন্দুকের গুলি, ১০ বোতল ফেন্সিডিল, ৪০০ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে। নিহত মাদক ব্যবসায়ীর নাম ঠিকানা এখনো পাওয়া যায়নি বলেও তিনি জানান।
চট্টগ্রাম
সীতাকুণ্ড উপজেলার গুলিয়াখালীর সন্দ্বীপ ফেরী ঘাটে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মো. রায়হান (৩৮) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি (তদন্ত) মোজাম্মেল হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সীতাকুণ্ড উপজেলার গুলিয়াখালী সন্দ্বীপ ফেরী ঘাটে তাকে ধরতে অভিযান চালানো হলে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধে ঘটনা ঘটে। এতে মাদক ব্যবসায়ী রায়হান নিহত হয়েছেন।
কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং ডি ব্লক মাঠে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হালিম মন্ডল (৩৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নাসির বলেন, মাদক দ্রব্য ক্রয় বিক্রয়ের উদ্দেশে একদল মাদক ব্যবসায়ী শহরের হাউজিং ডি ব্লক মাঠে অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদ পেয়ে মডেল থানা পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য কর গুলি ছোড়ে। জবাবে পুলিশ ও পাল্টা গুলি চালালে একজন গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়। তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
মেহেরপুর
মেহেরপুরের গাংনীতে হাফিজুর রহমান হাফি (৪৮) নামের এক মাদক ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গাংনী থানার ওসি হরেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, শনিবার রাত আড়াইটার দিকে গাড়াবাড়য়ী গ্রামের বাথানপাড়া মাঠে দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির খবর পায় পুলিশ। পুলিশের কয়েকটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠালে তাকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল ও ১১২ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে পুলিশ। হাফিজুরের নামে গাংনী থানায় মাদকের দুই ডজনের বেশি মামলা রয়েছে।
নোয়াখালী
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মাদক ব্যবসায়ী হাসান ওরফে ইয়াবা হাসান নিহত হয়েছেন।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি নাসিম আহম্মেদ জানান, এলাকার চিহ্নিত ও কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী হাসানকে গ্রেফতারে উপজেলার বগাদিয়া ইজতেমা মাঠে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে তার লোকজন গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালালে হাসান গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি (অস্ত্র), সাত রাউন্ড গুলি ও ১২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে। নিহত হাসানের বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে ২১টি মামলা এবং তিনটি অস্ত্র মামলা রয়েছে।
চাঁদপুর
জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার হাজীর ডোন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সেলিম প্রধান (৩৭) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন বলে দাবি পুলিশের।
মতলব দক্ষিন থানার ওসি কুতুবউদ্দিন জানান, থানা ও ডিবি পুলিশের যৌথ দল মতলব সড়কের হাজীর ডোন এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় সাত মাদক মামলার আসামি সেলিমকে আটক করা হয়। সেলিমকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় সহযোগীরা পুলিশের ওপর গুলি ও হামলা চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে সেলিম গুলিবিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় তাকে মতলব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সেলিমের বিরুদ্ধে থানায় ৭টি মাদক মামলা রয়েছে।
Leave a Reply