অনলাইন ডেস্ক:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য এরইমধ্যে প্রার্থী জেলা রিটার্নিং ও উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
বুধবার (২৮ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিবিসি বাংলা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলোর জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের নামে কোন মনোনয়নপত্র জমা পড়েনি। তার মানে, তিনি নির্বাচন করছেন না।
কিন্তু যার নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হলো, সরকারের সাথে সংলাপ হলো, এবং বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে এলো, শেষ পর্যন্ত সেই কামাল হোসেনই নির্বাচন করছেন না। কেন এই সিদ্ধান্ত? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর পেছনে বয়েসই মূল কারণ।
বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. কামাল হোসেন বলছেন, ‘মূল কারণ হলো, আমার বয়েস এখন আশির ওপরে হয়ে গেছে। পাঁচ বছর আগেও যদি এ নির্বাচন হতো তাহলেও হয়তো বিবেচনা করতাম। কিন্তু তখন যে ইলেকশন হবার কথা সেটা তো হয় নি।’
কিন্তু ড. কামাল হোসেন রাজনীতি করছেন, সভাসমিতি করছেন। তাহলে নির্বাচন নয় কেন?বিবিসি বাংলার এ প্রশ্নের জবাবে মি. হোসেন বলেন, রাজনৈতিক ব্যাপারে যতটুকু যা করার তা তিনি করবেন, কিন্তু তিনি নির্বাচন করবেন না শুধু বয়সের কারণেই।
কিন্তু বাংলাদেশে তো এমন অনেকে আছেন- যারা ড. কামাল হোসেনের চাইতেও বেশি বয়সে মন্ত্রী হয়েছেন, বা রাজনীতি করছেন। বিবিসি বাংলার মিজানুর রহমান খানের এ কথার জবাবে তিনি বলেন, আমার দৃষ্টিতে আমি সেরকম কাউকে দেখিনা যে সেই ধরণের রাজনীতি করছেন, হয়তো দু-একজন থাকতে পারেন।জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সবচেয়ে বড় দল বিএনপির দিক থেকে কি চাওয়া হয়নি যে ড. কামাল রাজনীতি করুন?
ওই প্রতিবেদনে ড. কামাল বলেন, ‘না, সেভাবে ছিল না। নির্বাচন ঘোষণার অনেক আগেই আমি বলে দিয়েছিলাম যে আমি রাজনীতিতে আছি থাকবো, কিন্তু আমি নির্বাচনে প্রার্থী হবো না।’কিন্তু রাজনীতির মূল লক্ষ্যই তো ক্ষমতায় যাওয়া এবং তার উপায় হচ্ছে নির্বাচন- এ কথার জবাবে তিনি বলেন, তিনি নিজের ক্ষমতায় যাবার জন্য রাজনীতি করেন না।
‘আমি চেয়েছি যে দেশে গণতন্ত্র থাকুক, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গণতন্ত্র আরো সুপ্রতিষ্ঠিত হোক। আমি রাজনীতিতে ঢুকেছি ৫৫ বছর আগে, মন্ত্রী ছিলাম, অনেক নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। কোনটাতে সফল, কোনোটাতে বিফল হয়েছি। কিন্তু আমি এখন মনে করি আমার অভিজ্ঞতা থেকে- দেশের মঙ্গলের জন্য যারা রাজনীতি করবে তারা আমার সহায়তা পাবেন, এবং আমি তা করে যাচ্ছি।’তিনি বলেন, তার দল গণফোরাম থেকেও এটা চাওয়া হয়েছিল যে তিনি নির্বাচন করুন- কিন্তু তিনি তাদেরকে ব্যাপারটা বোঝাতে পেরেছেন।
তার কথায়, ‘এটা আমাদের প্রতিষ্ঠিত করা দরকার যে রাজনীতি এমন একটা কাজ যাতে বয়েস-স্বাস্থ্য সবকিছু ঠিক থাকলে মানুষ পুরোপুরি ভুমিকা রাখতে পারে। নির্বাচন তো পরিশ্রমের দিক থেকে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ কঠিন একটা কাজ। যেহেতু আমি নির্বাচন করছি না তাই অন্য ব্যাপারে সবাইকে সহযোগিতা করতে পারছি।’
তিনি বলেন, তার নির্বাচন করার সময় চলে গেছে এ কথা তিনি বহু আগেই দলকে বলেছেন, প্রকাশ্যেও বলেছেন।এর পেছনে কি তার অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে?জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, অন্য কোন উদ্দেশ্যের প্রশ্নই ওঠে না।তিনি বলেন, ‘আমার কথায়- কাজে কেউ সেরকম কিছু পেয়েছে এটা কেউ বলতে পারবে না।’
Leave a Reply