অনলাইন ডেস্ক:
ব্যাটিংয়ে রানটা যথেষ্ট হয়নি বাংলাদেশের। শেষ দিকে ব্যাটসম্যানরা দ্রুত গুটিয়ে না গেলে আরো অন্তত ৩০ রান বেশি হত স্কোরবোর্ডে। ২৩৯ রানের পুঁজি নিয়েও তবু শুরুতেই পাকিস্তানকে চেপে ধরে টাইগাররা। সেই চাপের মাঝে দেয়াল হয়ে একাই দাঁড়িয়েছিলেন ইমাম উল হক। ব্যক্তিগত ৮৩ রানে তার বিদায়ের পর, বাংলাদেশের জয়টা ছিল সময়ের ব্যাপার। শেষ পর্যন্ত পরিকল্পিত বোলিংয়ে আর কোনো ভুল করেনি বাংলাদেশ। বরং পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে ছিনিয়ে নিয়েছে ৩৭ রানের এক মহামূল্যবান জয়। ফলে পরশুর ফাইনালে শিরোপার জন্য বাংলাদেশই লড়বে ভারতের বিপক্ষে।
২০২ রানে থেমে যাওয়া পাকিস্তানের ৪ উইকেট নিয়ে রূপকথার জয়টা সহজ করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া দুই উইকেট তুলে নিয়েছেন মিরাজ। পাকিস্তানের পক্ষে ৮৩ রান করেছেন ইমাম উল হক। এছাড়া ৩১ রান এসেছে আসিফ আলির ব্যাট থেকে। অন্যদের মধ্যে শোয়েব মালিক ছাড়া আর কেউই তেমন সুবিধা করতে পারেননি।
এর আগে বাংলাদেশের দেওয়া ২৪০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে পাকিস্তান। প্রথম ওভারেই পাক শিবিরে আঘাত হানেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ওপেনার ফখরজামানকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছেন তিনি। এর পরের ওভারের দ্বিতীয় বলেই বাবর আজমকে এলবিডব্লিউ এর ফাঁদে ফেলেন মোস্তাফিজ। ফিজের দ্বিতীয় ওভারে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন সরফারাজ। এরপর ইমামের সাথে শোয়েব মালিক ও আসিফ আলির জুটি দুটোই যা বাধা তৈরী করেছে টাইগারদের জয়ের পথে। শোয়েবকে দুর্দান্ত এক ক্যাচে তালুবন্দী করেন মাশরাফি। দলীয় ১৬৫ রানে আসিফ ও ১৬৭ রানে ইমামের বিদায়ের পর জয়টা ছিল সময়ের বিষয়।
এদিকে হাই ভোল্টেজ ম্যাচে আগে ব্যাট করে ২৩৯ রানের মাঝারি মানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯৯ রান করেন মুশফিকুর রহিম। এছাড়া ৬০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন মোহাম্মাদ মিথুন। পাকিস্তানের পক্ষে রানের ১৯ রানে ৪ উইকেট দখল করেন জুনায়েদ খান।
টস জিতে ব্যাটিং নেয়া বাংলাদেশ যথারীতি এদিনও শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। মাত্র ১২ রানের মধ্যেই প্যাভিলিয়নে পেরেন সৌম্য, মুমিনুল ও লিটন। দীর্ঘদিন পর দলে সুযোগ পেয়ে আরো একবার ব্যর্থ হন এই বাঁহাতি ওপেনরা। জুনাইদ খানের বলে দলীয় ৫ রানের মাথায় শূণ্য রানে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। এরপরই একটি চার মেরে বিদায় নিয়েছেন মুমিনুল। শাহীন আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। এরপর মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মাদ মিথুনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ১৪৪ রানের অনবদ্য জুটিতে বড় স্কোরের ভিত্তি গড়ে দেন এই দুই ব্যাটসম্যান।
মিথুন ৬০ রান করে আউট হলে দ্রুতই বিদায় নেন ৯ রান করা ইমরুল। পরে মাহমুদুল্লাহর সাথে জুটি গড়েন মুশফিক। কিন্তু সেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে থেকে বিদায় নেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। ১১৬ বলে তার ৯৯ রানের ইনিংসটি সাজানো ছিল নয়টি চারের মারে।
শেষদিকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। স্লগ ওভারে সম্ভাবনা জাগিয়েও বেশি রান তুলতে পারেনি টাইগাররা। অল্প রানে বিদায় নেন মিরাজ। এরপর মাহমুদুল্লাহ ২৫ রান করে বিদায় নিলে রানে ২৩৯ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ২৩৯/১০ (৪৮.৫ ওভারে)
মুশফিক ৯৯, মিথুন ৬০
জুনায়েদ ৪/১৯
পাকিস্তান: ২০২/৯ (৫০ ওভারে)
ইমাম ৮৩, আসিফ ৩১
মোস্তাফিজ ৪/৪৩, ২/২৮
দুই দলের একাদশ:
বাংলাদেশ: মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুন, ইমরুল কায়েস, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন।
পাকিস্তান: সরফরাজ আহমেদ, শোয়েব মালিক, আসিফ আলী, ইমাম উল হক, ফখর জামান, বাবর আজম,শাদাব খান, মোহাম্মদ নাওয়াজ, হাসান আলী, জুনাইদ খান, শাহিন শাহ আফ্রিদি
Leave a Reply